জয়সওয়ালের মন্তব্য অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে হস্তক্ষেপের শামিল
Published: 13th, March 2025 GMT
বাংলাদেশের নির্বাচন, সার্বিক আইনশৃঙ্খলা ও সংখ্যালঘুদের নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের মন্তব্য অযাচিত এবং অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে হস্তক্ষেপের শামিল। এ ধরনের মন্তব্যের পুনরাবৃত্তি রোধে ভারত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে বলে আশা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে জনকূটনীতি অনুবিভাগের মহাপরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।
গত ৭ মার্চ দিল্লিতে সাপ্তাহিক প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের পরিস্থিতি প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। তিনি বলেন, আমরা একটি স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং প্রগতিশীল বাংলাদেশকে সমর্থন করি। যেখানে গণতান্ত্রিক উপায়ে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে সব সমস্যার নিষ্পত্তি হবে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের মন্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে রফিকুল আলম বলেন, ‘ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের মন্তব্যের বিষয়টি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। বাংলাদেশের নির্বাচন, সার্বিক আইনশৃঙ্খলা ও সংখ্যালঘু সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে মন্তব্য করা হয়েছে। বাংলাদেশ মনে করে, এ বিষয়গুলো একান্তই আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ ধরনের মন্তব্য অযাচিত ও অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে হস্তক্ষেপের শামিল। এই ধরনের মন্তব্য বিভ্রান্তিকর এবং বাস্তবতার ভুল প্রতিফলন।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘বাংলাদেশ সব দেশের সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতিতে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে। পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বিশ্বাস এবং বোঝাপড়ার ভিত্তিতে ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ এবং গঠনমূলক সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা আশা করি, ভারত সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই ধরনের মন্তব্যের পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।’
সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ড.
শেখ হাসিনাকে ফেরত আনতে ভারত বাংলাদেশের কূটনৈতিক পত্রের জবাব দিয়েছে কিনা এবং না দিয়ে থাকলে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে বলে জানতে চান সাংবাদিকরা। জবাবে রফিকুল আলম বলেন, ‘এটার বিষয়েও প্রধান উপদেষ্টা সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে জবাব দিয়েছেন। তার পরও আমরা বলছি, আমরা ভারতের কাছ থেকে কোনো জবাব পাইনি। পরবর্তী কার্যক্রম নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা পাবলিকলি একটা দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।’
ভারতের সঙ্গে প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে গত বছরের ডিসেম্বরে দিল্লির বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কূটনৈতিক পত্র পাঠানো হয়েছিল।
প্রধান উপদেষ্টার আসন্ন চীন সফর নিয়ে পরবর্তী সময় বিস্তারিত তুলে ধরা হবে বলে জানান মুখপাত্র।
তিনি বলেন, ২৬ মার্চ বিকেলে প্রধান উপদেষ্টা চীনের উদ্দেশে যাত্রা করবেন। ২৭ মার্চ তিনি বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া এনুয়াল কনফারেন্সের উদ্বোধনী প্লেনারিতে অংশ নিয়ে বক্তৃতা করবেন। বিকেলে চীনের স্টেট কাউন্সিলের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাতের কথা রয়েছে এবং ২৮ মার্চ চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হওয়ার কথা আছে। ২৯ মার্চ সকালে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের কথা রয়েছে ড. ইউনূসের। সেদিন রাতে তিনি বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করবেন।
জাতিসংঘ মহাসচিবের বাংলাদেশ সফর প্রসঙ্গে মুখপাত্র বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যাকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আশা করা যাচ্ছে, খুব দ্রুতই এই সমস্যার সমাধান হবে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সফর রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করে বাংলাদেশ।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সোনারগাঁয়ে চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় বিএনপি নেতাকে মারধর
সোনারগাঁ উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের চরকামালদি গ্রামে বিএনপির নেতাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে জাতীয় পার্টি নেতা হযরত আলী গংগদের বিরুদ্ধে।
উপজেলার বিএনপি'র মৎস্য বিষয়ক সম্পাদক সানাউল্লাহ প্রধান এ ঘটনায় শনিবার সোনারগাঁ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন ।
অভিযোগ সূত্র জানা যায় যে,নুরুল হক মোল্লা , মোঃ হযরত আলী মোল্লা , বাবু মোল্লা , মোঃ শামিম মোল্লা ৫। মোঃ সাদেক মোল্লা সর্ব সাং-চরকামালদী, ডাকঘর- ধন্দীয় বাজার, থানা-সোনারগাঁ, নারায়ণগঞ্জসহ অজ্ঞাত নামা ৪/৫জন বিবাদীগণদের বিরুদ্ধে এই মর্মে অভিযোগ করিতেছি যে, বিবাদীগণ পরস্পর একদলভুক্ত, উচ্ছৃংখল, দাঙ্গাবাজ, পরধনলোভী ও খারাপ প্রকৃতির লোক।
গত শুক্রবার চরকামালদী উত্তর পাড়া মসজিদের সামনে সানাউল্লাহ বন্ধু আমানকে উপরোক্ত বিবাদীণ রাস্তায় আটকাইয়া তাহার কাছ থেকে ওয়াইফাই ও ডিসের মেশিন যাহার অনুমান মূল্য দুই লাখ টাকা জোর পূর্বক রাখিয়া দেয় এবং তাহার কাছে চাঁদা দাবি করে।
পরবর্তীতে আমান সানাউল্লাহ কাছে আসিয়া উক্ত বিষয়ে জানাইলে আমি স্থানীয় এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের নিয়া উক্ত বিষয়টি সমাধান করার জন্য একটি উঠান বৈঠক শালিশ বসাই।
উক্ত উঠান বৈঠক শালিশে বিবাদীগণকে ডাকাইয়া আমানের মেশিন ফেরত দিতে বলিলে উপরোক্ত বিবাদীগণ সানাউল্লাহ উপর ক্ষপ্তি হইয়া দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র অবৈধ পিস্তল, রামদা, চাপাতী, ছুরি, লোহার রড, এসএস পাইপ, অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করিয়া সানাউল্লাহকে এলোপাথারী মারধর করিয়া আমার শরীরে বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা করে।
মারধরের এক পর্যায়ে সানাউল্লাহ গলায় থাকা ১৬রি স্বর্ণের চেইন যাহার অনুমান মূল্য- ১,৪০,০০০ (এক লক্ষ চল্লিশ হাজার) টাকা উপরোক্ত হযরত ছিনাইয়া নিয়া যায়।সানাউল্লাহ ডাক চিৎকার শুনিয়া আশে পাশের লোকজন আগাইয়া আসিলে নুরুল হক মোল্লা পিস্তল দিয়ে ফাকা গুলি করে এবং বিবাদীগণ পরবর্তীতে সানাউল্লাহ্ বাড়িতে ডাকাতি করিবে ও গাড়িতে আগুন দিয়া দিবে।
পুকুরের মাছ মারিয়া ফেলবে ও পরিবারের লোকজনদের যে কোন সময় মারধর করিয়া প্রাণনাশ করিবে বলিয়া হুমকি প্রদান করে।
সানাউল্লাহ জানান, বিবাদীরা খারাপ প্রকৃতির লোক তাহারা যেকোন সময় আমাকেসহ আমার পরিবারের লোকজনদের মারধর করিয়া খুন যখম করত দাঙ্গাহাঙ্গামা করিয়া আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটাইতে পারে মর্মে ভীত আশংখায় আছি। এমতাবস্থায় উক্ত বিষয়টি নিয়া আমি মানসিক ভাবে চিন্তিত এবং হতাশাগ্রস্থ হয়ে আছি।
এই বিষয়ে সোনারগাঁ উপজেলা যুবদল নেতা ও বিশিষ্ট মৎস্য ব্যবসায়ী ওয়াজকুরনীকে জড়িয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করা হয়ছে।
সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোহাম্মদ আবদুল বারী জানান, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্হা নেওয়া।