নোয়াখালীতে কলেজছাত্রীকে যৌন হয়রানি ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় গ্রেপ্তার ২
Published: 14th, March 2025 GMT
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রীকে (২৩) যৌন হয়রানি ও ছিনতাইয়ের শিকার হওয়ার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুই তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। আজ শুক্রবার দুপুরে উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার নাজিরপুর এলাকার নূর হোসেনের বাড়ি থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার তরুণেরা হলেন নাজিরপুর এলাকার মো. রাজুর ছেলে মো.
র্যাব জানায়, কলেজে ইফতার মাহফিল শেষে গত বুধবার সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে ওই কলেজছাত্রী জেলা শহর মাইজদীর বাসায় যাওয়ার উদ্দেশে কলেজের সামনে থেকে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় উঠছেন। ওই ছাত্রী অটোরিকশায় ওঠার পরই পেছনে থাকা ছিনতাইকারীরা তাঁর মুখ চেপে ধরে তাঁকে যৌন হয়রানি করে এবং তাঁর চোখে রাসায়নিকজাতীয় কিছু লাগিয়ে সঙ্গে থাকা মুঠোফোন, নগদ টাকা ও ব্যাংকের এটিএম কার্ড ছিনিয়ে নেয়। একই সময় তারা ছাত্রীর কাছ থেকে মুঠোফোনের পাসওয়ার্ড ও বিকাশ অ্যাকাউন্টের পিন কোডও জোরপূর্বক হাতিয়ে নেয়।
র্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ছিনতাইকারী চক্র ওই ছাত্রীকে প্রায় ৩০ মিনিট চৌমুহনী-মাইজদী সড়কের ইউটার্নের মধ্যে ঘুরিয়ে নির্যাতন করে। একপর্যায়ে ওই ছাত্রীকে ছিনতাইকারীরা একই সড়কের একলাশপুর বাজারের উত্তরে অটোরিকশা থেকে নামিয়ে নির্জন স্থানে নেওয়ার চেষ্টাকালে ছাত্রীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন আসতে দেখে ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যায়। পরে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করেন।
ছাত্রী যৌন হয়রানি ও ছিনতাইয়ের শিকার হওয়ার প্রতিবাদে ওই দিন রাতে প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠেন কলেজের শিক্ষার্থীরা। তাঁরা রাত ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে রাখেন। পরে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে অপরাধীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দেওয়া হলে শিক্ষার্থীরা শান্ত হন।
র্যাব-১১, সিপিসি-৩ নোয়াখালী ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি কমান্ডার মিঠুন কুমার কুণ্ডু সন্দেহভাজন দুই আসামি গ্রেপ্তার হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ঘটনার পরপরই র্যাবের পক্ষ থেকে অপরাধীদের শনাক্ত করতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। পরে তদন্তে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে রবিন ও আরাফাত নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার আসামিদের বেগমগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত অপর আসামিদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চোখে রাসায়নিক দ্রব্য লাগিয়ে কলেজছাত্রীকে শ্লীলতাহানি, গ্রেপ্তার ২
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ১৫তম ব্যাচের ছাত্রীকে (২০) সিএনজিচালিত অটোরিকশায় চোখে রাসায়নিক দ্রব্য লাগিয়ে হেনস্তা ও শ্লীলতাহানি করে ছিনতাইয়ের ঘটনায় ২ তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১।
এ সময় আসামিদের কাছ থেকে একটি মোটরসাইকেরল জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন উপজেলার নাজিরপুর এলাকার মো. রাজুর ছেলে মো. রবিন (২০) ও আলাইয়াপুর ইউনিয়নের শহীদুল ইসলামের ছেলে আরাফাত হোসেন অন্তর (২২)।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) বিকেলের দিকে র্যাব-১১, সিপিসি-৩ নোয়াখালী ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি কমান্ডার মিঠুন কুমার কুণ্ডু স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
আরো পড়ুন:
হবিগঞ্জে আছিয়ার গায়েবানা জানাজা ও কফিন মিছিল
নারায়ণগঞ্জে পৃথক স্থানে দুই শিশুকে ধর্ষণচেষ্টা, আটক ২
এর আগে, একই দিন দুপুরের দিকে উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার নাজিরপুর এলাকার নূর হোসেনের বাড়ি থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ১২ মার্চ নোয়াখালী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ইফতার মাহফিল শেষে বাসায় যাওয়ার উদ্দেশে একটি যাত্রীবাহী সিএনজিতে ওঠে কলেজের ১৫তম ব্যাচের ওই ছাত্রী। কিছু পথ যাওয়ার পর সিএনজির ভেতরে থাকা ৫ জন পুরুষের মধ্যে একজন তার মুখ চেপে ধরে বাকি ৪ জন ভিকটিমের কোলে বসে পড়ে। কিছুক্ষণ পর আরো ১ জন সিএনজিতে ওঠলে সবাই মিলে ছাত্রীকে শারীরিকভাবে হেনস্তা ও শ্লীলতাহানি করে তার চোখে রাসায়নিক দ্রব্য লাগিয়ে দেয়। এ সময় তারা ছাত্রীর ব্যাগ থেকে টাকা, একটি এটিএম কার্ড ও একটি মোবাইল নিয়ে যায়। মোবাইলের পাসওয়ার্ড ও বিকাশের পাসওয়ার্ড দিতে বাধ্য করে ছাত্রীকে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, অভিযুক্ত ভিকটিমকে সিএনজি করে কলেজ গেট থেকে একলাশপুর বাজার পর্যন্ত প্রায় আধা ঘণ্টা ইউটার্ন নিয়ে একাধিবার ঘুরাতে থাকে এবং অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য নির্জন স্থান খুঁজতে থাকে। একপর্যায়ে তারা ভিকটিমকে একলাশপুর বাজারের উত্তর পার্শ্বে সিএনজি থেকে নামিয়ে নির্জন স্থানে নেওয়ার চেষ্টা করলে ভিকটিম শোর চিৎকার দেয়। পরে লোকজন এগিয়ে আসতে দেখে ভিকটিমকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যায়।
র্যাব-১১, সিপিসি-৩ নোয়াখালী ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি কমান্ডার মিঠুন কুমার কুণ্ডু আরো জানান, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলার সূত্র ধরে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বেগমগঞ্জ মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।
নোয়াখালী/সুজন/এসবি