জামালপুরে আটক ব্যবসায়ীকে পুলিশের গাড়ি থেকে নামিয়ে নিলেন এলাকার লোকজন
Published: 13th, March 2025 GMT
জামালপুর শহরে জমিসংক্রান্ত বিরোধের অভিযোগে আটক স্থানীয় এক ব্যবসায়ীকে পুলিশের গাড়ি থেকে নামিয়ে নিয়ে গেছেন এলাকার লোকজন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের শাহপুর এলাকার জামালপুর রেলস্টেশন–সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ওই ব্যবসায়ীর নাম আরিফুর রহমান চিকু (৩৫)। তিনি শাহপুর এলাকার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী। তাঁকে হাতকড়া পরিয়ে থানায় আনার চেষ্টা করে পুলিশ। এ সময় স্থানীয় লোকজনের প্রতিরোধের মুখে তাঁর হাতকড়া খুলে দেয় পুলিশ। পরে পুলিশের গাড়ি থেকে আরিফুর রহমানকে নামিয়ে নিয়ে যান এলাকার লোকজন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আরিফুর রহমান মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘একখণ্ড জমিতে আমি কাজ করছিলাম। তখন কিছু লোক আমার জমির দেয়াল ভেঙে ফেলে। আমি ও আমার স্বজনেরা সেখানে ছুটে যাই। তখন পুলিশও আসে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই পুলিশ আমাকে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে থানায় নিয়ে যাওয়া শুরু করে। তখন আমার এলাকার লোকজন প্রতিবাদ করেন। এলাকাবাসী পুলিশের গাড়ি ঘেরাও করেন। এলাকার লোকজনের প্রতিরোধের কারণে পুলিশ আমার হ্যান্ডকাফ খুলে দিতে বাধ্য হয়। পরে এলাকাবাসী পুলিশের গাড়ি থেকে আমাকে নামিয়ে নিয়ে যান।’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শাহপুর এলাকায় একখণ্ড জমি নিয়ে আরিফুর রহমানের প্রতিবেশীর সঙ্গে বিরোধ চলে আসছিল। আজ দুপুরে ওই জমি নিয়ে আবারও ঝগড়া শুরু হয়। এক পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে জামালপুর সদর থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং সেখান থেকে আরিফুর রহমানকে আটক করে তাঁকে হাতকড়া পরায়। এলাকার লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে পুলিশের গাড়ি ঘিরে ফেলেন। তাঁদের প্রতিরোধের মুখে তাঁর হাতকড়া খুলে দিতে বাধ্য হয় পুলিশ। পরে ক্ষুব্ধ লোকজন তাঁকে পুলিশের গাড়ি থেকে নামিয়ে নিয়ে যান। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা (শাখা) পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। কিন্তু তাঁকে আর আটক করে আনতে পারেননি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
দুপুরে শাহপুর এলাকায় পুলিশের দুটি ও ডিবির একটি গাড়ি চোখে পড়ে। স্থানীয় লোকজন একটি গাড়ির চারপাশে ভিড় করছিলেন। জামালপুর জেলা পুলিশের গোয়েন্দা (ডিবি) শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.
জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ফয়সল মো. আতিক প্রথমে বলেন, জমি নিয়ে মারামারির অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ গিয়েছিল। সেখানে একজনকে আটক করার কথা শুনেছিলেন। পরে সেখানে কী হয়েছে, তিনি জানেন না। কিছুক্ষণ পর ফোন করে ওসি বলেন, জমিজমা নিয়ে বিরোধের কারণে এক পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে সেখানে পুলিশ গিয়েছিল। সেখানে একজনকে আটকও করা হয়েছিল। কিন্তু ওই ব্যক্তি অপরাধী না হওয়ায় তাঁকে পুলিশই ছেড়ে দিয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আর ফ র রহম ন ব যবস য় ন এল ক হ তকড়
এছাড়াও পড়ুন:
যশোরে নববর্ষকে বরণ, শোভাযাত্রার উদ্যোক্তা ভাস্কর শামীমকে সংবর্ধনা
যশোরে বর্ণাঢ্য আয়োজনে মাধ্যমে বাংলা বর্ষবরণ উৎসব পালিত হয়েছে। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় কালেক্টরেট চত্বর থেকে বর্ষবরণ শোভাযাত্রা বের হয়।
এর আগে দেশব্যাপী বর্ষবরণ শোভাযাত্রার উদ্যোক্তা ভাস্কর মাহবুব জামাল শামীমকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ভাস্কর মাহবুব জামাল শামীমের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট ও চেক তুলে দেন।
অনুভূতি ব্যক্তকালে ভাস্কর মাহবুব জামাল শামীম বলেন, এই সম্মাননা শুধু আমার একার নয়। যশোরের সব সাংস্কৃতিক কর্মী, সামাজিক ও রাজনীতিক সর্বোপরি গোটা দেশবাসীর। যশোর থেকে শুরু হওয়া পহেলা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রা আজ প্রতিবেশী ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বাঙালিরা সাড়ম্বরে পালন করছে। এই আনন্দ আজ সবার। আজকের এই সম্মাননায় আমি আপ্লুত, খুশি।
অনুষ্ঠানে যশোর জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, ৩২টির অধিক সাংস্কৃতিক, সামাজিক সংগঠন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল যশোর কালেক্টরেট চত্বরে সমবেত হয়।
জাতীয় সংগীত ও এসো হে বৈশাখ এসো এসো গান গেয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। সম্মাননা অনুষ্ঠানের পরপরই দেশবাসীর কল্যাণ কামনায় শহরে একটি বর্ণিল ও বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়।
শোভাযাত্রাটি যশোর কালেক্টরেট চত্বর থেকে বেরিয়ে বকুলতলা, দড়াটানা, চৌরাস্তা, কেশবলাল সড়ক হয়ে যশোর ইনস্টিটিউটে গিয়ে শেষ হয়। এবারের শোভাযাত্রায় সুন্দরবন রক্ষায় বিভিন্ন প্রাণ প্রকৃতি পাখ পাখালির মোটিফ, ঘোড়ারগাড়িসহ গ্রামবাংলার চিরায়ত বিভিন্ন সামগ্রী বহন করা হয় ও র্যালি হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত। এসময় বিভিন্ন পেশার মানুষ নববর্ষের বাহারি রঙিন পোশাক পরিধান করে তাদের নিজস্ব বাদ্য বাজিয়ে নেচে গেয়ে তারা নববর্ষকে বরণ করে নেয়।
এদিকে, সকাল ৬টা ৩১ মিনিটে নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে যশোর পৌরপার্কে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে যশোর উদীচী, নবকিশলয় স্কুলে বিবর্তন যশোর ও সুরধুনী ছাড়াও বিভিন্ন সংগঠন তাদের নিজ নিজ ভেন্যুতে কবিগান, পালাগান, পঞ্চকবির গান, আধুনিক গান, লোকসংগীত, লোকনৃত্য, বাউল গান পরিবেশন করা হয়।
বর্ষবরণের এ অনুষ্ঠান সব বয়সের নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন। এ উৎসব দেশে সকল ধর্ম বর্ণের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন সৃষ্টি করবে এমন আশা তাদের।
অনুষ্ঠানে পুলিশ সুপার রওনক জাহান, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ যশোরের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।