ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনায় শিশু আছিয়ার মৃত্যুর পর অভিযুক্তদের বাড়িতে আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। 

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) রাত পৌনে ৮টার দিকে বাড়িটিতে আগুন দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। আছিয়ার মৃত্যু সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী ক্ষোভে ফুঁসে উঠে। আছিয়ার বাড়িতে ছুটে যান সর্বস্তরের জনগণ।

এছাড়া শিশু আছিয়ার মৃত্যুর খবর শোনার পরপরই মাগুরায় শুরু হয় ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ। ছাত্র-জনতা শহরে একাধিক বিক্ষোভ মিছিল শেষে শহরের ভায়না এলাকায় সড়ক অবরোধ করে রাখে।

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) এশার নামাজের পর জানাজা শেষে ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনায় নিহত শিশু আছিয়া খাতুনের দাফন সম্পন্ন হয়। আছিয়ার আদি নিবাস শ্রীপুরের সোনাইকুণ্ডীতে দাফন করা হয়।

এর আগে ইফতারের আগ মুহূর্তে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে তার মরদেহ মাগুরায় নেওয়া হয়। সন্ধ্যা ৭টায় মাগুরা শহরের নোমানী ময়দানে শিশুটির জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও ছাত্র-জনতা অংশ নেয়।

জানাজা শেষে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তার গ্রামের বাড়ি জেলার শ্রীপুর উপজেলার সোনাইকুণ্ডী গ্রামে। সেখানে আরেক দফা জানাজা শেষ দাফন সম্পন্ন করা হয়। এরপর জনতা অভিযুক্তদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।

ঢাকা/শাহীন/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জনত

এছাড়াও পড়ুন:

মাগুরার শিশুটির জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গায়েবানা জানাজা-কফিনমিছিল

মাগুরায় আট বছর বয়সী শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে এবং দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়ে গায়েবানা জানাজা পড়েছে ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বরে এই জানাজা হয়। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান উপস্থিত ছিলেন।

গায়েবানা জানাজা শেষে একটি প্রতীকী কফিনমিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে আসে ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ। এ সময় ‘জাস্টিস জাস্টিস/ উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘ফাঁসি ফাঁসি চাই/ ধর্ষকদের ফাঁসি চাই’ প্রভৃতি স্লোগান দেওয়া হয়।

রাজু ভাস্কর্যের সামনে ধর্ষণবিরোধী মঞ্চের নেতারা বক্তব্য দেন। সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বলেন, ‘সার্বিকভাবে দেশের নারী নিরাপত্তা পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ। যখনই নারী নিরাপত্তা নিয়ে রাস্তায় নামতে যাবেন, সব সময়ই কোনো না কোনো ট্যাগিংয়ের শিকার হতে হয়। এই ইস্যুগুলো নিয়ে যখন রাস্তায় নামার চেষ্টা করি, কথা বলার চেষ্টা করি, তখন যেন একটা ভয়, একটা ভীতি সবার মধ্যে কাজ করে।’

শিশুটির ধর্ষক ও হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে উমামা ফাতেমা বলেন, শুধু মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না। প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোয় অনেক শিশু ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। সেগুলো খবরের কাগজে আসে না। তিনি বলেন, তাঁরা এমন বাংলাদেশ চান, যেখানে ধর্ষণের শিকার কোনো শিশুর জন্য প্রতিদিন রাস্তায় নামতে হবে না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রাফিয়া রেহনুমা এই সমাবেশ সঞ্চালনা করেন এবং সমাপ্তি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ‘ধর্ষণের শিকার শিশুটি আজ আর নেই। কিন্তু তার সেই হত্যাকারীর বিচার নিশ্চিত করার পবিত্র দায়িত্ব আপনার ও আমার।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হলের শিক্ষার্থী আশরেফা খাতুন বলেন, মাগুরার শিশুটির ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। বিচারিক প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করতে হবে। প্রয়োজনে আইন সংশোধন করতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড দেখতে চাই। এর বাইরে আমরা কোনো পদক্ষেপ দেখতে চাই না।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের শিক্ষার্থী নিকিতা নাওয়ার বলেন, শিশুটির ধর্ষকদের বিচার যেন খুব দ্রুত সময়ে কার্যকর হয়। আসামির ফাঁসি হতেই হবে। পরবর্তী সময়ে যেন আর ধর্ষণ না হয়, তার জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে।

এ সময় কলেজ শিক্ষার্থী মাইশা মাহা বলেন, ‘আর কত রাস্তায় দাঁড়ালে আমাদের বোনেরা নিরাপদে এই রাষ্ট্রে বসবাস করতে পারবে, এর জবাব কি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দিতে পারবে?’ নারীদের হেনস্তা, নির্যাতন, নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে উল্লেখ করে মাইশা মাহা বলেন, ‘স্বাধীন রাষ্ট্রে আমরা এখনো পরাধীন। আমাদের নিজেদের নিরাপত্তার জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়ে বিচার চাইতে হচ্ছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ