লালমনিরহাটের বুড়িমারী রেলওয়ে স্টেশন থেকে সরাসরি আন্তঃনগর বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেন চালু না হওয়ায় পাটগ্রামে রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়। ট্রেন বাস্তবায়ন আন্দোলন পরিষদের ব্যানারে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা থেকে দেড় ঘণ্টা এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল্লাহ্ প্রধান। বক্তব্য দেন পাটগ্রাম পৌর বিএনপির সভাপতি মোস্তফা সালাউজ্জামান ওপেল, পৌর জামায়াতের আমির সোহেল রানা, জেলা বিএনপির উপদেষ্টা আব্দুর রহিম, ট্রেন বাস্তবায়ন আন্দোলন পরিষদের সমন্বয়ক সাইফুল ইসলাম সবুজ প্রমুখ।
কর্মসূচি চলাকালে বগুড়ার সান্তাহার থেকে ছেড়ে আসা আন্তঃনগর করতোয়া এক্সপ্রেস ট্রেনটি বাউরা রেলস্টেশনে এক ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। পরে লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগের সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা (এটিও) ফারুকুল ইসলাম মানিক এসে ১৫ এপ্রিল থেকে বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেনটি চালুর আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেন আন্দোলনকারীরা।
জানা গেছে, লালমনিরহাট-বুড়িমারী রেল রুটে কয়েক দফা রেলপথ অবরোধ ও ট্রেন আটক করে আন্তঃনগর বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেনটি বুড়িমারী রেলস্টেশন থেকে সরাসরি চালু করার দাবি জানান স্থানীয়রা। এর পর রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ প্রথমে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ও পরে ১০ মার্চ বুড়িমারী থেকে ট্রেন চালু করার কথা নিশ্চিত করে। সে অনুযায়ী বুড়িমারী রেলস্টেশনের কাছে অবকাঠামো তৈরি করা হয়। রহস্যজনক কারণে ট্রেনটি চালু না করায় অবরোধ করে স্থানীয়রা।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
নওগাঁর প্রত্যন্ত গ্রামে মোগল স্থাপত্যরীতির এক মসজিদ
নওগাঁর আত্রাই উপজেলার ইসলামগাঁথী তিন গম্বুজ মসজিদ। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ইসলামগাঁথী গ্রামে আত্রাই নদের তীরে অবস্থিত মসজিদটি স্থাপত্যশৈলীর অনন্য নিদর্শন। মসজিদের পাশেই আছে কারুকার্যখচিত একটি মঠ। প্রত্যন্ত গ্রামে প্রাচীন এই স্থাপনা দুটি অনেকটা দৃষ্টির আড়ালে পড়ে আছে। সংস্কারের অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে স্থাপনা দুটি।
পুরোনো এই মসজিদের স্থাপত্যরীতিতে মোগল ভাবধারার ছাপ সুস্পষ্ট। মসজিদটি ঠিক কত সালে বা কে নির্মাণ করেছিলেন, এ সম্পর্কে সঠিক কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। নওগাঁ জেলা তথ্য বাতায়ন ও আত্রাই উপজেলা তথ্য বাতায়নেও এই মসজিদ সম্পর্কে বিস্তারিত কোনো তথ্য নেই।
বাংলাদেশ জাতীয় জ্ঞানকোষ বাংলাপিডিয়ার তথ্যমতে, মসজিদ সপ্তদশ শতাব্দীতে মোগল আমলে নির্মিত। সুবেদার ইসলাম খানের আমলে (১৬০৮ থেকে ১৬১৩ সাল) মসজিদটি স্থাপন করা হয় বলে ধারণা পাওয়া যায়। মসজিদের পাশে অবস্থিত মঠটিও একই সময়ে নির্মাণ করা হয়। লোকশ্রুতি আছে, এই মসজিদ ও মঠটি এক রাতেই জিনেরা নির্মাণ করেন। এ জন্য মসজিদটি স্থানীয়দের কাছে জিনের মসজিদ নামে পরিচিত।
মসজিদটি তিন গম্বুজবিশিষ্ট। এর স্থাপত্যশৈলী মধ্যযুগীয় অন্য সব স্থাপনার মতোই। মসজিদের মূল ভবনটি উত্তর-দক্ষিণ লম্বায় ১৭ হাত এবং পূর্ব-পশ্চিমে এর দৈর্ঘ্য ৪ হাত। ইট-সুরকি দিয়ে তৈরি মসজিদের দেয়াল প্রায় এক ফুট পুরু। মসজিদের সম্মুখভাগে আছে একটি দরজা। ছাদের ওপর একই সারিতে আছে তিনটি গম্বুজ। তিনটি গম্বুজের আকৃতি একই সমান। দুই কাতারে মসজিদটিতে একসঙ্গে ১৬ জন নামাজ আদায় করতে পারেন। পরে ১৯৮০ সালের দিকে মসজিদের পূর্ব দিকে নতুন আরেকটি মসজিদ ভবন তৈরি করেন স্থানীয়রা। নতুন এই মসজিদে শতাধিক মানুষ নামাজ আদায় করতে পারেন।
ইসলামগাঁথী গ্রামের বাসিন্দা সত্তরোর্ধ্ব আবদুস সাত্তার বলেন, ‘আমার তো দূরের কথা, আমাদের বাপ-দাদারাও বলতে পারেননি এই মসজিদ ও মঠ কবেকার।’
১০ বছরের বেশি সময় মসজিদটিতে ইমামতি করেন আকরাম হোসেন। তিনি বলেন, ঐতিহ্যবাহী এই মসজিদ দেখার জন্য দূরদূরান্ত থেকে লোকজন আসেন। এখানে নামাজ আদায় করেন।
ওই গ্রামের বাসিন্দা ও আত্রাই কলকাকলী মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মাজেদুর রহমান বলেন, ‘শুনতেছি মসজিদ সম্প্রসারণের জন্য নাকি মসজিদ ও মঠ ভেঙে ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ মসজিদ ও মঠ ভেঙে না ফেলে বরং এই স্থাপনা দুটি সংরক্ষণে প্রশাসনের ভূমিকা নেওয়া উচিত। যেহেতু ইসলামে মসজিদ স্থানান্তরের বিধান আছে, তাই প্রয়োজনে অন্যত্র নতুন করে মসজিদ নির্মাণ করা যেতে পারে।’