অস্ত্রধারীরা যাত্রীদের দলে দলে নিয়ে গুলি করে হত্যা করছিল: প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা
Published: 14th, March 2025 GMT
পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে গত মঙ্গলবার ছিনতাই হওয়া ট্রেনের বেঁচে ফেরা যাত্রীরা সেদিনের ঘটনার মর্মস্পর্শী বিবরণ দিয়েছেন। এই যাত্রীদের বর্ণনায় উঠে এসেছে, কীভাবে চোখের সামনে তাঁদের সহযাত্রীদের হত্যা করা হচ্ছিল, আর গুলির বৃষ্টি চলার মধ্যে প্রাণ বাঁচাতে অন্যরা ছোটাছুটি করছিলেন, সেসব দৃশ্য।
বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠী বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মির (বিএলএ) কয়েক ডজন যোদ্ধা ওই দিন যাত্রীবাহী জাফর এক্সপ্রেসের নয়টি বগি নিশানা করেন। পার্বত্য এলাকা বোলান পাসের ঔপনিবেশিক আমলের পাথুরে সুড়ঙ্গ অতিক্রমকালে রকেটচালিত গ্রেনেড ও মুহুর্মুহু গুলি ছুড়ে ট্রেনে হামলা চালান এবং সব যাত্রীকে জিম্মি করেন তাঁরা।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বেলুচিস্তানের প্রাদেশিক রাজধানী কোয়েটা থেকে সকাল ৯টায় উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খাইবার পাখতুনখাওয়ার রাজধানী পেশোয়ারের উদ্দেশে ছেড়ে আসে ট্রেনটি। পথিমধ্যে বেলা ১টার দিকে কোয়েটা থেকে প্রায় ১৬০ কিলোমিটার দূরে সিবি শহরের কাছে এটি ছিনতাইয়ের শিকার হয়।
জাফর এক্সপ্রেসকে শেষ গন্তব্য পেশোয়ারে যেতে পাঞ্জাব হয়ে ৩০ ঘণ্টায় ১ হাজার ৬০০ কিলোমিটারের বেশি পথ পাড়ি দেওয়ার কথা ছিল। যাত্রাপথে স্টেশন ছিল প্রায় ৩০টি।
ছিনতাই হওয়ার সময় ট্রেনে ৪০০-এর মতো যাত্রী ছিলেন। এ ঘটনার দায় স্বীকার করে বিএলএ মঙ্গলবার বলেছিল, তারা পাকিস্তান সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার সময় দিচ্ছে। এই সময়ের মধ্যে বেলুচ রাজবন্দী, জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তি ও জাতীয় প্রতিরোধ কর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।গত বুধবার রাতে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী জানিয়েছে, ট্রেনটিতে তাদের অভিযান শেষ হয়েছে। ৩৪৬ যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে। ৩৩ হামলাকারী সবাই নিহত হওয়া ছাড়াও প্রাণ হারিয়েছেন ২৬ যাত্রী, ট্রেনচালক ও আধা সামরিক বাহিনীর ১ জন সদস্য।
ছিনতাই হওয়ার সময় ট্রেনে ৪০০–এর মতো যাত্রী ছিলেন। এ ঘটনার দায় স্বীকার করে বিএলএ মঙ্গলবার বলেছিল, তারা পাকিস্তান সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার সময় দিচ্ছে। এই সময়ের মধ্যে বেলুচ রাজবন্দী, জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তি ও জাতীয় প্রতিরোধ কর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।
‘তারা যাত্রীদের এক পাশে নিয়ে যায় ও গুলি করতে থাকে’নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে মুক্তি পাওয়া যাত্রীরা কয়েক ঘণ্টার জিম্মিদশায় যে ভয়ানক অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন, তার বর্ণনা দেন।
বেঁচে ফেরা ট্রেনের আরোহীদের একজন গুলাম সারওয়ার (৪৮)। তিনি ট্রেনের নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। আল–জাজিরাকে তিনি বলছিলেন, ‘আমি চোখের সামনে অনেককে মরতে দেখছিলাম। ভাবছিলাম, এরপর আমার পালা। কিন্তু বুধবার সকালে (ট্রেন ছিনতাই হওয়ার পরদিন) আমি অন্য যাত্রী ও সহকর্মীদের সঙ্গে পালাতে সক্ষম হই।’
ট্রেনে ছিলেন পাকিস্তান রেলওয়ে পুলিশের একজন সহকারী উপপরিদর্শকও। একসময় তিনিও একদল যাত্রী ও সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষীদের নিয়ে দুঃসাহসিকভাবে বেঁচে ফিরতে সমর্থ হন।
পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে আক্রান্ত ট্রেন থেকে উদ্ধার করা সাদাপোশাকের একজন নিরাপত্তাকর্মী স্বজনের সঙ্গে চলে যাচ্ছেন। ১২ মার্চ, মাচ রেলস্টেশন.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র সময়
এছাড়াও পড়ুন:
ব্যাচেলর পয়েন্টের ‘পলি চেয়ারম্যান’ খ্যাত গুলশান আরা মারা গেছেন
নাটক ও সিনেমার পরিচিত মুখ অভিনেত্রী গুলশান আরা আহমেদ মারা গেছেন। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) ভোর ৬টা ৪০ মিনিটে মৃত্যু হয়েছে তার।
তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছন পরিচালক এম রাহিম। তিনি জানান, শ্রদ্ধেয় শুলশান আরা আহমেদ আজ আজ সকালে ইন্তেকাল করেছেন। জংলি আপনার সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি। আপনি আজীবন আমাদের পরিবারেরই একজন হয়ে থাকবেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্ট দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পরিচালক কাজল আরেফিন অমি। পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। আমাদের গুলশান আরা আহমেদ আপা আপা আজ সকাল ৬:৪০-এ ইন্তেকাল করেছেন।’
অমি আরও লিখেছেন, ‘ব্যাচেলর পয়েন্টে উনি কাবিলার আম্মা, নোয়াখালীর চেয়ারম্যান চরিত্রে অভিনয় করেছেন। আপনাকে আমরা মিস করবো আপা। আল্লাহ পাক ওনাকে জীবনের সমস্ত গুনাহ মাফ করে, জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করুক। আমিন।’
জানা গেছে, হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক করেছিলেন অভিনেত্রী। দ্রুতই লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। তবে শেষ পর্যন্ত বাঁচানো যায়নি। গুলশান আরা আহমেদের ফেসবুক আইডি থেকে মাঝরাতে লেখা হয়, ‘আমার আম্মু গুলশান আরা আহমেদ আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে আছেন, হার্ট অ্যাটাক এবং হার্ট ফেইলিউরের জন্য। আপনার সবাই আমার মায়ের জন্য দোয়া করবেন।’
পরে শোনা যায় মৃত্যুর খবর, অর্থাৎ লাইফ সাপোর্ট থেকে আর ফেরানো যায়নি তাকে। ভোরে তাঁর মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করা হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অভিনেত্রীকে দাফন করা হবে। অভিনেত্রীর বোনের ছেলে অভিনেতা আর এ রাহুল জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রে মারা গেছেন অভিনেত্রী। তার লাশ দেশে আনার প্রক্রিয়া চলছে।
গুলশান আরা ২০০২ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনে একজন তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে টিভি নাটকে যাত্রা শুরু করেন। তবে নিজেকে একজন চলচ্চিত্র অভিনেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন। সেই ইচ্ছা থেকেই গুলশান আরা প্রথম অভিনয় করেন প্রয়াত এনায়েত করিম পরিচালিত ‘কদম আলী মাস্তান’ চলচ্চিত্রে। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। দর্শকদের উপহার দিয়েছেন ‘চরিত্র’, ‘ডনগিরি’, ‘ভালোবাসা আজকাল’, ‘পোড়ামন’ এর মতো জনপ্রিয় সব ছবি।