২০ রোজার মধ্যে পোশাকশ্রমিকদের বকেয়া বেতন ও পূর্ণ বোনাস দেওয়ার দাবি জানিয়েছে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র। পাশাপাশি তারা ঈদের ছুটির আগে মার্চ মাসের বেতন পরিশোধের দাবিও জানিয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের নেতারা এ দাবিগুলো জানান।

এই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি মন্টু ঘোষ। তিনি বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শতাধিক পোশাকশ্রমিক জীবন উৎসর্গ করেছেন। বাজারদরের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ হারে শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি না করা, সঠিক সময়ে শ্রমিকের বেতন–ঈদ বোনাস প্রদান না করা হবে গণ-অভ্যুত্থানের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।

সমাবেশে এই সংগঠনের সহসভাপতি জলি তালুকদার অবিলম্বে কারখানাভিত্তিক রেশনব্যবস্থা চালুর দাবি জানান। জলি তালুকদার বলেন, শ্রমিকের জীবনের সংকটকে আড়াল করে রাখার কোনো সংক্ষিপ্ত পথ নেই। শ্রমিকের দাবির মধ্যে ষড়যন্ত্রের গন্ধ খোঁজা পুরোনো স্বৈরাচারী অপকৌশল। সরকারকে দায়িত্ববোধ থেকে শ্রমিকের সমস্যার সুরাহা করতে হবে।

গাজীপুর ছাড়াও আশুলিয়া, নারায়ণগঞ্জ, উত্তরার বিভিন্ন কারখানায় শ্রমিকদের বেতন বকেয়া রয়েছে বলে উল্লেখ করেন গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক সাদেকুর রহমান। সমাবেশে তিনি বলেন, কোনো কোনো কারখানায় তিন-চার মাসের বেতনও বকেয়া রয়েছে। সেসব মালিকপক্ষ মিথ্যা কারণ দেখিয়ে শ্রমিক ছাঁটাই করছে। কোনোরকম পাওনা পরিশোধ করছে না। এ ক্ষেত্রে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সক্রিয় কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করছে না।

গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ শাজাহান সমাবেশ সঞ্চালনা করেন। এ সময় আরও বক্তব্য দেন গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সহসভাপতি জিয়াউল কবির, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য দুলাল সাহা, আবদুস সালাম, আজিজুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সদস্য শাহিন আলম প্রমুখ।

সমাবেশ শেষে তাঁরা একটি মিছিল বের করেন, যা তোপখানা সড়ক হয়ে পল্টন মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

জাতীয় সনদ তৈরির মাধ্যমে জাতির আকাঙ্ক্ষিত রাষ্ট্র সংস্কারের দিকে অগ্রসর হতে পারব: আলী রীয়াজ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘আলাপ আলোচনার মাধ্যমে মতপার্থক্য দূর করে যে সমস্ত জায়গায় সবাই একমত আছে তার ভিত্তিতে জাতীয় সনদ তৈরি করা যাবে। জাতীয় সনদ তৈরির মাধ্যমে জাতির যে রাষ্ট্র সংস্কারের আকাঙ্ক্ষা সেই দিকে অগ্রসর হতে পারব।’

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের (এনডিএম) সঙ্গে সংলাপে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রথম ধাপের সংলাপের মাধ্যমে আলোচনার সূচনা হয়েছে বলে মন্তব্য করে আলী রীয়াজ বলেন, ‘আমরা পর্যায়ক্রমিকভাবে হয়তো আলোচনা করব। আমরা বিবেচনা করব কীভাবে একজায়গয় আসতে পারি।’

স্প্রেডশিটের কিছু বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে ব্যাখ্যা দেওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কিছু কিছু জায়গায় ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রয়োজন হবে। তখন স্পষ্ট করতে পারব কমিশনগুলোর অবস্থান কী, আপনাদের (রাজনৈতিক দল) অবস্থান বুঝতে চেষ্টা করব। তারই মধ্য দিয়ে প্রক্রিয়াটায় অগ্রসর হবো।’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি বলেন, ‘আমাদের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে যত দ্রুততার সঙ্গে একটি জাতীয় সনদের জায়গায় পৌঁছানো। এ কমিশনের মেয়াদ যেহেতু জুলাই মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত। তাই আমরা আশা করি, প্রাথমিক আলোচনা মে মাসের মাঝামাঝি পর্যায়ে শেষ করতে পারব। পরে আমরা পরবর্তী ধাপে অগ্রসর হবো।’

তিনি বলেন, ‘আমরা সকলেই একপক্ষ। চেষ্টা করছি রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য। আমাদের লক্ষ্য এক। কিন্তু পথের ক্ষেত্রে সামান্য ভিন্নতা আছে। সেটা দূর করে, যে ঐক্যের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী শাসনকে দুর করা গেছে, সে ঐক্যের জায়গায় যেন পৌঁছাতে পারি এবং অগ্রসর হতে পারি। এখনও ঐক্য আছে, মতভিন্নতা আছে। সেই ঐক্যকে সুদৃঢ় করা এবং সংস্কার কার্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া দরকার।’

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় সংলাপে আরও অংশগ্রহণ করেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন।

এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজের নেতৃত্বে দলটির আট সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবের বেশিরভাগ জায়গয় এনডিএম একমত জানিয়ে ববি হাজ্জাজ বলেন, ‘আমরা সংস্কারগুলো বড়ভাবে দেখতে চাই। সংস্কারগুলোর মাধ্যমে জনবান্ধন সরকার ব্যবস্থা তৈরি করতে সক্ষম হবে।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের মতো ফ্যাসিজম যাতে বাংলাদেশে দাঁড়াতে না পারে, সেই আওয়ামী লীগকে বাতিল করা এবং তাদের ফ্যাসিজমকে বাতিল করা বড় সংস্কার।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জাতীয় সনদ তৈরির মাধ্যমে জাতির আকাঙ্ক্ষিত রাষ্ট্র সংস্কারের দিকে অগ্রসর হতে পারব: আলী রীয়াজ
  • ছাত্রলীগ নেতাদের নিয়ে ওসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা