দেশের সব জেলায় টিসিবির পণ্য বিক্রি হচ্ছে
Published: 13th, March 2025 GMT
নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামে ভর্তুকি মূল্যে তেল, ডাল, চিনিসহ কয়েকটি পণ্য বিক্রি করে সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। সম্প্রতি এই কর্মসূচির আওতা বাড়ানো হয়েছে।
টিসিবির কর্মকর্তারা জানান, সংস্থাটি আগে ঢাকা শহরের ৫০টি ও চট্টগ্রামের ২০টি স্থানে পণ্য বিক্রি করত। প্রতিটি ট্রাকে ২০০ জনের জন্য পণ্য থাকত। এখন স্থানের সংখ্যা ও পণ্যের পরিমাণ—দুটোই বাড়ানো হয়েছে।
বর্তমানে দেশের সব কটি জেলাতেই টিসিবির ট্রাকে করে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রি শুরু হয়েছে। আর প্রতিটি ট্রাক থেকে ৪০০ জন পণ্য কিনতে পারছেন।
টিসিবির মুখপাত্র হুমায়ূন কবির জানান, ৫ মার্চ থেকে ৬৪ জেলাতেই টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। রমজান উপলক্ষে পণ্য বিক্রির এ পরিধি বাড়ানো হয়েছে বলে জানান তিনি। এখন ঢাকা শহরের ৫০টি স্থানে, চট্টগ্রাম শহরের ২০টি স্থানে, বিভাগীয় শহরের ১০টি স্থানে ও জেলা শহরের ৫টি করে স্থানে টিসিবির ট্রাকে করে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে।
টিসিবির ট্রাক থেকে একজন ভোক্তা সর্বোচ্চ দুই লিটার তেল (সয়াবিন বা কুঁড়ার তেল), দুই কেজি মসুর ডাল, এক কেজি চিনি, দুই কেজি ছোলা ও ৫০০ গ্রাম খেজুর কিনতে পারেন। প্রতি লিটার ভোজ্যতেল ১০০ টাকা, প্রতি কেজি মসুর ডাল ৬০ টাকা, চিনি ৭০ টাকা, ছোলা ৬০ টাকা ও ৫০০ গ্রাম খেজুর ৭৮ টাকায় বিক্রি করা হয়। বিদ্যমান বাজারমূল্যের চেয়ে প্রায় ৪০০ টাকা কমে এসব পণ্য কিনতে পারেন ক্রেতারা। তাই টিসিবির ট্রাক থেকে পণ্য কিনতে প্রতিদিন দীর্ঘ লাইন পড়ে।
এ দিকে গত ফেব্রুয়ারির শুরুতে সারা দেশে ৫৭ লাখ পরিবারের মধ্যে স্মার্টকার্ড বিতরণ করেছিল টিসিবি। এর সঙ্গে নতুন করে আরও ছয় লাখ স্মার্টকার্ড তৈরি করে বিতরণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে সংস্থাটি। টিসিবির কর্মকর্তারা জানান, ইতিমধ্যে দুই লাখ স্মার্টকার্ড স্থানীয় ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে পৌঁছানো হয়েছে। বাকি কার্ডও দ্রুততম সময়ের মধ্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করা হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শহর র
এছাড়াও পড়ুন:
মাগুরার শিশুটির জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গায়েবানা জানাজা-কফিনমিছিল
মাগুরায় আট বছর বয়সী শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে এবং দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়ে গায়েবানা জানাজা পড়েছে ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বরে এই জানাজা হয়। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান উপস্থিত ছিলেন।
গায়েবানা জানাজা শেষে একটি প্রতীকী কফিনমিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে আসে ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ। এ সময় ‘জাস্টিস জাস্টিস/ উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘ফাঁসি ফাঁসি চাই/ ধর্ষকদের ফাঁসি চাই’ প্রভৃতি স্লোগান দেওয়া হয়।
রাজু ভাস্কর্যের সামনে ধর্ষণবিরোধী মঞ্চের নেতারা বক্তব্য দেন। সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বলেন, ‘সার্বিকভাবে দেশের নারী নিরাপত্তা পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ। যখনই নারী নিরাপত্তা নিয়ে রাস্তায় নামতে যাবেন, সব সময়ই কোনো না কোনো ট্যাগিংয়ের শিকার হতে হয়। এই ইস্যুগুলো নিয়ে যখন রাস্তায় নামার চেষ্টা করি, কথা বলার চেষ্টা করি, তখন যেন একটা ভয়, একটা ভীতি সবার মধ্যে কাজ করে।’
শিশুটির ধর্ষক ও হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে উমামা ফাতেমা বলেন, শুধু মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না। প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোয় অনেক শিশু ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। সেগুলো খবরের কাগজে আসে না। তিনি বলেন, তাঁরা এমন বাংলাদেশ চান, যেখানে ধর্ষণের শিকার কোনো শিশুর জন্য প্রতিদিন রাস্তায় নামতে হবে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রাফিয়া রেহনুমা এই সমাবেশ সঞ্চালনা করেন এবং সমাপ্তি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ‘ধর্ষণের শিকার শিশুটি আজ আর নেই। কিন্তু তার সেই হত্যাকারীর বিচার নিশ্চিত করার পবিত্র দায়িত্ব আপনার ও আমার।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হলের শিক্ষার্থী আশরেফা খাতুন বলেন, মাগুরার শিশুটির ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। বিচারিক প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করতে হবে। প্রয়োজনে আইন সংশোধন করতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড দেখতে চাই। এর বাইরে আমরা কোনো পদক্ষেপ দেখতে চাই না।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের শিক্ষার্থী নিকিতা নাওয়ার বলেন, শিশুটির ধর্ষকদের বিচার যেন খুব দ্রুত সময়ে কার্যকর হয়। আসামির ফাঁসি হতেই হবে। পরবর্তী সময়ে যেন আর ধর্ষণ না হয়, তার জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে।
এ সময় কলেজ শিক্ষার্থী মাইশা মাহা বলেন, ‘আর কত রাস্তায় দাঁড়ালে আমাদের বোনেরা নিরাপদে এই রাষ্ট্রে বসবাস করতে পারবে, এর জবাব কি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দিতে পারবে?’ নারীদের হেনস্তা, নির্যাতন, নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে উল্লেখ করে মাইশা মাহা বলেন, ‘স্বাধীন রাষ্ট্রে আমরা এখনো পরাধীন। আমাদের নিজেদের নিরাপত্তার জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়ে বিচার চাইতে হচ্ছে।’