মাগুরায় নির্যাতনে মারা যাওয়া আট বছরের শিশুটিকে ধর্ষণে অভিযুক্ত হিটু শেখের বাড়িতে ভাঙচুর করেছেন বিক্ষুব্ধ জনতা। আগের দিন বৃহস্পতিবার রাতে শিশুটির প্রথম জানাজার পর বিক্ষুব্ধরা হিটু শেখের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা খবর পাওয়ার পরও সেটি নেভাতে পারেনি। তারা অগ্নিনির্বাপণ কর্মীরা গাড়ি নিয়ে রওনা দিলেও বিক্ষুব্ধ জনতা আটকে দিলে তারা ফিরে যেতে বাধ্য হয়।

শুক্রবার সকালে মাগুরা শহরের নিজনান্দুয়ালী এলাকায় হিটু শেখের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় ভাঙচুর ও পোড়া বাড়িতে কেউ দেয়াল ভাঙছেন, কেউ কেউ ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। বেলা ১১টার দিকে হিটু শেখের বাড়ির আঙিনায় থাকা আম গাছসহ বিভিন্ন ফলদ প্রায় ১২টি গাছ কেটে ফেলেন স্থানীয়রা। নিয়ে যান লুট করে।

হিটু শেখের প্রতিবেশী রাবেয়া খাতুন বলেন, ইফতারের পরপরই বিক্ষুব্ধ জনতার একটি অংশ এসে বাড়িটিতে আগুন দেওয়ার পাশাপাশি ভাঙচুর চালাতে থাকে। তারা টিনের চালা খুলে নিয়ে যান। ঘরের দেয়াল হাতুড়ি দিয়ে ভেঙে গুড়িয়ে দেন। এসময় তারা ধর্ষণবিরোধী স্লোগান দেন ও  ধর্ষকদের ফাঁসি দাবি করেন।

নিজনান্দুয়ালীর বাসিন্দা আলেক শেখ বলেন, আমাদের এলাকায় অতীতে এমন ঘটনা ঘটেনি। এটি আমাদের জন্য সম্মানজনক। এখানে ধর্ষকের কোনো ঠাঁই হবে না। ঘটনার পরপরই আমরা এই বাড়িটি ধর্ষকের বাড়ি হিসেবে চিহ্নিত করেছি।

মাগুরা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

আইয়ুব আলী বলেন, শিশু ধর্ষণে অভিযুক্ত হিটু শেখের বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের খবর পাওয়ার পর পুলিশ কয়েক দফা সেখানে যাওয়ার চেষ্টা করলেও বিক্ষুব্ধদের প্রতিরোধের মুখে সেটি সম্ভব হয়নি। তবে গ্রামের নিরীহ সাধারণ মানুষের জানমালের যাতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি না হয় সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

মাগুরার শিশু ধর্ষণ ও মৃত্যুর মামলার তদন্ত পুলিশের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার: খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি

মাগুরায় শিশু ধর্ষণ ও পরে মৃত্যুর ঘটনায় হওয়া মামলার তদন্ত সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার বলে জানিয়েছেন পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি (উপমহাপরিদর্শক) মো. রেজাউল হক। বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে শ্রীপুর উপজেলায় শিশুটির দাফন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

মো. রেজাউল হক বলেন, ‘আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, আমাদের ওপর আস্থা রাখবেন। ঘটনা জানার পরপরই মূল অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের যে কাজ তদন্ত করা, সেই তদন্তের কাজটি খুব দ্রততার সঙ্গে শেষ করব।’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্রসচিব, আইজিপি সব সময় এ ঘটনার খোঁজখবর নিচ্ছেন উল্লেখ করে মো. রেজাউল হক আরও বলেন, ‘মামলার তদন্তের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে ডিএনএ ম্যাচিং করা। সেটা খুব দ্রুততার সঙ্গে করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এই কাজটি বাংলাদেশ পুলিশের হায়েস্ট প্রায়োরিটি (সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার)। রেঞ্জের ডিআইজি হিসেবে আমিও মামলার তদন্তের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িয়ে আছি।’

আরও পড়ুনমাগুরার সেই শিশুটিকে বাঁচানো গেল না১০ ঘণ্টা আগে

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আপনারা জেনেছেন সিআইডিতে ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তদের ডিএনএ নমুনা দেওয়া হয়েছে। আমি আজকেও সেখানে কথা বলেছি। সবাই গুরুত্ব দিয়ে এটা নিয়ে কাজ করছে। এই রিপোর্ট (প্রতিবেদন) প্রাপ্তির পরপরই আমরা মামলার অভিযোগপত্র দিয়ে দিতে পারব ইনশা আল্লাহ।’
এ সময় তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. অহিদুল ইসলাম, মাগুরা সেনা ক্যাম্পের কমান্ডার মেজর সাফিন আল সাইফ, পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলী আহমেদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্যসচিব রবিউল ইসলাম প্রমুখ।

এর আগে রাত ৮টা ২০ মিনিটের দিকে শ্রীপুর উপজেলায় শিশুটির গ্রামে দ্বিতীয় জানাজা শেষে রাত ৯টার দিকে সমাহিত করা হয়। সন্ধ্যা ৬টার দিকে সামরিক বাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে শিশুটির মাগুরায় আনা হয়। এ সময় তাঁর সঙ্গে হেলিকপ্টারে ছিলেন শিশুটির মা এবং মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। প্রায় একই সময়ে আলাদা আরেকটি হেলিকপ্টারে মাগুরায় আসেন জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক। তাঁরা সবাই নোমানী ময়দানে শিশুটির প্রথম জানাজায় অংশ নেন।

আরও পড়ুনমাগুরার শিশুটিকে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলার বিচার শুরু এক সপ্তাহের মধ্যে: আইন উপদেষ্টা৬ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাগুরায় হিটু শেখের বাড়িঘর ভেঙে গুঁড়িয়ে দিলো জনতা
  • মাগুরার শিশু ধর্ষণ ও মৃত্যুর মামলার তদন্ত পুলিশের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার: খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি