আলভারেজের টাইব্রেকার শট বিতর্কের জের, বদলাতে পারে পেনাল্টির নিয়ম
Published: 14th, March 2025 GMT
বুধবার রাত থেকে হুলিয়ান আলভারেজের বাতিল হওয়া টাইব্রেকার গোল নিয়ে চলছে তোলপাড়। টাইব্রেকারে শট নেওয়ার আগে আলভারেজের দুই পা–ই বলে লেগেছে কি না, তা নিয়েই যত আলোচনা। কেউ বলছেন, আলভারেজের পা পিছলে গেলেও তিনি শেষ পর্যন্ত বল স্পর্শ করেননি।
কেউ কেউ আবার বলছেন, বলের গায়ে আলভারেজের পায়ের স্পর্শ ঠিকই লেগেছে, রেফারি তো আর ভুল করবেন না। এরপর বিষয়টি নিয়ে উয়েফার সঙ্গেও যোগাযোগ করে আতলেতিকো মাদ্রিদ কর্তৃপক্ষ। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি এখন এমন যে উয়েফাকেও এখন বিষয়টি নিয়ে আলাদাভাবে মাথা ঘামাতে হচ্ছে।
আতলেতিকো মাদ্রিদের অভিযোগ আমলে নিয়ে বৃহস্পিতবার রাতে এক বিবৃতিতে উয়েফা জানায়, ‘যদিও সামান্য, তবে শট নেওয়ার আগে খেলোয়াড়ের অন্য পাটিও বল স্পর্শ করেছিল। আর বর্তমান আইন (ল’জ অব দ্য গেইম, আইন ১৪.
তবে আলভারেজ বিতর্কের পর এই আইন নিয়ে নতুন করে ভাবার কথাও বলছে তারা। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘উয়েফা বিষয়টা নিয়ে ফিফা এবং আইএফএবির (ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন বোর্ড) সঙ্গে আলোচনা করবে। যেখানে তারা অনিচ্ছাকৃতভাবে ডাবল টাচের ক্ষেত্রে নিয়মটি পর্যালোচনা করা উচিত কি না, সেটা নির্ধারণ করবে।’
উয়েফার এই বিবৃতি নিয়ে আতলেতিকো অবশ্য তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে আগের দিন ম্যাচ শেষে পোলিশ রেফারির গোল বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়ে বেশ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান আতলেতিকো কোচ দিয়েগো সিমিওনে। তিনি বলেন, ‘আমি কখনো শুটআউটের পেনাল্টির জন্য ভিআরের শরণাপন্ন হতে দেখিনি। কখনো না।’
এরপর বলটি নড়েছে কি না, সেই প্রশ্নও তোলেন সিমিওনে। এমনকি যাঁরা বলটিকে নড়তে দেখেছেন, তাঁদের তিনি হাতও তুলতে বলেন, ‘আপনাদের হাত তুলুন, যাঁরা দেখেছেন হুলিয়ান বল দ্বিতীয়বার স্পর্শ করেছে। কে হাত তুলবেন? কেউই হাত তোলেননি। এর বেশি আর কিছুই আমার বলার নেই...।’
আরও পড়ুন‘যাঁরা বলটি নড়তে দেখেছেন, দয়া করে হাত তুলুন’১৩ মার্চ ২০২৫অন্যদিকে গোল বাতিল নিয়ে হওয়া সমালোচনার জবাব দিয়ে রিয়াল গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া বলেছেন, ‘উয়েফা এটা পরিষ্কার দেখেছে—হারের পর নিজেদের অন্যায়ের শিকার ভাবাটা ভালো লাগে না। এসব নিয়ে ওরা সব সময়ই ঘ্যান ঘ্যান করে। রেফারি নির্দিষ্ট কোনো দলকে সাহায্য করতে চান না, সেটা স্পেনেও না, ইউরোপেও না।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আলভ র জ র আতল ত ক স পর শ
এছাড়াও পড়ুন:
অভ্যুত্থানের সময় ঢাবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িত শতাধিক ব্যক্তি শনাক্ত
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত আন্দোলনকারীদের ওপর হামলায় জড়িত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২২ জন শিক্ষার্থীকে শনাক্ত করা হয়েছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় হামলাসংক্রান্ত তথ্যানুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদনে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খানের কাছে প্রতিবেদনটি জমা দেন তথ্যানুসন্ধান কমিটির আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল ইসলাম। উপাচার্যের কার্যালয়সংলগ্ন লাউঞ্জে প্রায় ৫৫০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনটি উপাচার্যের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
পরে কাজী মাহফুজুল ইসলাম সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত যত হামলা হয়েছে, আমরা তার সবকিছু এ প্রতিবেদনে আনার চেষ্টা করেছি। সেখানে আমরা দেখেছি, ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীদের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করা হয়েছে।’
মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ‘১২২ জন ঢাবি শিক্ষার্থী, যারা হামলায় জড়িত, তাদের প্রত্যক্ষ প্রমাণ আমরা পেয়েছি। এ ছাড়া বহিরাগতও অনেক শিক্ষার্থীর প্রমাণ আমাদের হাতে এসেছে। এ প্রতিবেদনটি সিন্ডিকেট থেকে পাশ হয়ে এলে আমরা তাদের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে জানাব এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে। এ ছাড়া যারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নয়, তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিতে বলা হয়েছে।’
আইন বিভাগের শিক্ষক মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ‘১৫ জুলাই বিভিন্ন স্থানে হামলার ঘটনায় আমরা দেখেছি, মল চত্বরে যারা হামলা করেছে তাদের মাথায় সাদা ক্যাপ ছিল। এরপর যারা আহত হয়েছে তারা যখন ঢাকা মেডিকেলে গিয়েছে, তাদেরও হামলা করেছিল ছাত্রলীগ। এরপর ডাক্তারদের বলা হয়েছিল চিকিৎসা না দিতে, যেখানে আমাদের প্রশাসনেরও যোগসাজশ থাকতে পারে।’
কোন প্রক্রিয়া অবলম্বন করে প্রতিবেদনটি করা হয়েছে, সে বিষয়ে জানতে চাইলে কমিটির আহ্বায়ক বলেন, ‘আমরা তদন্ত করার সময় বিভিন্ন জায়গার সিসিটিভি ফুটেজ খুঁজতে গেলে সেখানে তার কোনো হার্ডডিস্ক পাইনি। সব হার্ডডিস্ক সরিয়ে ফেলা হয়েছে। আমরা সে ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের কাছে একটা মেইল ও নম্বর পাঠিয়েছি। শিক্ষার্থীরা সেখানে জুলাইয়ে হামলার নানা ছবি-ভিডিও পাঠিয়েছে। এ ছাড়া আমরা ন্যাশনাল ও ইন্টারন্যাশনাল পত্রপত্রিকার সংবাদগুলো দেখেছি। সেটার ওপর ভিত্তি করে রিপোর্টটি করা হয়েছে।’
শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ক্ষেত্রে শিক্ষকদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চলাকালীন ৭০ জন শিক্ষককে পাওয়া গেছে, যাঁরা শিক্ষার্থীদের জামায়াত, শিবির, ছাত্রদল, রাজাকার বলে ট্যাগিং (তকমা) করেছেন, যেটা আন্দোলনে প্রভাব ফেলেছে। কেননা শিক্ষক দ্বারা শিক্ষার্থীরা প্রভাবিত হবে, সেটা স্বাভাবিক। এ বিষয়ে তাঁদের কাছে জানতে চাইলে অনেকে স্বীকার করেছেন এবং সেটার জন্য “সরি” বলেছে।’
প্রতিবেদনটি জমা দেওয়ার সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সাইমা হক বিদিশা, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, আইন অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ ইকরামুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট অন্য শিক্ষকেরা উপস্থিত ছিলেন।