বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারে জাতিসংঘ পাশে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন সংস্থাটির মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। শুক্রবার এক এক্স বার্তায় এমন মন্তব্য করেন তিনি।

জাতিসংঘ মহাসচিব এক্স বার্তায় বলেন, আমি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বাংলাদেশের জনগণকে তাদের উষ্ণ অভ্যর্থনার জন্য ধন্যবাদ জানাই। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সংস্কার ও রূপান্তরের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে একটি টেকসই ও ন্যায়সঙ্গত ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার লক্ষ্যে জাতিসংঘ সর্বদা আপনাদের পাশে থাকবে।

এর আগে সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব ও প্রধান উপদেষ্টা ড.

মুহাম্মদ ইউনূস বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও জাতিসংঘ মহাসচিব একই উড়োজাহাজে কক্সবাজার ভ্রমণ করবেন।

কক্সবাজারে নির্মাণাধীন কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও খুরুশকূল জলবায়ু উদ্বাস্তু কেন্দ্র পরিদর্শন করবেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। পরিদর্শন শেষে উখিয়ায় ড. ইউনূস এবং জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতারে যোগ দেবেন।

কক্সবাজারে জাতিসংঘ মহাসচিবকে স্বাগত জানাবেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা ফারুক ই আজম। জাতিসংঘ মহাসচিব সেখানে রোহিঙ্গা লার্নিং সেন্টার, রোহিঙ্গাদের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও পাটজাত পণ্যের উৎপাদন কেন্দ্র পরিদর্শন করবেন। পরিদর্শন ও ইফতার শেষে প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব একসাথে সন্ধ্যায় ঢাকায় ফিরবেন।

এদিকে, সফরের দ্বিতীয় দিন সকালেই পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। শুক্রবার সকাল ৯টায় রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টালে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপে আমাদের চ্যালেঞ্জ, সম্ভাবনা ও সরকারের করণীয় নিয়ে আলোচনার জন্য আগামী সপ্তাহে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন।

তিনি বলেন, এই প্রতিনিধিদলে আমাদের অর্থ উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ও বাণিজ্য সচিবসহ সংশ্লিষ্টরা থাকবেন। তারা যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নিয়ে যারা কাজ করে ইউএসটিআর, তাদের সঙ্গে আলোচনা করে কিছু ট্যারিফ ও নন-ট্যারিফ নিয়ে নির্দ্দিষ্ট কিছু পদক্ষেপ চিহ্নিত করবে বলে জানান তিনি।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ : চ্যালেঞ্জ, সম্ভাবনা ও সরকারের করণীয়’ শীর্ষক বিএসআরএফ-এর মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএসআরএফ-এর সভাপতি ফসিহ উদ্দীন মাহতাব। সঞ্চালনা করেন বিএসআরএফ এর সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপে আমাদের চ্যালেঞ্জ, সম্ভাবনা ও সরকারের করণীয় কী উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা জানি এই শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। এই ৯০ দিনের মধ্যে আমাদের কার্যক্রম কী হবে এবিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা নিজে সচেতন। আমাদের যেসব দেশের সঙ্গে বাণিজ্য রয়েছে বিশেষ করে রপ্তানি বেশি আমদানি কম, এরমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র অন্যতম। ক্রেতা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র একক বৃহত্তম দেশ। সেজন্য আমাদের কাছে বিষয়টি চিন্তার। যুক্তরাষ্ট্র যখন তাদের বাণিজ্য ঘাটতি নিরূপণ করছে সেটা পণ্যের ক্ষেত্রে করছে, সেবার ক্ষেত্রে করছে না। এজন্য আমরা কিছু কর্মসমষ্টি তৈরি করেছি।

তিনি বলেন, এই কর্মসমষ্টি নিয়ে আমাদের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী, অর্থ উপদেষ্টা ও বাণিজ্য সচিবসহ একটি প্রতিনিধি দল আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন। সেখানে যে ইউএসটিআর রয়েছে, যারা এই শুল্ক নিয়ে কাজ করেন, তাদের সঙ্গে আলোচনা করে কিছু ট্যারিফ ও নন-ট্যারিফ কাঠামো রয়েছে, যার মাধ্যমে আমরা আরো নির্দিষ্ট কিছু পদক্ষেপ চিহ্নিত করবো।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আপনারা জানেন যে, ডব্লিউটিও এর ফ্রেমওর্য়াকে আমরা সারা দুনিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য করি। সেখানে বাণিজ্যের যে বৈচিত্র্য আমাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যে ২.২ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন পণ্য অন্যান্য দেশের থেকে আমাদের দেশে আসে। এছাড়া আমকদের কিছু পণ্য আছে যা দুই দেশকেই সুবিধা দেয়। সেসব পণ্যের শুল্ক সহনীয় পর্যায়ে আনতে পারি। একইসঙ্গে আমাদের উপযোগী করার জন্য বিভিন্ন রকমের অবকাঠামো গত চিন্তা করছি। যেখানে আমাদের পণ্যের মান বাড়বে, গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে ও বাণিজ্য বাড়বে। এছাড়া যখন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমাদের প্রতিনিধি দল আলোচনা করে পরবর্তিতে আমি নিজেই যাবো। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যমন্ত্রীর কাছে সুস্পষ্ট প্রস্তাব রাখবো।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্ক পরিশোধ করে ব্যবসা করি। আমাদের রপ্তানির বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র ১ বিলিয়ন ডলার শুল্ক আদায় করে। আমরা যুক্তরাষ্ট্র থেকে শূন্য শুল্কের পণ্য আমদানি করে সেটা পুনরায় রপ্তানি করি। সেজন্য আমরা আমাতের প্রতিবন্ধকতা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। কারণ আমাদের নিজস্ব অর্থনীতির সক্ষমতার বাইরে যেতে পারবো না। আবার সামগ্রিক অর্থনীতির সমস্যা তৈরি হয়েছিলো ফ্যাসিস্ট শাসনামলে ভুল অর্থনীতির নীতি কারণে। আমরা অবশ্যই সে ধরনের নীতিতে যাবো না। আমাদোর অর্থরীতির সক্ষমতা, বাণিজ্যের সম্ভবনা, এই দুইটিতে এক সঙ্গে কাজে লাগিয়ে, সর্বোপরি প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা মেনে নিয়ে আমরা এই সমস্যার সমাধান করবো।

ঢাকা/আসাদ/এনএইচ

সম্পর্কিত নিবন্ধ