ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে একসঙ্গে পথচলা দলগুলো একে অপরের দিকে কাদা ছুড়লে বিজয় নিঃশেষ হয়ে যাবে বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন দল একে অপরের দিকে কথা বলছে, কাদা ছুড়ছে। এই জিনিসটা ঠিক না। তাহলে পাঁচ তারিখে আমাদের যে আন্দোলন, আমাদের যে বিজয়, তা নিঃশেষ হয়ে যাবে।’

আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মালিবাগের একটি হোটেলে রাজনৈতিক নেতা ও পেশাজীবীদের সম্মানে গণ অধিকার পরিষদ আয়োজিত ইফতার অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন মির্জা আব্বাস। অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, বিগত বছরগুলোয় ইফতার অনুষ্ঠানে আসতে হতো শঙ্কা নিয়ে, এখন আর সেই শঙ্কা নেই। এখন নিশ্চিন্তে আরামের সঙ্গে সবাই আসতে পারছেন। এমন পরিস্থিতি ৫ তারিখের (গত বছরের ৫ আগস্ট) আগে ছিল না।

ইফতার অনুষ্ঠানে যে টেবিলে মির্জা আব্বাস বসেছিলেন, সেই টেবিলে আটটি রাজনৈতিক দলের নেতারা বসেন। বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, সবাই একসঙ্গে ইফতার করতে পারছেন। একইভাবে বাকি সময়টাও বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য এভাবে থাকতে পারলে অসুবিধাটা কোথায়? এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আজকে ইফতার পার্টিতে যেভাবে বসেছি, আগামীতে সকল কার্যক্রমে নির্বাচন থেকে শুরু করে সরকার গঠন পর্যন্ত সব একসঙ্গে করতে চাই।’

তবে কৃত্রিমভাবে কিছু অসুবিধার সৃষ্টি করা হচ্ছে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, হিংসা–বিদ্বেষ–ঈর্ষা নিয়ে, ঈর্ষাপরায়ণ হয়ে কিংবা পরশ্রীকাতর হয়ে কখনোই দেশের ভালো করা যাবে না। সবাইকে নিজের বিবেকের কাছে দায়ী থাকতে হবে। রক্তের বিনিময়ে যে বিজয় অর্জিত হয়েছে, সেটা যেন কারও ষড়যন্ত্রের কারণে বৃথা না যায়।

ইফতার অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে পরিষ্কার রোডম্যাপ (পথনকশা) ঘোষণা করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের আকাঙ্খা ছিল স্বৈরাচারমুক্ত শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণ করা। জন–আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে এমন রাষ্ট্র বিনির্মাণ করা যেখানে কোনো বৈষম্য থাকবে না, সাম্যের ভিত্তিতে একটি গণতান্ত্রিক ও ন্যায়বিচারের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হবে।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বর্তমান প্রজন্ম বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের জন্য ব্যাপক সংস্কার চায় এবং সেই সংস্কারের সঙ্গে বিএনপিও একমত। তবে তিনি বলেন, সংস্কার, প্রস্তাব, আলাপ–আলাচনা, প্রস্তাব গ্রহণ করা, এগুলো চলতেই থাকবে। কিন্তু জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য একটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সে জন্য বিএনপি নির্বাচনের রোডম্যাপ চায়।

এই ইফতার অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্য দেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিম, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণফোরাম নেতা সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

আইনসভা ও গণপরিষদ নির্বাচন একসঙ্গে চায় এনসিপি

সংস্কার করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নির্বাচন সম্ভব বলে মন্তব্য করছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তার দল এনসিপি একইসঙ্গে আইনসভা ও গণপরিষদ নির্বাচন চায় বলেও জানান তিনি।

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) রাজধানীর একটি হোটেলে ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনীতিবিদ, পেশাজীবী, অ্যাক্টিভিস্ট, আলেম ও বিশিষ্ট নাগরিকদের সম্মানে এনসিপির ইফতার অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘‘নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি জরুরি। বাংলাদেশবিরোধী শক্তিরা এখনো ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।’’

বিচারের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের ফয়সালা করা দরকার বলে মনে করেন এনসিপি আহ্বায়ক।

অনুষ্ঠানে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেছেন, ‘‘জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশের নাগরিকদের মধ্যে রাজনৈতিক বিপ্লব ঘটেছে। নতুন রাজনীতিতে চাঁদাবাজদের স্থান হবে না, হানাহানি-টেন্ডারবাজি চলবে না।’’

তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদবিরোধী যত শক্তি আছে, সবাই এক হয়ে দেশের জন্য কাজ করবে। আমাদের রাজনৈতিক মিশন-লক্ষ্য আলাদা হতে পারে। তবে, আমরা এটা বলতে পারি যে আমরা আজ এখানে যারা সবাই ফ্যাসিবাদবিরোধী পক্ষ।’’

আখতার হোসেন বলেন, ‘‘বাংলাদেশে যারা জুলাই-আগস্টে গণহত্যা চালিয়েছে, সেই আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সবাইকে এক হওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।’’

ঢাকা/হাসান/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আইনকানুন মেনে সহৃদয়তা ও আন্তরিকতা দিয়ে প্রতিষ্ঠান গড়েছেন মঞ্জুর এলাহী
  • ঈদের কেনাকাটায় ব্যাংকের কার্ড ও ডিজিটাল লেনদেনে সব অফার দেখে নিন একসঙ্গে
  • চারটি প্রশ্নের উত্তর ‘হ্যাঁ’ হলে ধরে নেবেন আপনাদের দাম্পত্য সম্পর্ক মজবুত
  • আইনসভা ও গণপরিষদ নির্বাচন একসঙ্গে চায় এনসিপি
  • প্রথম একসঙ্গে ‘ইত্যাদি’র মঞ্চে হাবিব-প্রীতম