দুই বছর আগে রাজধানীর উত্তরায় ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের সোয়া ১১ কোটি টাকা ছিনতাইয়ের মামলায় ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। ছিনতাই হওয়া টাকার মধ্যে ৮ কোটি ১০ লাখ ৫ হাজার টাকা উদ্ধার করতে পেরেছে ডিবি পুলিশ। ৩ কোটি ১৫ লাখ টাকার হদিস এখনো মেলেনি।

২০২৩ সালের ৯ মার্চ একটি সিকিউরিটি কোম্পানির গাড়ি থেকে এই ১১ কোটি ২৫ লাখ টাকা ছিনতাই করা হয়। এ ঘটনায় ২০২৩ সালের ৯ মার্চ মামলা দায়ের করা হয়। মামলা দায়েরের পর ডাকাতিতে জড়িত ১৩ আসামিকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এদের মধ্যে ১২ জনের কাছ থেকে ডাকাতির ৮ কোটি ১০ লাখ ৫ হাজার ৫ টাকা উদ্ধার করা হয়৷

প্রায় দুই বছর তদন্ত শেষে গত ১৯ জানুয়ারি মামলার তদন্তকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মো.

আতাউর রহমান ১৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দেন। 

চার্জশিটভূক্ত আসামিরা হলেন- সোহেল রানা শিশির ওরফে সোহেল ওরফে রানা ওরফে সোহেল রানা ওরফে শিশির, মো. আকাশ আহম্মেদ বাবলু ওরফে বাবলু মিয়া ওরফে হাজারি, মো. হাবিবুর রহমান ওরফে হাবিব ওরফে নুরু, মো. এনামুল হক বাদশা, মো. বদরুল আলম, মো. সোনাই মিয়া, মো. মিলন মিয়া, নিজাম উদ্দিন ওরফে মো. হৃদয়, মিজানুর রহমান,  মো. আকাশ মাদবর, সাগর মাদবর, সানোয়ার হাসান, ইমন ওরফে মিলন জমাদ্দার, মো. মোস্তফা ও  মো. জনি মিয়া। 

এদের মধ্যে মোস্তফা ও জনি পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়েছে। আগামি ২০ এপ্রিল এ  মামলার চার্জশিট আদালতে উপস্থাপনের তারিখ  ধার্য রয়েছে। 

এ বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান বলেন, “এ মামলায় ১৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছি। গ্রেপ্তার আসামিদের কাছে থেকে ৮ কোটি ১০ লাখ ৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। তবে সুনামগঞ্জে বাড়ি অভিযুক্ত মোস্তফা ও জনিকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। ধারণা করছি, লুণ্ঠিত অবশিষ্ট ৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা তাদের কাছে রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তার করতে পারলে অবশিষ্ট টাকা উদ্ধার করতে পারবো। তারা পলাতক রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেছি।”

চার্জশিটে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, “আসামিরা সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য এবং প্রত্যেকেই একে অপরের পূর্ব পরিচিত। তাদের মধ্যে প্রায়ই মোবাইল ফোনে যোগাযোগ হতো। আসামি সোহেল, আকাশ, হাবিবুর ও এনামুল দলনেতা এবং এ ডাকাতির ঘটনা সংঘটনের মূল পরিকল্পনাকারী। অন্যরা তাদের কথা মেনে চলে।  সোহেল রানা ২০২১ সালের ৩ মার্চ  মিরপুর ডিওএইচএস এ অবস্থিত মানি প্লান্ট লিংক প্রাইভেট কোম্পানি লিমিটেডে ড্রাইভার হিসেবে ১৬ হাজার টাকা বেতনে চাকরি নেন। এক বছর পর চাকরি ছেড়ে দেন। কোম্পানির অন্যান্য ড্রাইভার ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ডাচ বাংলা ব্যাংকের টাকা বুথে ফিডিং করার জন্য কখন, কোথায়, কোন পথে নিয়ে যায় এ বিষয়ে ভালোভাবে খোঁজখবর রাখতেন তিনি। এনামুল ও সোহেলের কু-প্ররোচনায় আকাশ ও হাবিব পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক ডাকাতি করার উদ্দেশ্যে অন্য আসামিদের নিয়ে ২০২৩ সালের ৮ মার্চ রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে একত্রিত হন। পরদিন ৯ মার্চ ভোর ৪/৫ টার দিকে বনানীর হোটেল থেকে পায়ে হেঁটে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে যাত্রী ছাউনিতে আসেন।” 

তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, “আকাশ মাদবর মাইক্রোবাস ভাড়ায় চালান। তিনি ঘটনার দিন ৯ মার্চ ভোরে ৮ হাজার টাকা ভাড়ায় তার মালিককে সিলেটে যাওয়ার মিথ্যা কথা বলেন। পরে  আসামিরা তাকেসহ তারা গাড়ির পিছনের সিটে বসে এবং সোহেল গাড়ির ড্রাইভার হিসাবে গাড়িটি কিছু দূরে চালিয়ে একটি গ্যাস পাম্পে যান। তারপর ৫০০ টাকার গ্যাস নেন। পরবর্তীতে আসামিরা উত্তরার মেট্রোরেল স্টেশন সংলগ্ন রাস্তায় ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের টাকা ভর্তি গাড়ি ডাকাতি করার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। সকাল ৬ টা ৫৫ মিনিটে মিরপুর ডিওএইচএস থেকে মানি প্ল্যান্ট লিংক কোম্পানি লিমিটেডের পাঁচজনের একটি টিম চারটি ট্রাংক ভর্তি মোট ১১ কোটি ২৫ লাখ টাকা নিয়ে সাভার ও আশুলিয়া এলাকায় ডাচ্ বাংলা এটিএম বুথে টাকা ফিডিং করার উদ্দেশ্যে রওনা করে। সকাল ৭ টার দিকে আসামি সোহেল গাড়িটি রাস্তায় চলমান অবস্থায় দেখতে পেয়ে মোবাইল ফোনে প্রথমে এনামুলকে জানান। 

তুরাগ থানাধীন উত্তরা ১৬ নাম্বার সেক্টর এলাকায় পৌঁছালে আসামিরা তাদের মাইক্রোবাসটি ডানদিক থেকে বামদিকে চাপদিয়ে সামনে গিয়ে টাকা ভর্তি মাইক্রেবাসটি থামায়। ডাকাতরা গাড়ি থেকে নামে এবং সবাইকে কিলঘুসি মারে ও গালিগালাজ করেন।হাবিব টাকা ভর্তি গাড়ির ড্রাইভার অহিদুজ্জামানের কাছে থেকে জোর করে গাড়ির চাবি কেড়ে নেয়। অন্য ডাকাতরা বাকি চারজনকে রাস্তার পার্শ্বে ঝোপঝাড়ে আটকে রাখে। পরে তারা গাড়িটি নিয়ে সামনে পঞ্চবটির দিকে ৩/৪ মিনিট চালানোর পর গাড়িটি থামিয়ে টাকা ভর্তি চারটি ট্রাংক তাদের গাড়িতে উঠিয়ে নেয়। তারপর মিরপুর ১২ নম্বর হয়ে পূর্বাচল ৩০০ ফিট রাস্তায় আসেন। সেখানে ট্রাংকের তালা ভেঙ্গে লুট করা ৭ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ভাগ করে নিয়ে যার যার মতো চলে যান। তিনটি ট্রাংক ভর্তি অবশিষ্ট ৩ কোটি ৮৯ টাকা এবং গাড়িসহ ড্রাইভার আকাশ মাদবর উত্তরা ও খিলক্ষেত এলাকায় অবস্থান করে।” 

যার কাছ থেকে যত টাকা উদ্ধার : 

ঘটনাটি ডিবি পুলিশ অবগত হওয়ার পর এর সাথে জড়িত ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করে। এদের মধ্যে ১২ জন আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়। তাদের কাছ থেকে ৮ কোটি ১০ লাখ ৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। ঘটনার দিনই খিলক্ষেত থানাধীন লা মেরিডিয়ান হোটেলের কাছ থেকে একটি কালো রংয়ের হাইয়েস মাইক্রোবাস থেকে ট্রাংকসহ ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। ১১ মার্চ বনানী থেকে সানোয়ার হোসেনের কাছ থেকে ১ কোটি ১৪ লাখ ৫১ হাজার ৫০০ টাকা, ১৩ মার্চ ভাটারা থানাধীন জোয়ার সাহারায় মিলনের কাছ থেকে ৩২ লাখ ৪৭ হাজার, দক্ষিণ খানের নর্দায় আকাশ ও সাগরের কাছ থেকে ১ কোটি ৭ লাখ, বনানী কড়াইল বস্তি থেকে নিজাম উদ্দিনের কাছ থেকে ৪৮ লাখ ৭ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। ১৪ মার্চ নেত্রকোনার দূর্গাপুর থানাধীন পূর্ব বাকল জোড়া গ্রামের মিলনের বাড়ি থেকে ১০ লাখ, আকাশ আহমেদের দেখানো মতে খিলক্ষেত থানাধীন একটি গ্যারেজ থেকে ২০ লাখ, ১৭ মার্চ পল্লবী থানাধীন সাগুপ্তাস্থ শিশিরের রুম থেকে ৬ লাখ, ১৮ মার্চ সাভার থানাধীন হেমায়েতপুর শিশিরের বোনের বাসা থেকে ৮১ লাখ ৫০ হাজার, ২০ মার্চ খিলক্ষেত থানাধীন আকাশ আহমেদ বাবুলের দেখানো মতে বাসা থেকে ৪ লাখ ৮০ হাজার, ২১ মার্চ শাহ আলী থানাধীন মিরপুর-১ থেকে তার খালাতো শ্যালিকার কাছ থেকে ৫ লাখ ১৯ হাজার ৫০০ টাকা, ৩০ মার্চ গোপালগঞ্জ থানাধীন হরিদাসপুর থেকে হাবিবুর রহমানের বাড়ির নিচ থেকে ৬ লাখ, ময়লার স্লাব থেকে ৫ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।

২০২৩ সালের ৯ মার্চ একটি সিকিউরিটি কোম্পানির গাড়িতে ১১ কোটি ২৫ লাখ টাকা সাভার ইপিজেডের ডাচ বাংলা ব্যাংকের বুথে রাখার জন্য নিয়ে যাচ্ছিল। রাজধানীর উত্তরা ১৬ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা থেকে সশস্ত্র অবস্থায় ছিনতাইকারীরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনায় দিনগত রাতে মানি প্ল্যান্ট লিঙ্ক প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে তুরাগ থানায় মামলা দায়ের করেন।

ঢাকা/টিপু 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ১০ ল খ ৫ হ জ র গ র প ত র কর ২০২৩ স ল র কর মকর ত র রহম ন ১১ ক ট অবস থ তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

হঠাৎ বাড়ছে হাইডেলবার্গ সিমেন্টে শেয়ারদর, চার দিনে বাড়ল ৬৩ টাকা

দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহে মূল্যবৃদ্ধিতে চমক দেখিয়েছে সিমেন্ট খাতের বহুজাতিক কোম্পানি হাইডেলবার্গ সিমেন্ট। মাত্র চার কার্যদিবসে ঢাকার বাজারে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ৬৩ টাকা বা প্রায় ৩০ শতাংশ বেড়েছে। তাতে গত ছয় মাসের মধ্যে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছে। ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার তথ্য পর্যালোচনা করে এ চিত্র পাওয়া গেছে।

ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, ঈদের ছুটির আগে সর্বশেষ গত ২৭ মার্চ হাইডেলবার্গ সিমেন্টের শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ২১৪ টাকা। ঈদের ছুটির পর শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় গত রোববার। ওই দিন বাজারে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম সাড়ে তিন টাকা কমেছিল। এর পরের চার দিন মূল্যবৃদ্ধিতে কোম্পানিটি বড় চমক দেখায়। চার দিনেই কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ৬৩ টাকা। তাতেই সপ্তাহ শেষে ঢাকার বাজারে কোম্পানিটি মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষে জায়গা করে নেয়। সপ্তাহ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারের বাজারমূল্য বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ২৭৪ টাকায়।

হঠাৎ গত সপ্তাহে কোম্পানিটি মূল্যবৃদ্ধির কারণ জানতে বাজারসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সামনে বছর শেষের লভ্যাংশ ঘোষণা করবে কোম্পানিটি। গত ডিসেম্বরে কোম্পানিটির আর্থিক বছর শেষ হয়েছে। শেয়ারবাজারের নিয়ম অনুযায়ী, বিমা খাতের কোম্পানি ব্যতীত অন্যান্য কোম্পানির ক্ষেত্রে হিসাব বছর শেষ হওয়ার ১২০ দিন বা চার মাসের মধ্যে বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে তা পরিচালনা পর্ষদে অনুমোদন করতে হয়। সাধারণত পরিচালনা পর্ষদের যে সভায় বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়, সেই সভা থেকেই বছর শেষে শেয়ারধারীদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়। এই নিয়ম অনুযায়ী, হাইডেলবার্গ সিমেন্টকে চলতি মাসের মধ্যে ২০২৪ সালের আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে লভ্যাংশের ঘোষণা দিতে হবে। এই ঘোষণা সামনে রেখে কোম্পানিটির শেয়ারের প্রতি হঠাৎ বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেড়ে থাকতে পারে বলে মনে করছেন বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

* চলতি মাসের মধ্যে লভ্যাংশ ঘোষণা করতে হবে কোম্পানিটিকে।
* সিমেন্ট খাতের ৭ কোম্পানির মধ্যে এটিই সর্বোচ্চ দামি শেয়ার।
* ছয় মাসের মধ্যে শেয়ারের দাম সর্বোচ্চ, ২৭৪ টাকা।

নেদারল্যান্ডসভিত্তিক বহুজাতিক কোম্পানি হাইডেলবার্গ স্ক্যান ও রুবি ব্র্যান্ডের সিমেন্ট বাজারজাত করে থাকে। শেয়ারবাজারে সিমেন্ট খাতের কোম্পানিগুলোর মধ্যে এটিই সর্বোচ্চ দামি শেয়ার। ঢাকার শেয়ারবাজারে বর্তমানে দেশি-বিদেশি সাতটি কোম্পানি তালিকাভুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি দেশীয় মালিকানাধীন আর বাকি দুটি বিদেশি বহুজাতিক কোম্পানি। সিমেন্ট খাতের দেশীয় কোম্পানিগুলোর হিসাব বছর গণনা হয় দেশের অর্থবছরের সঙ্গে সংগতি রেখে, অর্থাৎ জুলাই-জুনকেন্দ্রিক। আর বিদেশি কোম্পানিগুলোর হিসাব বছর মূলত ক্যালেন্ডার বছর বা জানুয়ারি-ডিসেম্বরকেন্দ্রিক।

গত বছরের প্রথম ৯ মাসের (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ সময়ে হাইডেলবার্গ সিমেন্ট ৪১ কোটি টাকার মুনাফা করেছে, যা ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১০ কোটি টাকা কম। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর—এই সময়ে কোম্পানিটি মুনাফা করেছিল ৫১ কোটি টাকা। গত বছর কোম্পানিটির মুনাফা কমে যাওয়ার কারণ বিক্রি বা ব্যবসা কমে যাওয়া। গত বছরের প্রথম ৯ মাসে হাইডেলবার্গ সিমেন্ট ১ হাজার ১১৫ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। ২০২৩ সালের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৩৮৬ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটি ব্যবসা কমেছে ২৭১ কোটি টাকার। একদিকে ব্যবসা কমেছে, অন্যদিকে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। সেই কারণে মুনাফা কমে গেছে।

কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের প্রথম তিন প্রান্তিক বা ৯ মাসের মধ্যে শেষ ৩ মাস (জুলাই-সেপ্টেম্বর) কোম্পানিটি লোকসান করেছে। ওই প্রান্তিকে কোম্পানিটির লোকসানের পরিমাণ ছিল প্রায় ৮০ লাখ টাকা। এক প্রান্তিকে লোকসানের পরও আগের দুই প্রান্তিকের মুনাফার কারণে এটি শেষ পর্যন্ত মুনাফার ধারাতেই ছিল।

ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে কোম্পানিটি শেয়ারধারীদের ২৫ শতাংশ বা শেয়ারপ্রতি আড়াই টাকা নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। তার আগের বছর এই লভ্যাংশের পরিমাণ ছিল নগদ ১০ শতাংশ। এখন শেয়ারধারীরা অপেক্ষায় আছেন গত বছরের লভ্যাংশের জন্য। যে লভ্যাংশ সামনে রেখে কোম্পানির শেয়ারের হঠাৎ মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে গত সপ্তাহে।

হাইডেলবার্গ সিমেন্ট ১৯৮৯ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। এটি মাঝারি মূলধনের একটি কোম্পানি। কোম্পানিটির মূলধন ৫৬ কোটি টাকা। গত ডিসেম্বর শেষে এটির শেয়ারের প্রায় ৬১ শতাংশেরই মালিকানায় ছিলেন উদ্যোক্তা-পরিচালকেরা। বাকি ৩৯ শতাংশ শেয়ারের মধ্যে ২৬ শতাংশ রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে। আর ১৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে ব্যক্তিশ্রেণির সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে।

হাইডেলবার্গ সিমেন্টের শেয়ারধারণ-সংক্রান্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারধারীর সংখ্যা ছিল মোট ১০ হাজার ১৯১ জন। এর মধ্যে ৯ হাজার ৯১৭ জন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী, যাঁদের হাতে কোম্পানিটির ৫ হাজারের কম শেয়ার রয়েছে। এসব বিনিয়োগকারী কোম্পানিটির মোট শেয়ারের প্রায় ৬ শতাংশ ধারণ করেন। আর ৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার শেয়ার ধারণ করেন এমন বিনিয়োগকারী রয়েছেন ২২৬ জন। ৫০ হাজার থেকে ২ লাখ শেয়ার রয়েছে এমন বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ৩৮ জন। আর ২ লাখ থেকে ৫ লাখ পর্যন্ত শেয়ার রয়েছে ৮ জন বিনিয়োগকারীর হাতে। ৫ লাখ থেকে ১ কোটি শেয়ার ধারণ করেন এমন বিনিয়োগকারী রয়েছেন ৬ জন। এক কোটির বেশি শেয়ার রয়েছে শুধু কোম্পানিটির উদ্যোক্তাদের হাতে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গ্রামে ছড়াচ্ছে ডেঙ্গু, বরিশাল বিভাগে ডেঙ্গুর হটস্পট বরগুনা
  • গাজা সিটির একমাত্র সচল হাসপাতালে ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
  • গাজায় এ পর্যন্ত ৩৫টি হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল
  • ইন্টারনেটের ব্যবহার কম উৎপাদনশীল খাতে
  • হঠাৎ বাড়ছে হাইডেলবার্গ সিমেন্টে শেয়ারদর, চার দিনে বাড়ল ৬৩ টাকা