পাকিস্তানে ট্রেন ছিনতাইয়ের ঘটনার সাথে সম্পর্কিত ফোন কলগুলো আফগানিস্তান থেকে এসেছিল। বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।

মঙ্গলবার ৪৪০ জন যাত্রী নিয়ে কোয়েটা থেকে পেশোয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ট্রেনটিতে বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) সন্ত্রাসীরা অতর্কিত হামলা চালায়। তারা ট্রেনে গুলি চালায় এবং যাত্রীদের জিম্মি করে, যার ফলে নিরাপত্তা বাহিনী দুই দিন ধরে অভিযান শুরু করে। বুধবার রাতে অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। বুধবার সন্ধ্যায় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী নিশ্চিত করেছেন যে অভিযান শেষ হয়েছে, হামলাস্থলে উপস্থিত ৩৩ জন সন্ত্রাসীকে হত্যা করা হয়েছে। ছিনতাইয়ের ঘটনায় ২১ জন যাত্রী এবং চারজন ফ্রন্টিয়ার কর্পস সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক প্রেস ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র শাফকাত আলী খানের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলায় জড়িত থাকার বিষয়ে ভারত থেকে আফগানিস্তানের দিকে পাকিস্তানের অবস্থান কি পরিবর্তিত হয়েছে?

জবাবে তিনি বলেন, “আমাদের নীতিতে কোনো পরিবর্তন হয়নি। এবং আবারও বলছি, ঘটনাগুলো পরিবর্তিত হয়নি। ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে মদদ দিচ্ছে। আমি যা বলছিলাম তা হল, এই বিশেষ ঘটনায়, আমাদের কাছে আফগানিস্তানে কল ট্র্যাক করার প্রমাণ রয়েছে। আমি এটাই বলেছি।”

তিনি জানান, পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদের শিকার। দেশের বাইরে শক্তিগুলো এর পরিকল্পনা, সংগঠন এবং পৃষ্ঠপোষকতা করেছে।

শাফকাত আলী বলেন, “দুর্ভাগ্যবশত, আমাদের অঞ্চলে শান্তির বিরুদ্ধে অনেক শক্তি রয়েছে যারা সন্ত্রাসবাদ দমন এবং একটি শান্তিপূর্ণ অঞ্চল গড়ে তোলার ক্ষেত্রে পাকিস্তানের অভূতপূর্ব এবং আন্তরিক প্রচেষ্টার সুফল দেখতে চায় না।”

তিনি জানান, জাফর এক্সপ্রেসের উপর সন্ত্রাসী হামলাটিও ‘বিদেশ থেকে পরিচালিত সন্ত্রাসী চক্রের নেতাদের পরিকল্পিত এবং পরিচালিত’ ছিল।
 

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আফগ ন স ত ন

এছাড়াও পড়ুন:

মাগুরার শিশুটির জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গায়েবানা জানাজা-কফিনমিছিল

মাগুরায় আট বছর বয়সী শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে এবং দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়ে গায়েবানা জানাজা পড়েছে ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বরে এই জানাজা হয়। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান উপস্থিত ছিলেন।

গায়েবানা জানাজা শেষে একটি প্রতীকী কফিনমিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে আসে ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ। এ সময় ‘জাস্টিস জাস্টিস/ উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘ফাঁসি ফাঁসি চাই/ ধর্ষকদের ফাঁসি চাই’ প্রভৃতি স্লোগান দেওয়া হয়।

রাজু ভাস্কর্যের সামনে ধর্ষণবিরোধী মঞ্চের নেতারা বক্তব্য দেন। সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বলেন, ‘সার্বিকভাবে দেশের নারী নিরাপত্তা পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ। যখনই নারী নিরাপত্তা নিয়ে রাস্তায় নামতে যাবেন, সব সময়ই কোনো না কোনো ট্যাগিংয়ের শিকার হতে হয়। এই ইস্যুগুলো নিয়ে যখন রাস্তায় নামার চেষ্টা করি, কথা বলার চেষ্টা করি, তখন যেন একটা ভয়, একটা ভীতি সবার মধ্যে কাজ করে।’

শিশুটির ধর্ষক ও হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে উমামা ফাতেমা বলেন, শুধু মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না। প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোয় অনেক শিশু ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। সেগুলো খবরের কাগজে আসে না। তিনি বলেন, তাঁরা এমন বাংলাদেশ চান, যেখানে ধর্ষণের শিকার কোনো শিশুর জন্য প্রতিদিন রাস্তায় নামতে হবে না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রাফিয়া রেহনুমা এই সমাবেশ সঞ্চালনা করেন এবং সমাপ্তি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ‘ধর্ষণের শিকার শিশুটি আজ আর নেই। কিন্তু তার সেই হত্যাকারীর বিচার নিশ্চিত করার পবিত্র দায়িত্ব আপনার ও আমার।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হলের শিক্ষার্থী আশরেফা খাতুন বলেন, মাগুরার শিশুটির ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। বিচারিক প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করতে হবে। প্রয়োজনে আইন সংশোধন করতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড দেখতে চাই। এর বাইরে আমরা কোনো পদক্ষেপ দেখতে চাই না।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের শিক্ষার্থী নিকিতা নাওয়ার বলেন, শিশুটির ধর্ষকদের বিচার যেন খুব দ্রুত সময়ে কার্যকর হয়। আসামির ফাঁসি হতেই হবে। পরবর্তী সময়ে যেন আর ধর্ষণ না হয়, তার জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে।

এ সময় কলেজ শিক্ষার্থী মাইশা মাহা বলেন, ‘আর কত রাস্তায় দাঁড়ালে আমাদের বোনেরা নিরাপদে এই রাষ্ট্রে বসবাস করতে পারবে, এর জবাব কি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দিতে পারবে?’ নারীদের হেনস্তা, নির্যাতন, নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে উল্লেখ করে মাইশা মাহা বলেন, ‘স্বাধীন রাষ্ট্রে আমরা এখনো পরাধীন। আমাদের নিজেদের নিরাপত্তার জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়ে বিচার চাইতে হচ্ছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ