সিগারেট করকাঠামো সংস্কার করলে রাজস্ব বাড়বে ২০ হাজার কোটি টাকা এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠী ধূমপান ছাড়তে উৎসাহিত হবে।

বুধ ও বৃহস্পতিবার (১২ ও ১৩ মার্চ) রাজধানীর বাংলামোটরে বিআইপি কনফারেন্স রুমে দুই দিনব্যাপী ‘তামাক কর ও মূল্য পদক্ষেপ: বাজেট ২০২৫-২০২৬’ শীর্ষক সাংবাদিক কর্মশালায় এসব বলেন আলোচকরা।

গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং অ্যান্টি-টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স (আত্মা) আয়োজিত দুটি কর্মশালায় প্রিন্ট, টেলিভিশন এবং অনলাইন মিডিয়ার ৫০ জন সাংবাদিক অংশ নেন।

সাংবাদিক কর্মশালায় বক্তারা বলেন, সিগারেটে চারটি মূল্যস্তর (নিম্ন, মধ্যম, উচ্চ এবং প্রিমিয়াম) থাকায় তামাক কর ও মূল্য পদক্ষেপ সঠিকভাবে কাজ করছে না। বিশেষ করে, নিম্ন এবং মধ্যম স্তরের সিগারেটের দাম কাছাকাছি হওয়ায় ভোক্তা যেকোনো একটি স্তরের সিগারেট বেছে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে সিগারেটের নিম্ন ও মধ্যম স্তরকে একত্রিত করে দাম বাড়ানো হলে দরিদ্র জনগোষ্ঠী এবং তরুণ প্রজন্ম ধূমপানে নিরুৎসাহিত হবে। একইসঙ্গে, তামাক খাতে সরকারের রাজস্ব আয়ও বাড়বে।

কর্মশালায় জানানো হয়, বাংলাদেশে তামাকপণ্য অত্যন্ত সস্তা এবং নিত্যপণ্যের তুলনায় এগুলো আরো সস্তা হয়ে পড়ছে। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত সাতটি মহানগরীর (ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, বরিশাল এবং রংপুর) নিত্যপণ্যের গড় খুচরা মূল্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০২১ সালের (৪ জুলাই) তুলনায় ২০২৩ সালে (৪ জুলাই) খোলা চিনির দাম বেড়েছে ৮৯ শতাংশ, আলু ৮৭ শতাংশ, খোলা আটা ৭৫ শতাংশ, পাঙ্গাস মাছ ৪৭ শতাংশ, ডিম ৪৩ শতাংশ, সয়াবিন তেল ৩৪ শতাংশ, গুঁড়ো দুধ ৩০ শতাংশ, এবং ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ২৭ শতাংশ। অথচ একইসময়ে বিভিন্ন স্তরের সিগারেটের দাম বেড়েছে মাত্র ৬ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত। ফলে, তরুণ ও দরিদ্র জনগোষ্ঠী এই ক্ষতিকর পণ্য ব্যবহারে বিশেষভাবে উৎসাহিত হচ্ছে।

আসন্ন বাজেটে তামাকপণ্যের কর ও মূল্যবৃদ্ধি সংক্রান্ত যেসব প্রস্তাব কর্মশালায় তুলে ধরা হয় সেগুলো হচ্ছে— নিম্ন স্তর এবং মধ্যম স্তরকে একত্রিত করে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ৯০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে। উচ্চ স্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ১৪০ টাকা অপরিবর্তিত রাখতে হবে। প্রিমিয়াম স্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ১৯০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে। সিগারেটের খুচরা মূল্যের ওপর ৬৭ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক, ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) এবং ১ শতাংশ স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ বহাল রাখতে হবে।

ফিল্টারবিহীন ২৫ শলাকা বিড়ির খুচরা মূল্য ২৫ টাকা এবং ফিল্টারযুক্ত ২০ শলাকা বিড়ির খুচরা মূল্য ২০ টাকা নির্ধারণ করে ৪৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করতে হবে। প্রতি ১০ গ্রাম জর্দার খুচরা মূল্য ৫৫ টাকা এবং ১০ গ্রাম গুলের খুচরা মূল্য ৩০ টাকা নির্ধারণ করে ৬০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করতে হবে। সব তামাকপণ্যের খুচরা মূল্যের ওপর ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) এবং ১ শতাংশ স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ বহাল রাখতে হবে।

কর্মশালায় জানানো হয়, তামাকবিরোধীদের কর ও মূল্য প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হলে ধূমপান কমার পাশাপাশি ২০ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় অর্জিত হবে। একই সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদে প্রায় ৯ লাখ তরুণসহ মোট ১৭ লাখের অধিক মানুষের অকাল মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে।

কর্মশালায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক জনকণ্ঠের সিটি এডিটর কাওসার রহমান, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের ডেপুটি এডিটর সাজ্জাদুর রহমান, আত্মার কনভেনর লিটন হায়দার, কো-কনভেনর নাদিরা কিরণ ও মিজান চৌধুরী, প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের, মো.

হাসান শাহরিয়ার প্রমুখ।

ঢাকা/হাসান/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর ও ম ল য

এছাড়াও পড়ুন:

একঝলক (১৩ মার্চ ২০২৫)

ছবি: তাফসিলুল আজিজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • স্বাধীনতা দিবস ওয়ালটন আন্তর্জাতিক রেটিং দাবা প্রতিযোগিতা শনিবার শুরু
  • এসএসসি ভোকেশনাল-২০২৫-এর সংশোধিত রুটিন প্রকাশ
  • একঝলক (১৩ মার্চ ২০২৫)
  • বাংলাদেশিদের জন্য যুক্তরাজ্যর গ্রেট স্কলারশিপ, প্রতিটি বৃত্তি ১০ হাজার পাউন্ডের
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (১৩ মার্চ ২০২৫)
  • বেসরকারী সংস্থায় চাকরি, বেতন ১ লাখ ২০ হাজার
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (১২ মার্চ ২০২৫)
  • নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়ে সমালোচিত নেইমার
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (১১ মার্চ ২০২৫)