নারায়ণগঞ্জে পৃথক স্থানে দুই শিশুকে ধর্ষণচেষ্টা, আটক ২
Published: 14th, March 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে আট বছরের শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে এক দোকানিকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে দিয়েছে জনতা।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) সকালে সিদ্ধিরগঞ্জের নাসিক ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আটিগ্রামে ঘটনাটি ঘটে।
অভিযুক্ত দোকানির নাম সেলিম উদ্দিন (৫০)। তিনি সিদ্ধিরগঞ্জের আটি গ্রামের নূর হোসেনের বাড়ির ভাড়াটিয়া এবং সিলেটের জামালগঞ্জের আজগর আলী তালুকদারের ছেলে।
আরো পড়ুন:
ধর্ষণের বিচারে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল, রবিবারের মধ্যে সংশোধিত অধ্যাদেশ
মাগুরায় ঘুমিয়ে গেল আছিয়া, জাগিয়ে গেল দেশ
ভুক্তভোগী শিশুটির দাদির অভিযোগ, শুক্রবার সকালে শিশুটিকে তার মা বিস্কুট কিনতে টাকা দেয়। শিশুটি সেলিম উদ্দিনের দোকানে যায়। এসময় সেলিম শিশুটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। শিশুটি চিৎকার দিলে আশেপাশের লোকজন অভিযুক্ত সেলিমকে আটক করে মারধর করে। পরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে নিয়ে যায়।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি শাহিনূর আলম বলেন, “আট বছরের শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে সেলিম উদ্দিন নামে এক ব্যাক্তিকে স্থানীয়রা আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। ভুক্তভোগীর পরিবারের লোকজনও থানায় এসেছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।”
অপরদিকে, সোনারগাঁ উপজেলার কাচঁপুর রায়েরটেক এলাকায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে পাঁচ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মনসুর আলী (৩৫) নামের এক ব্যক্তিকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশ দিয়েছে স্থানীয়রা।
আটক মনসুর আলী
অভিযুক্ত মনসুর আলী রংপুর কোতোয়ালি থানার কাটাবাড়ি এলাকার বাসিন্দা।
স্থানীয়রা জানান, রায়েরটেক এলাকায় বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকে শিশুটি। তার বাবা-মা দুইজনই গার্মেন্টসে চাকরি করেন। বৃহস্পতিবার শিশুটিকে পাশের বাসার এক নারীর কাছে রেখে কাজে যান বাবা-মা। বিকেল ৩টার দিকে বাড়ির উঠানে শিশুটিকে একা পেয়ে খাবারের প্রলোভন দেখিয়ে কৌশলে একটি কক্ষে নিয়ে যান মনসুর আলী। সেখানে তিনি শিশুটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন।
এসময় বাড়িটির অন্য ভাড়াটিয়ারা দেখে ফেলায় বাচ্চাটি রক্ষা পায়। পরে শিশুর বাবা-মা কাজ থেকে বাসায় ফিরে ঘটনাটি জানতে পেরে এলাকাবাসীকে জানান। এলাকাবাসী রাত ১২টার দিকে অভিযুক্তকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশ সোপর্দ করে।
সোনারগাঁ থানার ওসি এম এ বারী জানান, “ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে একজনকে আটক করা হয়েছে। তাকে ধর্ষণচেষ্টা মামলায় আদালতে পাঠানো হবে।”
ঢাকা/অনিক/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আটক অভ য গ স দ ধ রগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
বাবাকে হাত-পা বেঁধে মাথায় গরম পানি ঢেলে নির্যাতনের অভিযোগ সন্তানদের বিরুদ্ধে
লাকসামে বাবার সম্পত্তি সন্তানদের নামে লিখে না দেওয়ার জন্য বাবাকে হাত-পা বেঁধে গরম পানি মাথায় ঢেলে দিয়ে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে সন্তানদের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার দুপুরে লাকসাম পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের গোপালপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। শুক্রবার এ ঘটনার ১ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিওতে দেখা যায়, গোপালপুর গ্রামের বাড়ির উঠানে বৃদ্ধ বাবার হাত ধরে করছে টানাহেঁচড়া করছেন তার সন্তানরা। এসময় তারা বাবার গায়ের গেঞ্জিটাও টানতে টানতে ছিঁড়ে ফেলেন। বাবাকে টেনেহিঁচড়ে জবরদস্তি করে তাকে হাত পা বাঁধা হয়, এরপর গরম পানি বাবার মাথা ও মুখে ঢালেন তারই সন্তানেরা। এসময় ওই বৃদ্ধ বাবার আত্নচিৎকার করে বলেন ‘ও আল্লাহ রে, ও আল্লাহ, ও মা গো মা, ও ভাইরে ভাই, ও জসিমের মারে..., জসিমের মা আমারে বাঁচান, কে কোথায় আছেন- আমাকে বাঁচান, আমাকে মাইরা ফেলছে তারা...’। ওই নির্যাতন দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা বৃদ্ধকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
জানা গেছে, নির্যাতনের শিকার ওই বাবার নাম আবদুল জলিল (৬০)। আর নির্যাতনকারীরা তার ছেলে, মেয়ে ও তার স্ত্রী। তারা হলেন- ছেলে শান্ত (২৮), নোমান (২০), রকি (১৬), মেয়ে নাজমিন (২৬), নুপুর (১৩) ও জলিলের স্ত্রী রিনা আক্তার (৪৫)।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগী আবদুল জলিল বাদী হয়ে সন্তান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
স্থানীয় লোকজন জানান, গোপালপুর গ্রামের মৃত হাজী ওয়ালীউল্লার ছেলে আবদুল জলিলের নামে বসতবাড়ি ও মাঠে ১২০ শতাংশ সম্পত্তি রয়েছে। জলিলের স্ত্রীসহ তিন ছেলে ২ মেয়ে রয়েছে। বড় ছেলে শান্ত প্রবাসে থাকেন, সে প্রবাস থেকে ওই সম্পত্তি তার নামে লিখে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন সময় আবদুল জলিলকে হুমকি দেয় এবং বাড়িতে থাকা জলিলের অন্য সন্তানরা তাকে মারধর করেন। এছাড়া বাবাকে ভরণপোষণও দিচ্ছিলেন না তারা। এ নিয়েই সন্তান ও স্ত্রী সঙ্গে জলিলের দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এ ঘটনা নিয়ে এলাকায় অনেক বার সামজিকভাবে শালিসও হয়েছে।
প্রতিবেশিরা বলছেন, বৃহস্পতিবার জলিলের সঙ্গে তার স্ত্রী-সন্তানদের কথা-কাটাকাটি হয়। এসময় জলিল ঘরের দরজা জানালা ভাঙচুরের চেষ্টা চালাতে গেলে তার ছেলে মেয়েরা বাবার ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে এ কাণ্ড চালায়।
নির্যাতনের শিকার আবদুল জলিল জানান, অনেক দিন ধরে আমার সন্তানরা সম্পত্তি নেওয়ার জন্য আমাকে বিভিন্ন সময়ে হুমকি দিচ্ছে। আমার স্ত্রী রিনা আক্তার এর প্রতিবাদও করে না। আমাকে তারা ভরণপোষণও দেয় না। ছোটখাটো ঘটনা নিয়ে ঝামেলা করে। ওই দিন আমার সন্তানরা বাড়ির উঠানের মধ্যে আমাকে হাত-পা বেঁধে অনেক মেরেছে। হাত-পায়ে শরীরে এখনও দাগ আছে।
লাকসাম থানার ওসি নাজনীন সুলতানা শুক্রবার রাতে সমকালকে বলেন, নির্যাতনের ভিডিওটি আমাদের নজরে এসেছে। পারিবারিক কলহ থেকে এ ঘটনা। এ ঘটনায় নির্যাতিত আবদুল জলিল থানায় স্ত্রী-সন্তানদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। তবে পারিবারিক শান্তি বজায় রাখতে অভিযোগটি আবার প্রত্যাহার করেছেন।
ওসি বলেন, এলাকায় বিষয়টি সামাজিকভাবে বিরোধ নিরসন ছাড়াও পরিবার নিয়ে থানায় এসেছেন। স্ত্রী ও সন্তানরাও বিষয়টি নিয়ে অনুতপ্ত।