খুলনার ডুমুরিয়ায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় এক ভ্যানচালকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার আটলিয়া ইউনিয়নের গবিন্দকাটি গ্রামসংলগ্ন ভদ্রা নদীর চর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত ভ্যানচালক মিলন শেখ (৪০) উপজেলার মাগুরাঘোনা ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামের কাকড় পাড়ার কৃষক ওমর আলী শেখের ছেলে।
মাগুরাঘোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম হেলাল বলেন, নিহত মিলন মাগুরাঘোনা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। গত বুধবার দুপুরের খাবার খেয়ে তিনি ভ্যান নিয়ে বের হন। এর পর আর বাড়ি ফেরেননি। পরিবারের লোকজন রাতে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে মিলনের ফোনটিও বন্ধ পাওয়ায় যায়। কি কারণে মিলন হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন, সে বিষয়ে তাঁর স্বজন কোনো তথ্য দিতে পারেনি।
ডুমুরিয়া থানার ওসি মাসুদ রানা জানান, মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে। উদ্ধারের সময় রশি দিয়ে তাঁর হাত-পা বাঁধা ছিল। শরীর ও মাথায় একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। খুনিরা নির্জন স্থানে হত্যা করে তাঁর ভ্যানটি নিয়ে গেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। খুনিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কুমিল্লায় জানালার ফাঁক দিয়ে পড়ে ছাত্রীর মৃত্যু, মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ও স্বজনদের ভিন্ন ভাষ্য
কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার একটি মাদ্রাসার পাঁচতলা ভবনের জানালার ফাঁক দিয়ে পড়ে এক শিক্ষার্থীর (১৩) মৃত্যু হয়েছে। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের দাবি, বাড়ি যেতে না পারায় মেয়েটি লাফ দেয়। তবে স্বজনেরা দাবি করেছেন, এখানে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের গাফিলতি থাকতে পারে।
গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। বিষয়টি রাতেই জানাজানি হয়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে মাদ্রাসার পাঁচতলার একটি জানালার ফাঁক দিয়ে পড়ে গুরুতর আহত হয় সে।
মাদ্রাসার মুহতামিমের ভাষ্য, ঈদের ছুটির পর সপ্তাহখানেক আগে ওই শিক্ষার্থীর নিয়মিত ক্লাস শুরু হয়। তবে মাদ্রাসার আবাসিকে থাকতে সে অনাগ্রহী ছিল। বৃহস্পতিবার রাতে সে তার মাকে ফোন করে বাড়ি যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে। পরে রাতে মাদ্রাসার একটি জানালার ফাঁক দিয়ে নিচে লাফিয়ে পড়ে।
স্থানীয় লোকজন বলেন, গুরুতর আহত অবস্থায় মেয়েটিকে উদ্ধার করে তাঁরা কুমিল্লার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে চিকিৎসকের পরামর্শে ঢাকায় পাঠানো হয়। রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করতে না পেরে ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালে মেয়েটিকে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
ওই শিক্ষার্থীর মামা বলেন, তাঁরা চেয়েছিলেন ময়নাতদন্ত ছাড়া দাফন করতে, তবে পুলিশ অনুমতি দেয়নি। তাঁরা থানায় অভিযোগ করবেন। পুরো ঘটনা সুষ্ঠুভাবে তদন্তের দাবি জানান।
মেয়েটির এক স্বজন দাবি করেন, মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। জানালার একটি বড় ফাঁক দিয়ে মেয়েটি নিচে পড়ে যায়। যদি গ্রিল সঠিকভাবে থাকত, এমনটা না–ও হতে পারত।
মাদ্রাসার মুহতামিম বলেন, ‘দিবাগত রাত তিনটার দিকে স্থানীয় এক ব্যক্তি রাস্তায় মেয়েটিকে পড়ে থাকতে দেখে আমাকে ফোন করেন। পরে আমরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। জানালার ওই অংশে ফাঁক ছিল, তবে সেটি আগে তেমনভাবে আমাদের নজরে আসেনি।’
এ বিষয়ে লাকসাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজনীন সুলতানা বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। জানালার একটি অংশে রডের ফাঁক আছে, সেটি বেশ বড়। ধারণা করা হচ্ছে, সেখান দিয়েই মেয়েটি পড়েছে। তবে তদন্ত চলছে। মেয়েটির লাশের ময়নাতদন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হবে। যৌন নিপীড়নের কোনো অভিযোগ থাকলে, সেটিও পরীক্ষা করা হবে। এখন পর্যন্ত মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ বা পরিবারের কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি।