আজ শুক্রবার কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির পরিদর্শনে যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। আশ্রয়শিবিরে এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার করার কথা রয়েছে তাঁদের।

এর আগে দুপুরে আশ্রয়শিবিরের রোহিঙ্গা নেতা, ধর্মীয় শিক্ষক, যুব প্রতিনিধি ও নারীদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করার কথা রয়েছে জাতিসংঘ মহাসচিবের। রোহিঙ্গা নেতারা জানিয়েছেন, বৈঠকে নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসন জোরদারের লক্ষ্যে দ্রুত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেফ জোন (বসবাসের নিরাপদ অঞ্চল) গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়ার জন্য জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে দাবি জানাবেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের আমন্ত্রণের পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘ মহাসচিব চার দিনের সফরে গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় আসেন। আজ শুক্রবার সকালে ঢাকা থেকে উড়োজাহাজে কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছার পর সড়কপথে উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে যাওয়ার কথা রয়েছে জাতিসংঘ মহাসচিবের। অন্যদিকে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসও ঢাকা থেকে কক্সবাজারে পৌঁছে বিমানবন্দরের নবনির্মিত রানওয়ে, জলবায়ু উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসনে খুরুশকুলে নির্মিতব্য বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্প পরিদর্শন করবেন। দুপুরে পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে বিকেলে রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের ইফতার মাহফিলে যোগ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা। এরপর প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিবের ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।

জাতিসংঘ মহাসচিব ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার আশ্রয়শিবিরে আসার খবরে সাধারণ রোহিঙ্গারা খুবই উৎফুল্ল বলে জানান রোহিঙ্গাদের সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যানিটির সভাপতি মোহাম্মদ জোবায়ের। গতকাল রাতে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের সঙ্গে পৃথক তিনটি বৈঠকে বসবেন জাতিসংঘ মহাসচিব। এসব বৈঠকে আমরা আরকানে (রাখাইন) জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সেফ জোন করার দাবি জানাব। ইফতার মাহফিলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছেও আমরা এ বিষয়ে সহযোগিতা চাইব। সেফ জোন করা না গেলে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন কখনো সম্ভব হবে না।’

মোহাম্মদ জোবায়ের আরও বলেন, আগামী ১ এপ্রিল থেকে রোহিঙ্গাদের মাসিক খাদ্যসহায়তা সাড়ে ১২ মার্কিন ডলার থেকে কমিয়ে ৬ ডলার করার ঘোষণা এসেছে। খাদ্যসহায়তা কমলে আশ্রয়শিবিরের রোহিঙ্গাদের জনজীবনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এ বিষয়েও আলাপ করা হবে। তবে এর চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে সেফ জোনের বিষয়টি।

জেলা পুলিশ সুপার মো.

সাইফউদ্দিন শাহীন প্রথম আলোকে বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিবের সফর উপলক্ষে কয়েক স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি বিভিন্ন বাহিনী দায়িত্ব পালন করছেন।

জাতিসংঘের মহাসচিব বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আশ্রয়শিবিরে পৌঁছালে তাঁকে ফুল দিয়ে বরণ করবেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। এরপর জাতিসংঘের মহাসচিবকে নেওয়া হবে একটি ওয়াচ টাওয়ারে। সেখানে উঠে তিনি আশ্রয়শিবিরের বর্তমান চিত্র পর্যবেক্ষণ করবেন।

দুপুরে বালুখালী ও মধুরছড়া আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-১৮ ও ৪ বর্ধিত) একটি লার্নিং সেন্টার এবং ইউএনএইচসিআর ও ডব্লিউএফপির সেবা ও ত্রাণ বিতরণকেন্দ্র পরিদর্শন করবেন জাতিসংঘ মহাসচিব। এ সময় পৃথক তিনটি বৈঠকে রোহিঙ্গা কমিউনিটির নেতা, রোহিঙ্গা তরুণ-তরুণী, ধর্মীয় নেতাদের মনোভাবের কথা জানতে চাইবেন জাতিসংঘ মহাসচিব। বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে কুতুপালং আশ্রয়শিবিরে (ক্যাম্প-২০ বর্ধিত) রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ইফতারে যোগ দেবেন জাতিসংঘ মহাসচিব ও প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টার উদ্যোগে এ ইফতারের আয়োজন।
জানতে চাইলে আরআরআরসি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, একটি প্যান্ডেলে প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে ইফতারে অংশ নেবেন ১২৫ জন রোহিঙ্গা। অবশিষ্ট আরও এক লাখ রোহিঙ্গা প্যান্ডেলের বাইরে খোলা মাঠ ও পাহাড়ের উপত্যকায় বসে দোয়া ও ইফতার মাহফিলে অংশ নেবেন। একজন রোহিঙ্গা মাওলানা মোনাজাত পরিচালনা করবেন। রোহিঙ্গাদের মধ্যে একজন লিখিত বক্তব্য দিতে পারেন।

জাতিসংঘ মহাসচিব ২০১৮ সালে সর্বশেষ রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির পরিদর্শন এসেছিলেন। তবে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এটি প্রথম সফর। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা ১৩ লাখের বেশি। এর মধ্যে ৮ লাখ এসেছে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পরের কয়েক মাসে। দীর্ঘ ৮ বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি। উল্টো গত কয়েক মাসে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে এসে আশ্রয়শিবিরে ঠাঁই নিয়েছেন ৬০-৭০ হাজার রোহিঙ্গা।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইফত র প রথম করব ন

এছাড়াও পড়ুন:

ব্যাচেলর পয়েন্টের ‘পলি চেয়ারম্যান’ খ্যাত গুলশান আরা মারা গেছেন

নাটক ও সিনেমার পরিচিত মুখ অভিনেত্রী গুলশান আরা আহমেদ মারা গেছেন। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) ভোর ৬টা ৪০ মিনিটে মৃত্যু হয়েছে তার। 

তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছন পরিচালক এম রাহিম। তিনি জানান,  শ্রদ্ধেয় শুলশান আরা আহমেদ আজ আজ সকালে  ইন্তেকাল করেছেন। জংলি আপনার সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি। আপনি আজীবন আমাদের পরিবারেরই একজন হয়ে থাকবেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্ট দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পরিচালক কাজল আরেফিন অমি। পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। আমাদের গুলশান আরা আহমেদ আপা আপা আজ সকাল ৬:৪০-এ ইন্তেকাল করেছেন।’

অমি আরও লিখেছেন, ‘ব্যাচেলর পয়েন্টে উনি কাবিলার আম্মা, নোয়াখালীর চেয়ারম্যান চরিত্রে অভিনয় করেছেন। আপনাকে আমরা মিস করবো আপা। আল্লাহ পাক ওনাকে জীবনের সমস্ত গুনাহ মাফ করে, জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করুক। আমিন।’

জানা গেছে, হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক করেছিলেন অভিনেত্রী। দ্রুতই লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। তবে শেষ পর্যন্ত বাঁচানো যায়নি।  গুলশান আরা আহমেদের ফেসবুক আইডি থেকে  মাঝরাতে লেখা হয়, ‘আমার আম্মু গুলশান আরা আহমেদ আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে আছেন, হার্ট অ্যাটাক এবং হার্ট ফেইলিউরের জন্য। আপনার সবাই আমার মায়ের জন্য দোয়া করবেন।’ 

পরে শোনা যায় মৃত্যুর খবর, অর্থাৎ লাইফ সাপোর্ট থেকে আর ফেরানো যায়নি তাকে। ভোরে তাঁর মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করা হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অভিনেত্রীকে দাফন করা হবে। অভিনেত্রীর বোনের ছেলে অভিনেতা আর এ রাহুল জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রে মারা গেছেন অভিনেত্রী। তার লাশ দেশে আনার প্রক্রিয়া চলছে। 

গুলশান আরা ২০০২ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনে একজন তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে টিভি নাটকে যাত্রা শুরু করেন। তবে নিজেকে একজন চলচ্চিত্র অভিনেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন। সেই ইচ্ছা থেকেই গুলশান আরা প্রথম অভিনয় করেন প্রয়াত এনায়েত করিম পরিচালিত ‘কদম আলী মাস্তান’ চলচ্চিত্রে। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। দর্শকদের উপহার দিয়েছেন ‘চরিত্র’, ‘ডনগিরি’, ‘ভালোবাসা আজকাল’, ‘পোড়ামন’ এর মতো জনপ্রিয় সব ছবি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আমাকে স্নেহ করা মানুষটি এতো দ্রুত চলে যাবে ভাবিনি: বুবলী
  • মানুষটি এতো দ্রুত চলে যাবেন ভাবিনি: বুবলী
  • আমাকে স্নেহ করা মানুষটি এতো দ্রুত চলে যাবেন ভাবিনি: বুবলী
  • ওয়াক্‌ফ আইনের প্রতিবাদ কেন সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় রূপ নিল মুর্শিদাবাদে
  • মুসা (আ.)-এর বিয়ের শর্ত
  • মারা গেছেন অভিনেত্রী গুলশান আরা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হবে দাফন
  • যুক্তরাষ্ট্রে মারা গেলেন গুলশান আরা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হবে দাফন
  • যুক্তরাষ্ট্রে মারা গেলেন গুলশান আরা, দাফন হবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়
  • যুক্তরাষ্ট্রে মারা গেছেন অভিনেত্রী গুলশান আরা, দাফন হবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়
  • ব্যাচেলর পয়েন্টের ‘পলি চেয়ারম্যান’ খ্যাত গুলশান আরা মারা গেছেন