একসময় ইন্টেল ছিল বিশ্বের প্রভাবশালী চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। চিপের বাজারে ইন্টেলের এক্স ৮৬ প্রসেসর ছিল চাহিদার শীর্ষে। পারসোনাল কম্পিউটার থেকে শুরু করে বিভিন্ন যন্ত্রে এই চিপ ব্যবহার করা হতো। তবে গত কয়েক বছর ধরেই ব্যবসায়িকভাবে বেশ দুর্বল হয়ে পড়েছে ইন্টেল। এমনকি এআই চিপ উৎপাদনে এনভিডিয়া যেভাবে নিজের জায়গা করে নিয়েছে, সেভাবে নিজের অবস্থান তৈরি করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। আর তাই আর্থিক ক্ষতি কমাতে কর্মী ছাঁটাইসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এমনই এক সংকটময় পরিস্থিতিতে ইন্টেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) দায়িত্ব পেয়েছেন সেমিকন্ডাক্টর খাতের বিশেষজ্ঞ ও প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগকারী ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্ম ওয়ালডেন ইন্টারন্যাশনালের প্রতিষ্ঠাতা লিপ-বু টান। ১৮ মার্চ থেকে ইন্টেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব পালন শুরু করবেন তিনি।

লিপ-বু টানের জন্ম মালয়েশিয়ায় হলেও শৈশব কেটেছে সিঙ্গাপুরে। তিনি নানইয়াং ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন এবং পরে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি) থেকে পারমাণবিক প্রকৌশলে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর সান ফ্রান্সিসকো ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ সম্পন্ন করেন। ১৯৮৭ সালে ওয়ালডেন ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্ম প্রতিষ্ঠা করেন লিপ-বু টান। এশিয়ার সম্ভাবনাময় প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ করে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। ২০০৯ সালে টান ক্যাডেন্স ডিজাইন সিস্টেমসের সিইও হিসেবে দায়িত্ব নেন লিপ-বু টান। প্রতিষ্ঠানটি মূলত চিপ ডিজাইনের জন্য সফটওয়্যার তৈরি করে থাকে।

আরও পড়ুনসত্যিই কি বিক্রি হচ্ছে শীর্ষ প্রসেসর নির্মাতা ইন্টেল২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সম্প্রতি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চিপের বাজারে এনভিডিয়ার আধিপত্য, আধুনিক চিপ উৎপাদন প্রযুক্তিতে পিছিয়ে থাকা এবং বিনিয়োগকারীদের ক্রমবর্ধমান চাপ—এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে ইন্টেলকে। নতুন সিইও হিসেবে লিপ-বু টানের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে ইন্টেলের কৌশলগত অবস্থান ঠিক করা। অর্থাৎ ইন্টেলের মূল ব্যবসা কি পিসি ও সার্ভার চিপেই সীমাবদ্ধ থাকবে নাকি এআই চিপ বাজারে শক্ত অবস্থান গড়ে তুলবে, তা নির্ধারণ করতে হবে লিপ-বু টানকে।

আরও পড়ুনইন্টেল ও এএমডির একাধিক প্রসেসরে নিরাপত্তাত্রুটি, সাইবার হামলার শঙ্কা২২ অক্টোবর ২০২৪

নতুন দায়িত্ব নেওয়ার আগে নিজের ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরে লিপ-বু টান বলেন, ‘যেসব ক্ষেত্রে আমরা এগিয়ে, সেখানে আমাদের আরও বিনিয়োগ করতে হবে। যেসব ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছি, সেখানে নতুন কিছু উদ্ভাবনের ঝুঁকি নিতে হবে। আর যেসব ক্ষেত্রে অগ্রগতি ধীর, সেখানে গতি বাড়ানোর উপায় খুঁজে বের করতে হবে।’

প্রসঙ্গত, লিপ-বু টান এর আগে ইন্টেলের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ছিলেন। তবে ২০২৪ সালে কৌশলগত মতপার্থক্যের কারণে তিনি পরিচালনা পর্ষদ ছেড়ে দেন। এবার সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ইন্টেলের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করবেন তিনি।

সূত্র: ইন্টেল, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইন ট ল র প

এছাড়াও পড়ুন:

ব্যাটারি কারখানায় ডাকাতি, অস্ত্রের মুখে শ্রমিকদের জিম্মি করে লুট

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে একটি ব্যাটারি কারখানায় ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ২০-২২ দুর্বৃত্ত আগ্নেয় ও দেশীয় অস্ত্রের মুখে ১৮ শ্রমিককে মারধর পরে জিম্মি করে ব্যাটারি তৈরির সিসা, প্লেট, কানেক্টরসহ অন্তত ৫৫ লাখ টাকার সামগ্রী লুট করেছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এসব সামগ্রী ট্রাকে করে নিয়ে গেছে তারা।

বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার তাড়াশ-বারুহাঁস সড়কের পশ্চিম দিকে হেদার খালে ভাই ভাই ব্যাটারি কারখানায় এ ঘটনা ঘটে। দুর্বৃত্তদের মারধরে কারখানার শ্রমিক আব্দুল হান্নান, মোস্তাক হোসেন, শামীম হোসেনসহ অনন্ত আটজন আহত হয়েছেন। তাড়াশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. নাজমুল কাদের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় কারখানার মালিক মো. শয়নুল ইসলাম লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

শয়নুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে একটি বড় ট্রাকে ২০ থেকে ২২ জন কারখানায় আসে। তারা টিনের বেড়া ভেঙে কারখানায় ঢুকে আগ্নেয় ও দেশীয় অস্ত্রের মুখে শ্রমিক আব্দুল হান্নান, মোস্তাক, শামীমসহ ছয়জনকে জিম্মি করে। তারা বাধা দিলে মারধর করে হাত-পা বেঁধে ফেলে। বিশ্রামাগারে ঘুমিয়ে থাকা আরও ১০-১২ শ্রমিককে জিম্মি করে লুটপাট শুরু করে।

প্রায় চার ঘণ্টায় তারা কারখানা থেকে তিন টন ব্যাটারি তৈরির সিসা, ৩৪০ টাকা কেজি মূল্যের ১ হাজার ২০০ কেজি কানেক্টর, ২৫০ টাকা কেজির ১৬ টন প্লেট, ৬৩ হাজার টাকার ৯টি পুরোনো ব্যাটারিসহ প্রায় ৫৫ লাখ টাকা মূল্যের মালপত্র লুট করে ট্রাকে করে চলে যায়। তারা চলে গেলে শ্রমিকরা একে অপরের হাত-পায়ের বাঁধন খুলে পুলিশে খবর দেন।

তাড়াশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. নাজমুল কাদের বলেন, খবর পেয়ে দুই দফা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। ভাই ভাই ব্যাটারি কারখানায় ডাকাতির সত্যতা পাওয়া গেছে। ডাকাতি মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলমান আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ