রাজধানীতে ১৭ দিনের সাঁড়াশি অভিযানে গ্রেপ্তার সাড়ে ৩ হাজার
Published: 13th, March 2025 GMT
রাজধানী ঢাকায় গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে গতকাল বুধবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত সন্দেহে ২৩৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ নিয়ে ২৩ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাত থেকে গতকাল মধ্যরাত পর্যন্ত ১৭ দিনের অভিযানে ৩ হাজার ৬৫৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সর্বশেষ গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ১৩ জন পেশাদার ছিনতাইকারী, ৭ জন ডাকাত, ৩ জন চাঁদাবাজ, ১২ জন চোর, ২৩ জন মাদক কারবারি এবং ৩৭ জন পরোয়ানাভুক্ত অন্যান্য অপরাধের আসামি রয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশি রিভলবার, ৩৬টি গুলি, ৪টি ককটেল, ২টি সামুরাই, ১টি সুইচগিয়ার, ১টি চাকু, ১টি ছোরা, ২টি কাঁচি, ৬৫টি মুঠোফোন, ১টি ট্যাব, ১১০ ফুট টিঅ্যান্ডটির তার, ২টি জাল দলিল, ১টি রিকশা, গাড়ির ২টি লুকিং গ্লাস, ২টি ইঞ্জিনকভার, ২টি ডোর প্যাড ও ২ হাজার ২০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
এ ছাড়া এই অভিযানের সময় উদ্ধার করা মাদকের মধ্যে রয়েছে ৬ হাজার ৮৪৭টি ইয়াবা বড়ি, ২৬ লিটার দেশি মদ, ৪৮০ গ্রাম গাঁজা ও ৩ গ্রাম হেরোইন। এসব ঘটনায় ডিএমপির বিভিন্ন থানায় ৮২টি মামলা করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডিএমপির ক্রাইম কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীর ৫০টি থানা এলাকায় জননিরাপত্তা বিধানে দুই পালায় ডিএমপির ৬৬৭টি টহল দল দায়িত্ব পালন করেছে। এর মধ্যে রাতে ৩৪০টি ও দিনে ৩২৭টি দল দায়িত্ব পালন করেছে। টহল দলের মধ্যে রয়েছে ৪৭৯টি মোবাইল প্যাট্রল টিম, ৭৩টি ফুট প্যাট্রল টিম ও ১১৫টি মোটরসাইকেল প্যাট্রল টিম। এ ছাড়া মহানগর এলাকার নিরাপত্তা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ও কৌশলগত স্থানে ডিএমপির ৭১টি তল্লাশিচৌকি পরিচালনা করা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ড এমপ র
এছাড়াও পড়ুন:
ধর্ষণের বিচারসহ পাঁচ দাবিতে ছয়দিন ধরে শাহবাগে অবস্থান ঢাবি শিক্ষার্থীর
ধর্ষণের বিচার, নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে পাঁচ দফা দাবিতে ছয়দিন ধরে রাজধানীর শাহবাগে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী শেখ তাসনীম আফরোজ ইমি। ছয়দিন ধরে অবস্থানে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তার সঙ্গে বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষ সংহতি জানিয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে তার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি কেউ।
সরকারের কেউ দাবিগুলো মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে তিনি কর্মসূচি প্রত্যাহার করবেন বলে জানান। তাসনীম আফরোজ ইমি বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি শামসুন নাহার হল ছাত্র সংসদের নির্বাচিত ভিপি।
গত ৮ মার্চ জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘দেশব্যাপী নারী, ধর্ষণ, নিপীড়ন এবং হেনস্তার প্রতিবাদে লাগাতার অবস্থান’ শুরু করেন ইমি। তিনি বলেন, কোনো সংগঠন বা ব্যক্তি পরিচয় নয়, একেবারে সাধারণ নাগরিকের ব্যানার থেকে আমি অবস্থান করছি। তবে দুঃখের বিষয় আমি এতদিন অবস্থান করছি কিন্তু কেউ বিষয়টি গুরুত্ব দেয়নি। এটা একটা বার্তা দেওয়া হলো-সাধারণ মানুষের কথা কেউ শোনে না।
তিনি বলেন, আমার যদি কোনো ক্ষতি হয়, এটার পুরো দায় সরকারকে নিতে হবে। আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছি, আমার দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস-নিশ্চয়তা যদি আসে তাহলে আমি ঘরে ফিরতে চাই।
তার পাঁচ দফা দাবি হলো-
১. ধর্ষণ ও বলাৎকারের বিচার কার্যক্রম নিম্ম আদালত থেকে উচ্চ আদালত পর্যন্ত সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া ১৮০ দিনের মধ্যে নিষ্পন্ন করতে হবে, এবং দ্রুত রায় কার্যকর করতে হবে।
২. আগামী ৭২ ঘণ্টার ভেতর প্রতিটি থানায় একজন নারী পুলিশ কর্মকর্তার নারী ও শিশু নির্যাতন একটি ইমারজেন্সি ক্রাইসিস রেস্পন্স টিম গঠন করতে হবে। একই সাথে থানার অভ্যন্তরে ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যেখানে ভুক্তভোগী নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা, চিকিৎসা সহায়তা আইন সহায়তা ও মানসিক এখন সেবা দেওয়া হবে।
৩. নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ধারা-২৪ সংশোধন পূর্বক ধর্ষণের শিকার ভিকটিমের পরিচয় প্রকাশের ক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যমের উপর যে বিধিনিষেধ আরোপ করা আছে সেই ধারায় সংবাদমাধ্যমের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ভুক্তভোগীর পরিচয় প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে।
৪. ধর্ষণের শিকার ভিক্টিমের মানসিক, শারীরিক এবং সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ সরকারকে নিতে হবে।
৫. নারী ও শিশুর উপর সংঘটিত সকল নির্যাতনের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরীর জন্য সরকারকে উদ্যোগী ভূমিকা পালন করতে হবে। এই উদ্যোগ গুলোর মাধ্যমে সমাজের প্রতিটি শ্রেণী স্তরের নারী ও শিশুদেরকে সচেতন করা যাবে। একই সাথে স্কুল-কলেজের পাঠ প্রস্তুকে নৈতিক শিক্ষা, লিঙ্গ সমতা পাঠদানের বিষয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।