ড্যাপে প্রস্তাবিত সংরক্ষিত জায়গা অবৈধ দখলমুক্ত করতে যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানিয়েছে ডিএনসিসি ও রাজউক। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দুপুরে গুলশান নগর ভবনে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের সভাপতিত্বে ‘বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা ২০২২-২০৩৫’-এ প্রস্তাবিত পার্ক, খেলার মাঠ, জলকেন্দ্রিক পার্ক, ইকোপার্কসমূহের সংরক্ষণ ও দখলমুক্ত করার লক্ষ্যে আয়োজিত এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই সভায় উপস্থিত আরও ছিলেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো.

রিয়াজুল ইসলাম।

ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেছেন, ড্যাপের নির্ধারিত মাঠ, পার্ক ও জলাশয়ের মৌজা ও দাগ নম্বর উল্লেখ করে আমরা জেলা প্রশাসন, ভূমি মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে এসব জায়গার খাজনা গ্রহণ ও জমি হস্তান্তর বন্ধ রাখতে আহ্বান জানাব। এসব জায়গা ও জলাশয় যেকোনো সরকারি সংস্থা বা ব্যক্তি মালিকানার হলেও এগুলো সংরক্ষণ করা হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব জায়গায় সাইনবোর্ড লাগানো হবে, যেন কোনো ভবন বা স্থাপনা নির্মাণ করা না হয়। অবৈধ দখলমুক্ত করতে ঈদের পরে রাজউক ও ডিএনসিসি যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করবে।

তিনি আরো বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় রাজউক কর্তৃক প্রণীত ‘বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা ২০২২-২০৩৫’-এ প্রস্তাবিত পার্ক, খেলার মাঠ, জলকেন্দ্রিক পার্ক, ইকোপার্কসমূহের থানা, মৌজা ও দাগ নম্বর অনুযায়ী সীমানা চিহ্নিত করে সেগুলো সংরক্ষণের জন্য রাজউকসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে যৌথভাবে পদক্ষেপ নেব। জেলা প্রশাসন, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ, রাজউক ও অন্যান্য সরকারি সংস্থার মালিকানাধীন জমি, খাসজমি ও অন্যান্য খালি জায়গা, মাঠ, পার্ক, জলাশয় এগুলো রক্ষণে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে দ্রুত বাউন্ডারির ব্যবস্থা করা হবে।

সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জামান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগে. জেনা. মো. মঈন উদ্দিন, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমোডর এ বি এম সামসুল আলম, রাজউকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. আশরাফুল ইসলাম, ডিএনসিসির সচিব মামুন-উল-হাসান, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামান, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ এস এম শফিকুর রহমান এবং অন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

ঢাকা/আসাদ/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর মকর ত ড এনস স র জউক

এছাড়াও পড়ুন:

অভ্যুত্থানের পর ঢাকার সঙ্গে বৈদেশিক সম্পর্কে ভারতের চেয়ে এগিয়ে চীন

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর ঢাকার সঙ্গে বৈদেশিক সম্পর্কে বেইজিং বেশ এগিয়ে। অন্যদিকে নয়াদিল্লির সঙ্গে সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার পর অলটারনেটিভসের ‘বাংলাদেশে চীনের জাতীয় ভাবমূর্তি’ শীর্ষক এক জরিপে এমন তথ্যই উঠে এসেছে।

ওই জনমত জরিপে দেখা গেছে, উত্তরদাতার ৬১ শতাংশ মত দিয়েছেন চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ভালো হচ্ছে। ঢাকা বেইজিংয়ের সম্পর্ক বাংলাদেশের ৭৬ শতাংশ উত্তরদাতা ইতিবাচক মনে করেন। ঢাকা নয়াদিল্লির সম্পর্কের বিষয়ে ইতিবাচক ধারণা পোষণ করেন মাত্র ১১ শতাংশ উত্তরদাতা। 

মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে ওই জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়। ঢাকা-বেইজিং সম্পর্কের পাঁচ দশক পূর্তি এবং জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে গত অক্টোবর ও নভেম্বরে দেশের ৩২ জেলায় অনলাইন-অফলাইনে জরিপটি চালানো হয়। তাদের মধ্যে দুই হাজার ৬৮১ জন অফলাইনে এবং দুই হাজার ৬৭৪ জন অনলাইনে জরিপে অংশ নেন। বাংলাদেশে চীনের ভাবমূর্তি নিয়ে এ নিয়ে তৃতীয়বার এ ধরনের জরিপ চালানো হলো।

জরিপের ফল উপস্থাপন করেন সেন্টার পর অলটারনেটিভসের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমির সাবেক রেক্টর মাশফি বিনতে শামস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর এবং রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক সৈয়দ শাহনেওয়াজ মহসিন। 

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক কোন পথে এগোচ্ছে জানতে চাইলে জরিপে অংশ নেওয়া ৬১ শতাংশ উত্তরদাতা ইতিবাচক মত দেন। ভালো অথবা মন্দ কোনোটাই নয় এমন মত দেন ২৬ শতাংশ উত্তরদাতা। সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশ চীন সম্পর্কের বিষয়ে ভালো মত দিয়েছেন ৪৪ শতাংশ উত্তরদাতা। দুই দেশের ভালো সম্পর্কের পক্ষে মত দিয়েছেন ৩৮ শতাংশ। দুই দেশের সহযোগিতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ খাত হিসেবে যথাক্রমে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, অর্থনীতি এবং রাজনীতির পক্ষে মত দিয়েছেন যথাক্রমে প্রায় ৭৯, ৭৪ ও ৪২ শতাংশ উত্তরদাতা। 

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও জোটের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ককে কীভাবে দেখে, তা জানতে চাওয়া হয় উত্তরদাতাদের কাছে। এ বিষয়ে যথাক্রমে চীনের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৬ শতাংশ উত্তরদাতা ইতিবাচক মত দিয়েছেন। জরিপের পাঁচটি দেশের মধ্যে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে সবচেয়ে নেতিবাচক মত দিয়েছেন উত্তরদাতারা, যা ৫৯ শতাংশ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইয়াও ওয়েন বলেন, জরিপে অংশগ্রহণকারীর বেশির ভাগ উত্তরদাতা চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে সমর্থন করেছেন, যা সম্পর্কের বিষয়ে ঐকমত্যের ব্যাপকতার প্রতিফলন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ-চীন ব্যাপক কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বের উন্নয়নকে আরও এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে তাদের আস্থার বিষয়ে ব্যাপক আশাবাদ দেখিয়েছেন। 

ইয়াও ওয়েন বলেন, এটি আমাদের জন্য আনন্দের যে, ৭৫ শতাংশ উত্তরদাতা উচ্চশিক্ষার জন্য চীনে ব্যক্তিগতভাবে যেতে বা তাদের সন্তানদের পাঠাতে ইচ্ছুক। এই হার ২০২২ সালের চেয়ে ৫ শতাংশ বেশি। প্রায় ২৯ শতাংশ বাংলাদেশি চিকিৎসার জন্য চীনে যাওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছেন, যা ২০২২ সালের চেয়ে ১৩ শতাংশ বেশি।

চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, জরিপের ফল থেকে এই আভাস মিলেছে, বাংলাদেশিরা চীনে ভ্রমণ, পড়াশোনা ও ব্যবসার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।

অনুষ্ঠানে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানের বিষয়ে জানতে চাইলে ইয়াও ওয়েন বলেন, মিয়ানমারে রাজনৈতিক সংকট মেটানোর লক্ষ্যে অস্ত্রবিরতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। রোহিঙ্গারা যাতে নিজেদের আদিনিবাসে ফিরতে পারেন সেই জন্যই আমাদের এই প্রয়াস।

চীনের রাষ্ট্রদূত আশা প্রকাশ করেন, প্রধান উপদেষ্টার মাধ্যমে বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল ঐকমত্যের ভিত্তিতে নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করবে। সেরা বন্ধু হিসেবে পাশে থেকে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে চীন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শতাধিক পরীক্ষার্থী শাস্তি পাচ্ছেন
  • ফিলিপাইনে মাদকবিরোধী যুদ্ধের সব দায় নিলেন দুতার্তে
  • কাজ না করেই ১১ কর্মকর্তা কর্মচারী বেতন তোলেন
  • কাজ ছাড়াই বেতন তোলেন বেরোবির ১১ কর্মকর্তা-কর্মচারী: দুদক
  • অভ্যুত্থানের পর ঢাকার সঙ্গে বৈদেশিক সম্পর্কে ভারতের চেয়ে এগিয়ে চীন
  • ডাক বিভাগের সম্পদ দখলমুক্ত করার চেষ্টা করা হবে: ফয়েজ আহমদ