স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, “কূটনৈতিক ও সরকারি পাসপোর্টধারীদের জন্য গাম্বিয়ার সঙ্গে ভিসা অব্যাহতি চুক্তি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে গভীর ও কূটনৈতিক সম্পর্ককে আরো জোরদার করবে। এই চুক্তি দুই দেশের সরকারের মধ্যে আরো অর্থবহ মিথস্ক্রিয়াকে উৎসাহিত করবে, বৃহত্তর কূটনৈতিক বিনিময়কে সহজতর করবে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে বৃহত্তর সহযোগিতার পথকে প্রশস্ত করবে।”

বৃহস্প‌তিবার (১৩ মার্চ) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ এবং গাম্বিয়ার মধ্যে কূটনৈতিক ও সরকারি পাসপোর্টধারীদের জন্য পারস্পরিক ভিসা অব্যাহতি চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ও গাম্বিয়ার পক্ষে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.

মামাদু টাঙ্গারা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি।

উপদেষ্টা বলেন, “রোহিঙ্গা ইস্যুতে গাম্বিয়ার নৈতিক অবস্থান এবং আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশের প্রতি তাদের অকুণ্ঠ সংহতির জন্য আমরা গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। ওআইসির সমর্থনে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) রোহিঙ্গাদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে গাম্বিয়ার নেতৃত্ব আমাদের অকুণ্ঠ প্রশংসা অর্জন করেছে। এই সাহসী পদক্ষেপ ও মানবাধিকার রক্ষায় তাদের অঙ্গীকার আমাদের দুই দেশের সম্পর্ককে আরো সুদৃঢ় করেছে।” 

তিনি বলেন, “আজকের এই চুক্তি স্বাক্ষর আমাদের ক্রমবর্ধমান সম্পর্কের আরেকটি মাইলফলক।”

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “তৈরি পোশাক শিল্প, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও প্যাকেজিং, তথ্যপ্রযুক্তি ও আইটি-সংশ্লিষ্ট সেবা এবং ওষুধশিল্প-এসব খাতে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া, জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ দুটি দেশ হিসেবে, যেখানে আমাদের গ্রামীণ অর্থনীতি কৃষির ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল, আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারি সহনশীলতা বৃদ্ধির জন্য এবং টেকসই কৃষি অনুশীলনকে উৎসাহিত করতে।”

উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের উচিত এই কূটনৈতিক সদিচ্ছাকে ব্যবসা-বাণিজ্যিক যোগাযোগে রূপান্তর করা, যাতে আমাদের অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের পূর্ণ সম্ভাবনা বাস্তবায়িত হয়।”

গাম্বিয়ার প্রতিনিধিদলে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত গাম্বিয়ার অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত মুস্তফা জাওয়ারা, গাম্বিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক ওমর বিট্টয়ী ও বাংলাদেশ বিষয়ক ডেস্ক অফিসার আদমা সালাহ।

বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (আফ্রিকা) বি এম জামাল হোসেন, পরিচালক তাহলিল দিলাওয়ার মুন, সিনিয়র সহকারী সচিব মো. জিয়াউর রহমান প্রমুখ।

আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিভিন্ন দেশের সাথে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা সম্প্রসারণ এবং আন্তঃদেশীয় সম্পর্ককে অধিকতর ফলপ্রসূ করার লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশের সাথে ভিসা অব্যাহতি চুক্তি সম্পাদন করা হয়। এ পর্যন্ত ৩০টি দেশের সাথে বাংলাদেশের ভিসা অব্যাহতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

ভিসা অব্যাহতি চুক্তিটিতে মোট ১০টি অনুচ্ছেদ রয়েছে। এটি স্বাক্ষরিত হওয়ার ফলে উভয় দেশের কূটনৈতিক এবং অফিসিয়াল পাসপোর্টধারী নাগরিকরা অন্য পক্ষের ভূখণ্ডে প্রবেশ, বহির্গমন ও ট্রানজিটের ক্ষেত্রে অনধিক ৯০ দিনের জন্য ভিসা ছাড়াই অবস্থান করতে পারবেন। এ চুক্তিটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বলবৎ থাকবে। চুক্তিবদ্ধ যেকোনো পক্ষ ৯০ দিনের লিখিত নোটিশ প্রদানের মাধ্যমে এ চুক্তিটির অবসান ঘটাতে পারবে।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স বর ষ ট র ক টন ত ক উপদ ষ ট আম দ র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

স্ত্রীকে বিদায় বলে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিলেন স্বামী

স্ত্রীকে মোবাইল ফোনে বিদায় বলে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন খায়রুল বাসার সুজন (৩৫) নামের এক পোশাকশ্রমিক। পরক্ষণে স্ত্রী শুধু চলন্ত ট্রেনের শব্দ শুনতে পান। পরে একাধিকবার কল দিলেও সাড়াশব্দ মেলেনি। ঘটনাটি ঘটে আজ বৃহস্পতিবার গাজীপুরের শ্রীপুর রেলস্টেশন এলাকায়।

নিহত সুজন কুষ্টিয়ার মিরপুর থানার কুরশা গ্রামের মৃত আবুল কালামের ছেলে। তিনি পরিবার নিয়ে উপজেলার চন্নাপাড়া গ্রামের জনৈক সুলতানের বাড়িতে ভাড়া থেকে স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন।

স্থানীয়রা জানান, আজ সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে ঢাকাগামী দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেন তিনি। এ সময় চলন্ত ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে মৃত্যু হয় তার। দেহ থেকে পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে শ্রীপুরের স্টেশনমাস্টারকে জানানো হয়।

নিহত ব্যক্তির স্ত্রী ফাতেমা বলেন, ‘সকালে একসঙ্গে বাসা থেকে বের হই। পরে আর বাসায় ফেরেনি। বিকেলে কোথায় আছে জানতে ফোন করি। তখন তিনি  জানায়, শ্রীপুরে। একটু পর ফোন করে শুধু বলে, বিদায়। তখন আমি শুধু ট্রেনের শব্দ শুনতে পাই। এরপর বারবার ফোন করলে সে ফোন ধরেনি। সন্ধ্যার পর দুর্ঘটনার খবর পাই। ঘটনাস্থলে এসে স্বামীর মরদেহ দেখতে পাই। আমাকে বিদায় বলে সে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়েছে।’

শ্রীপুর রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার শামীমা জাহান বলেন, ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। স্বজনদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ