বেশিরভাগ পণ্যের দাম নিম্নমুখী, বেড়েছে চালের
Published: 14th, March 2025 GMT
পবিত্র রমজানের বাজারে বেশিরভাড় পণ্যের দাম নিম্নমুখী। তবে বাজারে কিছু কিছু চালের দাম কেজিপ্রতি দুই থেকে চার টাকা বেড়েছে।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে জানা গেছে, ভালোমানের সরু চাল কিনতে প্রতি কেজিতে দাম দিতে হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা। মাঝারি চাল ৭০ থেকে ৭৬ টাকা আর মোটা চালের দাম ৫৮ থেকে ৬২ টাকা।
চালের খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, গত ছয় মাসে তিনদফা বেড়েছে চালের দাম। এই সময় কেজিপ্রতি প্রায় ৮ থেকে ১০ টাকা দাম বেড়েছে। এরমধ্যে শুধু একদফা দুই-এক টাকা কমেছিল।
কাওরান বাজারের চাল ব্যবসায়ী রুস্তম শেখ বলেন, চালের দাম গত এক সপ্তাহে আবারও কেজিপ্রতি দুই টাকা বেড়েছে। রশিদ, উৎসব ডায়মন্ড, মোজাম্মেল ইত্যাদি জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের সরু মিনিকেট চালের ২৫ কেজির বস্তায় ৫০ টাকা বেড়েছে। এই চাল ৮৬ থেকে ৮৮ টাকা কেজি পড়ছে।
তিনি আরও বলেন, আসলে ৮০ টাকার নিচে কোনো ভালো মানের চাল পাওয়া যায় না। আর বড় বড় ব্র্যান্ডের মিনিকেটের দাম আরও বেশি, ৯০ থেকে ৯২ টাকার আশপাশে। ফলে মধ্যম আয়ের মানুষকে ৮০ টাকা কেজি চাল কিনতে হচ্ছে।
মোটা চালের দামও কম নয়। মোহাম্মদপুর, কাওরান বাজার, হাতিরপুল, রামপুরা ঘুরে দেখা যায়, ৫৮ টাকায় মোটা সেদ্ধ চাল বিক্রি হচ্ছে। একটু ভালোমানের মোটা চাল ৫৮ থেকে ৬০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। তবে বেশি পরিমাণে নিলে দু-এক টাকা কম দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
এদিকে বাজারে অন্যান্য পণ্যের দাম আগের মতো স্থিতিশীল দেখা গেছে, কিছু পণ্যের দাম নিম্নমুখীও। রোজার শুরুতে সয়াবিন তেলের যে সরবরাহ সংকট ছিল এখন তা-ও কমেছে। খোলা সয়াবিনের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও বোতলজাত তেলের সরবরাহে এখনও কিছুটা ঘাটতি দেখা গেছে।
রামপুরা বাজারে চঞ্চল ট্রেডার্সের বেলাল হোসেন বলেন, খোলা সয়াবিনের সরবরাহ পর্যাপ্ত আছে। বোতলজাত তেলও দিচ্ছে কোম্পানিগুলো। তবে চাহিদার তুলনায় কম। আগে যে তেল পাওয়াই যাচ্ছিল না, তেমন আর নেই।
লেবু, শসা ও বেগুনের মতো বাড়তি চাহিদার পণ্যগুলোর দাম কমছে। আগে বেগুন ৮০ থেকে ১০০ টাকা বিক্রি হলেও এখন ৫০ থেকে ৬০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। লেবুর হালি ৪০ টাকা ও শসা ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া অন্যান্য সবজির বাজার আগের মতো থাকলেও ঢেড়স ছাড়া বেশিরভাগ সবজির দর কমেছে। প্রতি কেজি ঢেড়স ৬০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
গত বছর উত্তাপ ছড়ানো পেঁয়াজেরও ব্যাপক দরপতন ঘটেছে। খুচরা পর্যায়ে দেশি ভালোমানের প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৬ থেকে ৪৫ টাকা। যেখানে গত বছর এ সময় বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ কিনতে ক্রেতাকে খরচ করতে হয়েছে ১১০ থেকে ১৩০ টাকা। একইভাবে আলুর দাম অর্ধেক কমে এখন ২০ থেকে ২৫ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে মোটাদাগে বলতে গেলে এ বছর পবিত্র রমজানে বেশ স্বস্তিদায়ক পর্যায়ে রয়েছে মুদিপণ্যের দাম। রোজা শুরুর আগেই বাজারে যে অরাজকতা এবার দেখা যায়নি। এ বছর এখন পর্যন্ত চিনি, খেজুর, ডালের দাম কম রয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব জ র দর ন ত যপণ য র দ ম ন ত যপণ য সরবর হ
এছাড়াও পড়ুন:
ইলিশ: দাম স্বাভাবিক, ক্রেতা কম
বাংলা নববর্ষ উদযাপনে পান্তা ইলিশের একটি রেওয়াজ আছে। প্রতি বছর পয়লা বৈশাখ এলে বাজারে ইলিশের চাহিদা ও দাম বেড়ে যায়। কিন্তু এবার বাজারে বড় সাইজের ইলিশের সরবরাহ ও দাম স্বাভাবিক থাকলেও ক্রেতা কম বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে মাছ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এক কেজি বা একটু বেশি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা, ৭০০ থেকে ৯০০ গ্রামের ইলিশ ১ হাজার ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা এবং ৪০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৩০০ টাকায়।
কারওয়ান বাজারে পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে ইলিশ মাছ কিনতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী সুইটি রানী রাইজিংবিডিকে বলেন, “পয়লা বৈশাখে পান্তা ইলিশ না খেলে নববর্ষ উদযাপন হবে কী করে? তাই স্বামীকে নিয়ে ইলিশ নিতে এসেছি। এখানে ভালো মানের ইলিশ পাওয়া যায়। আমি এক কেজি ওজনের দুটি ইলিশ নিয়েছি। আমার কাছ থেকে চার হাজার টাকা রেখেছে। গত সপ্তাহেও এই দামে নিয়েছি।”
আরো পড়ুন:
কড়া নাড়ছে ঈদ, চলছে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা
শেষ মুহূর্তে জমজমাট ঈদের কেনাকাটা
সাজ্জাদুল ইসলাম নামের আরেকজন ক্রেতা রাইজিংবিডিকে বলেন, “আমাদের অফিসের জন্য ১৫ কেজি ইলিশ নিয়েছি। অফিসের সবাই ইলিশ দিয়ে নববর্ষ উদযাপন করব। ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের দাম রেখেছে ১ হাজার ৬০০ টাকা করে। অন্য সময় হয়তো ১ হাজার ৫০০ তে পেতাম। তবে এখানকার মাছগুলো টাটকা।”
পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে ইলিশ মাছ কিনতে আসা কাইয়ুম মজুমদার রাইজিংবিডিকে বলেন, “এবার বাজারে অন্য বছরের তুলনায় ইলিশের দাম কম দেখলাম। বড় ইলিশ ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকা মধ্যে। কিন্তু যারা মধ্যবিত্ত রয়েছে তাদের পক্ষে এই দামেও ইলিশ কেনা সম্ভব না।”
কারওয়ান বাজারে সুজন মৎস্য আড়ৎ এর স্বত্বাধিকারী মো. সুজন সিকদার রাইজিংবিডিকে বলেন, “বাজারে এখন পর্যাপ্ত পরিমাণ ইলিশ সরবরাহ থাকার কারণে পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে ইলিশের দাম বাড়েনি। আগের দামে বিক্রি হচ্ছে। নদীর ইলিশের চাহিদা বেশি। এখন ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকার মধ্যে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। তবে আগে যেমন পয়লা বৈশাখে বাজারে ভিড় থাকত। এ বছর ভিড় দেখছি না, বিক্রিও কম।”
বাবুল মৎস্য আড়ৎ এর ইলিশ বিক্রেতা বাবুল মোল্লা রাইজিংবিডিকে বলেন, “এবার বাজারে ইলিশের দাম স্বাভাবিক রয়েছে। এর অন্যতম কারণ বড় ইলিশ মাছের সরবরাহ ঠিক আছে।”
ঢাকা/রায়হান/সাইফ