শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে প্রথম ব্যাংক হিসেবে ২০২৪ সালের শেয়ারধারীদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে প্রাইম ব্যাংক। ব্যাংকটি গত বছরের শেয়ারধারীদের ২০ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় লভ্যাংশ প্রদানের এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ব্যাংকের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য সংবাদমাধ্যমকে জানানো হয়।

প্রাইম ব্যাংক গত বছরের জন্য যে লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে, তার মধ্যে সাড়ে ১৭ শতাংশ নগদ ও আড়াই শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ। ২০২৩ সালে ব্যাংকটি শেয়ারধারীদের সাড়ে ১৭ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। সেই হিসাবে আগের বছরের চেয়ে গত বছর লভ্যাংশের পরিমাণ আড়াই শতাংশ বেড়েছে।

প্রাইম ব্যাংক জানিয়েছে, গত বছর ব্যাংকটির প্রকৃত মুনাফা ২০২৩ সালের তুলনায় ২৬১ কোটি টাকা বা ৫৪ শতাংশ বেড়েছে। গত বছর শেষে ব্যাংকটি প্রকৃত মুনাফা করেছে ৭৪৫ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে যার পরিমাণ ছিল ৪৮৪ কোটি টাকা। মুনাফা বৃদ্ধি পাওয়ায় শেয়ারপ্রতি আয়ও (ইপিএস) বেড়েছে প্রাইম ব্যাংকের। গত বছর শেষে ব্যাংকটি ইপিএস দাঁড়িয়েছে ৬ টাকা ৫৮ পয়সায়। ২০২৩ সালে ব্যাংকটির ইপিএস ছিল ৪ টাকা ২৭ পয়সা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত বছর প্রাইম ব্যাংকের মুনাফা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ ছিল সরকারি ট্রেজারি বিল-বন্ডে বিনিয়োগের বিপরীতে পাওয়া সুদ আয়। গত বছরের প্রথম ৯ মাসের হিসাবে ব্যাংকটির বিনিয়োগ আয় ছিল ৬৯৩ কোটি টাকা। গত জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর—এই ৯ মাসে সরকারি ট্রেজারি বিল-বন্ডে বিনিয়োগে আয়ের দিক থেকে শীর্ষ ১০ ব্যাংকের একটি ছিল প্রাইম ব্যাংক। বছর শেষে বিনিয়োগের এই মুনাফার কারণে প্রাইম ব্যাংকের প্রকৃত মুনাফার বড় প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

প্রাইম ব্যাংক আরও জানিয়েছে, গত বছর শেষে ব্যাংকটির মোট সম্পদ প্রায় ৫৫ হাজার কোটি টাকায়। ঘোষিত লভ্যাংশের জন্য ব্যাংকটি রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করেছে ১০ এপ্রিল। ওই দিন যাঁদের হাতে ব্যাংকটির শেয়ার থাকবে, তাঁরাই ঘোষিত লভ্যাংশ পাওয়ার যোগ্য বিবেচিত হবেন। আর এই লভ্যাংশ অনুমোদনের জন্য বার্ষিক সাধারণ সভা বা এজিএমের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ মে। ওই সভায় অনুমোদনের পর ঘোষিত লভ্যাংশ বিতরণ করা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ২০২৩ স ল বছর শ ষ গত বছর র জন য বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

সার্কভুক্ত দেশের বাণিজ্য, কে বেশি লাভবান, বাংলাদেশ নাকি ভারত

দক্ষিণ এশিয়ার সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যকার আন্তবাণিজ্য পৃথিবীর আঞ্চলিক জোটগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম। নানা রাজনৈতিক জটিলতার কারণে এ অঞ্চলের দেশগুলোর পারস্পরিক বাণিজ্য প্রত্যাশিত হারে বাড়ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ এক অর্থবছরে যত পণ্য রপ্তানি করে তার মাত্র ৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ সার্কভুক্ত দেশগুলোতে।

সার্কভুক্ত দেশে যেমন বাংলাদেশের রপ্তানি কম, তেমনি এই দেশগুলো থেকে আমদানিও কম। বাংলাদেশের মোট আমদানি পণ্যের ১৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ করে সার্কভুক্ত দেশগুলো থেকে আসে। আবার এ আমদানিও ২০২১-২২ অর্থবছর থেকে ধারাবাহিকভাবে কমছে।

সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যকার আমদানি–রপ্তানি বাণিজ্য নিয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। সর্বশেষ ২০২৩–২৪ অর্থবছরের তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। প্রতিবেদনে সার্কভুক্ত দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি, প্রবাসী আয় ও বিদেশি বিনিয়োগের চিত্রও তুলে ধরা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩–২৪ অর্থবছরে সার্কভুক্ত দেশগুলোতে বাংলাদেশ ১৭৪ কোটি ৩৮ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে। একই সময়ে এসব দেশ থেকে আমদানি করেছে ৯৭৬ কোটি ২৫ লাখ ডলারের পণ্য। সামগ্রিকভাবে সার্কভুক্ত দেশগুলো তাদের মোট বাণিজ্যের মাত্র ৫ শতাংশ নিজেদের মধ্যে করে থাকে। এ হার পৃথিবীর আঞ্চলিক জোটগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম। সে জন্য বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়া পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে কম সংযুক্ত অঞ্চল।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি ব্যবসা ভারতের সঙ্গে। সার্কভুক্ত দেশগুলোয় বাংলাদেশ যে পরিমাণ রপ্তানি করে তার প্রায় ৯০ শতাংশ ভারতে। একইভাবে এসব দেশ থেকে বাংলাদেশ যে পরিমাণ পণ্য আমদানি করে তার ৯২ দশমিক ১৯ শতাংশ আসে ভারত থেকে। সর্বশেষ গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ ভারতে রপ্তানি করেছে প্রায় ১৫৬ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য। এরপর পাকিস্তানে রপ্তানি করেছে ৬ কোটি ২১ লাখ ডলারের পণ্য। শ্রীলঙ্কায় রপ্তানি করে প্রায় সাড়ে ৫ কোটি ডলারের পণ্য। আর নেপালে ৪ কোটি ৩৩ লাখ ডলার; আফগানিস্তানে ১ কোটি ৪২ লাখ ডলার; ভুটানে প্রায় ৯১ লাখ ডলার ও মালদ্বীপে প্রায় ৪১ ডলারের পণ্য রপ্তানি করে।

বাংলাদেশ সার্কভুক্ত দেশগুলোতে যেসব পণ্য রপ্তানি করে তার মধ্যে ভারতে বস্ত্র, প্রাণিজ ও উদ্ভিজ্জ তেল, কাঁচা চামড়া, প্লাস্টিক ও রাবার, জুতা, খনিজ, যন্ত্রাংশ; পাকিস্তানে বস্ত্র, রাসায়নিক, প্লাস্টিক, রাবার, মৌল ধাতু, জুতা; শ্রীলঙ্কায় রাসায়নিক ও শিল্পপণ্য, মণ্ড, প্লাস্টিক ও রাবার, জুতা, যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ; আফগানিস্তানে রাসায়নিক, বস্ত্র, প্রস্তুতকৃত খাদ্য, স্পিরিট, ভিনেগার ইত্যাদি; ভুটানে প্রস্তুতকৃত খাদ্য, ভিনেগার, তামাক, খনিজ, প্লাস্টিক; নেপালে প্রস্তুতকৃত খাদ্য, পানীয়, বস্ত্র, রাসায়নিক ও সহায়ক শিল্পপণ্য, প্লাস্টিক, রাবার, খনিজ ও অন্যান্য পণ্য এবং মালদ্বীপে প্রস্তুতকৃত খাদ্য, পানীয়, স্পিরিট, সবজি, বস্ত্র ও সহায়ক পণ্য রপ্তানি হয়।

আমদানির ক্ষেত্রে দেখা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ ভারত থেকে আমদানি করেছে ৯০০ কোটি ডলারের পণ্য। এ ছাড়া ভুটান থেকে প্রায় ৪ কোটি ডলার; আফগানিস্তান থেকে ১ কোটি ১৯ লাখ ডলার; পাকিস্তান থেকে প্রায় ৬৩ কোটি ডলার; নেপাল থেকে ৪২ লাখ ৩০ হাজার ডলার; মালদ্বীপ থেকে প্রায় ৩৫ লাখ ডলার ও শ্রীলঙ্কা থেকে ৭ কোটি ৫৯ লাখ ডলারের পণ্য আমদানি করেছে।

প্রবাসী আয় ও এফডিআই

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোয় বাংলাদেশি শ্রমিকেরা তেমন একটা যান না। ফলে প্রতিবছর বাংলাদেশে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় আসে, তার ১ শতাংশেরও কম আসে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো থেকে। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশে মোট ২ হাজার ৩৯১ কোটি ডলার প্রবাসী আয় এসেছে। এর মধ্যে ৮ কোটি ২৯ লাখ ডলার এসেছে সার্কভুক্ত দেশগুলো থেকে। সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় আসে মালদ্বীপ থেকে। সার্কভুক্ত দেশগুলো থেকে যে পরিমাণ প্রবাসী আয় আসে তার প্রায় ৬৯ শতাংশ আসে এই দ্বীপ দেশটি থেকে। ভারত থেকে আসে প্রায় ২৩ শতাংশ।

একইভাবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশে যে পরিমাণ এফডিআই বা প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে, তার মাত্র ১৬ দশমিক ২ শতাংশ এসেছে সার্কভুক্ত দেশগুলো থেকে। উল্লেখিত অর্থবছরে বাংলাদেশে মোট প্রায় ১৪৭ কোটি ডলার বিদেশি বিনিয়োগ এসেছিল। এর মধ্যে সার্কভুক্ত দেশগুলো থেকে এসেছে প্রায় ২৪ কোটি ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় মুদ্রায় বাণিজ্য করা গেলে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য বাড়বে। তবে সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ভৌগোলিক নৈকট্য থাকলেও তাদের বাণিজ্যনীতি ও অন্যান্য ক্ষেত্রে এত ভিন্নতা আছে যে সেগুলো পরস্পরের সঙ্গে স্থানীয় মুদ্রায় বাণিজ্য করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারত নেই বলে লর্ডসের লোকসান ৬৩ কোটি টাকা
  • রোহিতের ভারত কি ওয়ানডেতে সর্বকালের সেরা দল—প্রশ্নের উত্তরে যা বললেন স্টার্ক
  • মাহমুদউল্লাহ, বাংলাদেশের ‘বিশ্বকাপের সুপারস্টার’
  • সার্কভুক্ত দেশের বাণিজ্য, কে বেশি লাভবান, বাংলাদেশ নাকি ভারত
  • ভর্তির ৭ মাসেও পরিচয়পত্র পাননি চবি শিক্ষার্থীরা
  • বিমা খাতে দুর্নীতি নির্মূল করবোই: বিআইএ সভাপতি
  • বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত ২০ শহরের মধ্যে ১৩টিই ভারতে
  • বায়ুদূষণে ২০২৪ সালে বিশ্বে দ্বিতীয় বাংলাদেশ, নগর হিসেবে তৃতীয় ঢাকা
  • যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বড় চমক, প্রবৃদ্ধি ৪৬%