ভারতের পার্লামেন্টের আসন বৃদ্ধি নিয়ে সম্মেলন, সাড়া পাচ্ছেন স্ট্যালিন
Published: 14th, March 2025 GMT
ভারতের পার্লামেন্টের আসন বৃদ্ধি নিয়ে ডাকা সম্মেলনের এখনো এক সপ্তাহ বাকি, কিন্তু ইতিমধ্যেই যোগদানের সাড়া পেতে শুরু করেছেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন। তেলেঙ্গানার কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি, ওই রাজ্যের বিরোধী দল বিআরএসের ওয়ার্কিং প্রেসিডেন্ট কে টি রাম রাও এবং কর্ণাটকের উপমুখ্যমন্ত্রী ডি কে শিবকুমার জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা ২২ মার্চের সম্মেলনে যোগ দেবেন।
কর্ণাটকের কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যের কারণে তিনি উপস্থিত থাকতে পারবেন না। তাঁর হয়ে যাবেন উপমুখ্যমন্ত্রী শিবকুমার। কংগ্রেস তামিলনাড়ুর সরকারের শরিক।
শুধু জনসংখ্যার নিরিখে সংসদের আসনসংখ্যা নির্ধারণের বিরোধিতায় ওই সম্মেলনে দক্ষিণের রাজ্যগুলোকে একজোট করার চেষ্টা চালাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিন। দাক্ষিণাত্যের পাঁচ রাজ্য ছাড়াও ওই সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য তিনি চিঠি লিখেছেন পশ্চিমবঙ্গ, পাঞ্জাব ও বিজেপির শাসিত ওডিশার মুখ্যমন্ত্রীদেরও। এ ছাড়া স্ট্যালিন আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বিজেপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের।
জনসংখ্যা বেড়ে যাওয়ার ওপর লোকসভার সদস্যসংখ্যা নির্ধারিত হয়ে আসছে ভারতের স্বাধীনতার পর থেকে। ১৯৫১, ১৯৬১ ও ১৯৭১ সালের জনসংখ্যার নিরিখে তিনবার বাড়ানো হয়েছে রাজ্যওয়ারি লোকসভা প্রতিনিধিদের সংখ্যা। তার ভিত্তিতে বেড়েছে রাজ্যসভার সদস্যসংখ্যাও। কিন্তু ১৯৭৬ সালে সেই ব্যবস্থা স্থগিত রাখা হয়। সংবিধান সংশোধন করে জানানো হয়, পরবর্তী ২৫ বছর সংসদের আসন বাড়ানো হবে না। কারণ হিসেবে দেখানো হয়, কেন্দ্রীয় সরকারের জন্মনিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি। ২০০০ সালে আরও একবার সংবিধান সংশোধন করে সেই মেয়াদ আরও ২৫ বছরের জন্য বাড়ানো হয়। আগামী বছর ২০২৬ সালে মোট ৫০ বছরের মেয়াদ পূর্তি হলে সরকারকে সংসদের আসন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিতে হবে। দেশের জনগণনা ২০১১ সাল পর্যন্ত হয়েছে। ২০২১ সালে কোভিডের কারণে বন্ধ ছিল। সেই থেকে এখনো জনগণনা হয়নি।
জন্মনিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি দক্ষিণের রাজ্যগুলোয় যতটা সফল, হিন্দি বলয়ে ততটা নয়। ফলে পুরোনো হিসেবে জনসংখ্যার বিচারে সংসদের আসন বৃদ্ধি ঘটানো হলে দেখা যাচ্ছে, দক্ষিণের রাজ্যগুলোর তুলনায় উত্তর প্রদেশ, বিহার, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্রসহ অন্যান্য রাজ্যের আসনসংখ্যা অনেক বেড়ে যাবে। এতটাই বাড়বে যে বিজেপির মতো হিন্দি বলয়ের দলের পক্ষে দাক্ষিণাত্যের সমর্থন ছাড়াই দেশ শাসন করা সম্ভবপর হবে। স্ট্যালিন এরই বিরোধিতায় নেমেছেন সবার আগে। তাঁর বক্তব্য, কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মসূচির সাফল্য সংসদে প্রতিনিধি পাঠানোর ক্ষেত্রে ‘শাস্তি’ বলে বিবেচিত হতে পারে না। একইভাবে হিন্দি বলয়ের ‘ব্যর্থতার’ পুরস্কারও এভাবে দেওয়া যায় না। স্ট্যালিন ইতিমধ্যেই সংসদের আসন বৃদ্ধির বিষয়টি আরও ৩০ বছরের জন্য স্থগিত রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন যাতে উত্তর, পশ্চিম ও পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোর জন্মনিয়ন্ত্রণ কমানো যায় এবং উত্তর-দক্ষিণে সমতা আসে।
তামিলনাড়ুর রাজধানী চেন্নাইয়ে ডাকা ওই সম্মেলনে যোগ দেওয়ার বিষয়ে এখনো হ্যাঁ বা না বললেও কেরালার বামপন্থী সরকার ও অন্ধ্রপ্রদেশের টিডিপি সরকার দাবির বিরোধিতা করেনি। বরং দুই রাজ্যও এই বৃদ্ধির সম্ভাবনায় চিন্তিত। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এখনো নিজে যাওয়ার কিংবা প্রতিনিধি পাঠানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেননি। সিদ্ধান্ত নেননি পাঞ্জাবের আম আদমি পার্টির মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত সিং মানও।
ওড়িশার বিরোধী দল বিজেডির নেতা নবীন পট্টনায়ক দক্ষিণের যুক্তিকে সমর্থন করেছেন। যদিও বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী এখনো নীরব। দক্ষিণের বিজেপি নেতৃত্বও এই বিষয়ে বিরোধিতার রাস্তায় হাঁটছে না। তাদের পক্ষে দক্ষিণী স্বার্থের বিরোধিতা করা সম্ভব নয়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ শুধু বলেছেন, দক্ষিণের আসন কমবে না।
কিন্তু অমিত শাহের এ কথায় কেউ সন্তুষ্ট নন। এ পরিস্থিতিতে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী ঠিক করেছেন, দাবির সমর্থনে দলীয় সংসদ সদস্য ও পদাধিকারীদের বিভিন্ন রাজ্যে পাঠাবেন, যাতে ২২ মার্চের সম্মেলন সফল হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ম খ যমন ত র র আসন ব দ ধ জনস খ য সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
কথা বলবেন পুতিন-ট্রাম্প
ইউক্রেন যুদ্ধে সাময়িক বিরতির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে পুরোপুরি সম্মত নন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। যুদ্ধবিরতির বিষয়ে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তাই শিগগিরই দুই পরাশক্তিধর দেশের প্রেসিডেন্টের মধ্যে আলাপচারিতা শুরুর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। শুক্রবার বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে মস্কো গিয়েছেন ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিফ উইটকফ। পুতিনের সঙ্গে উইটকফের বৈঠক হয়েছে। বৈঠকের পর পুতিন কোনো মন্তব্য করেননি। তবে এর আগে তিনি বেলারুশের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, ইউক্রেনের জন্য ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি ‘ভালো হবে’ এবং ‘আমরা এর পক্ষে।’ তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে কিছু ‘সূক্ষ্মতা’ আছে।
শুক্রবার পুতিনের সঙ্গে উইটকফের বৈঠক প্রসঙ্গে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানিয়েছেন, বৈঠকে ‘রাশিয়াকে অতিরিক্ত তথ্য দেওয়া হয়েছিল’ এবং ভ্লাদিমির পুতিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জন্য নিজস্ব ‘তথ্য ও অতিরিক্ত সংকেত’ দিয়েছিলেন।
তিনি জানান, দুই নেতার মধ্যে টেলিফোনে আলোচনার পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু উইটকফ ফিরে গিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বিষয়টি অবহিত করার পরেই কেবল সময় নির্ধারণে একমত হবেন পুতিন ও ট্রাম্প।
ঢাকা/শাহেদ