দক্ষিণ আফ্রিকায় ডাকাতের গুলিতে কামরুল ইসলাম (৩৩) নামের এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত ৯টার দিকে দক্ষিণ আফ্রিকার ফ্রি স্টেট প্রদেশে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত কামরুল ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার ইয়াকুবপুর ইউনিয়নের করমুল্যাহপুর গ্রামের অজি উল্লাহ হাফেজ বাড়ির আবদুল মান্নান মিয়ার ছেলে। পাঁচ ভাই–বোনের মধ্যে কামরুল দ্বিতীয়।

কামরুলের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ১২ বছর আগে জীবিকার তাগিদে দক্ষিণ আফ্রিকায় যান কামরুল ইসলাম। সেখানে একটি প্রতিষ্ঠানে কিছুদিন চাকরি করেন। পরে নিজে একটি দোকানে ব্যবসা শুরু করেন।

কামরুলের দোকানের এক কর্মচারী এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকা এক স্বজনের বরাত দিয়ে পরিবারের সদস্যরা বলেন, গতকাল বাংলাদেশ সময় রাত নয়টার দিকে কামরুলের দোকানে লুটপাটের উদ্দেশ্যে হামলা চালান দুই ডাকাত। অস্ত্রের মুখে কামরুলকে জিম্মি করে দোকানের ক্যাশবাক্সে থাকা নগদ অর্থ এবং মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নেন তাঁরা। একপর্যায়ে দোকানের বাইরে রাখা কামরুলের গাড়িতে আরও নগদ অর্থ আছে ভেবে তাঁকে গাড়ির কাছে নিয়ে যান দুই ডাকাত। সেখানে বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে ডাকাতদের একজন কামরুলের বুকে গুলি করেন। এতে ঘটনাস্থলেই কামরুলের মৃত্যু হয়।

নিহত ব্যক্তির ছোট ভাই কামরুজ্জামান বলেন, ভাইদের মধ্যে বড় হওয়ায় কামরুলই পরিবারের হাল ধরেছিলেন। কয়েক মাস পর তাঁর দেশে ফেরার কথা ছিল। সম্প্রতি বাড়িতে নতুন ভবনও করেছেন। বাড়িতে ফিরলে তাঁর বিয়ে করার কথা। তাই তাঁর জন্য পাত্রীও খোঁজা হচ্ছিল। কামরুলের মরদেহ দেশে আনতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন কামরুজ্জামান।

দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) স ম আজহারুল ইসলাম বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে দাগনভূঞার এক যুবক নিহত ব্যক্তির বিষয়টি তিনি শুনেছেন। মরদেহ দেশে আনার বিষয়ে নিহত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের সহযোগিতার প্রয়োজন হলে উপজেলা প্রশাসন প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

‘আপত্তিকর আচরণের’ কারণে হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের উপাধ্যক্ষকে খুন করা হয়: পুলিশ

রাজধানীর উত্তরখানে নিজ বাড়িতে খুন হওয়া হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে ‘আপত্তিকর আচরণ’–এর অভিযোগ তুলেছেন পুলিশের হাতে আটক ওই দম্পতি।

আটক দম্পতিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের উদ্ধৃতি দিয়ে আজ বুধবার পুলিশ জানায়, টাকাপয়সাসহ ব্যাগ হারিয়ে কমলাপুর রেলস্টেশনে অসহায় অবস্থায় পড়েছিলেন তাঁরা। দুজনেরই বয়স ২৫–এর কম। তাঁদের অসহায়ত্ব দেখে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়া। তাঁর বাসায় চাকরি দেওয়ার কথা বলে দুজনকে উত্তরখানের ভাড়া বাসায় নিয়ে যান। চাকরির কথা বলে নিলেও সাইফুর রহমানের উদ্দেশ্য ছিল ওই নারীর সঙ্গে ‘আপত্তিকর আচরণ’ করা। সুযোগ পেলেই স্বামীকে বাইরে পাঠিয়ে তরুণীর শরীরের স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দিতেন সাইফুর রহমান।

পুলিশ জানায়, সর্বশেষ গত রোববার রাতে সাইফুর রহমান তরুণীকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে তাঁর স্বামী নাজিম প্রতিবাদ করেন। এতে দুজনের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে বঁটি দিয়ে সাইফুর রহমানকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যান দুজন।

আজ দুপুরে মিন্টো রোডের ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির উত্তরা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. মহিদুল ইসলাম।

পুলিশ জানায়, আটক দুই ব্যক্তি হলেন মো. নাজিম হোসেন (২১) ও তাঁর স্ত্রী রুপা বেগম ওরফে জান্নাতি (২৩)। গতকাল মঙ্গলবার ফরিদপুর রেলস্টেশন এলাকা থেকে তাঁদের আটক করা হয়। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে দুটি মুঠোফোন, একটি চাবির রিং ও একটি ব্যাংকের ভিসা কার্ড উদ্ধার করা হয়। এর আগে নিহত সাইফুর রহমানের ফ্ল্যাট থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি ধারালো বঁটি, একটি ধারালো চাকু, রক্তমাখা জামাকাপড় ও বিছানার চাদর উদ্ধার করা হয়।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ডিসি মহিদুল ইসলাম বলেন, ১০ মার্চ দিবাগত রাত দুইটা থেকে ভোররাত চারটার মধ্যে হাবীবুল্লাহ বাহার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়া উত্তরখান থানার পুরানপাড়া বাতান এলাকার একটি ছয়তলা ভবনের চতুর্থ তলার ফ্ল্যাটে খুন হন। এ খুনের ঘটনায় তাঁর ছোট ভাই মোহাম্মদ লুৎফর রহমান ভূঁইয়া বাদী হয়ে উত্তরখান থানায় গতকাল মামলা করেন।

পুলিশ কর্মকর্তা মহিদুল জানান, পবিত্র রমজান মাস শুরুর আগের দিন কমলাপুর রেলস্টেশনে সাইফুর রহমানের সঙ্গে মো. নাজিম হোসেন ও রুপা বেগম ওরফে জান্নাতির পরিচয় হয়। পরিচয়ের সুবাদে দুজনকে তাঁর ফ্ল্যাটে নিয়ে আসেন সাইফুর রহমান। একপর্যায়ে তিনি রুপাকে তাঁর ফ্ল্যাটে আটকে শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতন শুরু করেন। হত্যাকাণ্ডের রাতে একই শয্যায় ছিলেন সাইফুর রহমান, রুপা ও তাঁর স্বামী নাজিম।

ডিসি মহিদুল আরও বলেন, সেই রাতে নাজিম ঘুমিয়ে পড়লে রুপাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন সাইফুর রহমান। একপর্যায়ে নাজিম ঘুম থেকে জেগে গেলে রান্নাঘর থেকে বঁটি এনে তাঁকে উপর্যুপরি আঘাত করেন। আঘাতের ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তিনি মারা যান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কোনাবাড়ীতে বেতনের দাবিতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
  • মোবাইল চুরির অভিযোগে যুবককে গাছে বেঁধে নির্যাতন
  • ‘আপত্তিকর আচরণের’ কারণে হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের উপাধ্যক্ষকে খুন করা হয়: পুলিশ
  • ধর্ষণচেষ্টার কারণে খুন হন হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের উপাধ্যক্ষ: পুলিশ