মাগুরায় ধর্ষণের শিকার আট বছরের শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে মাগুরার স্থানীয় বাসিন্দা ও বিশিষ্টজনেরাও ব্যক্ত করেছেন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া।

মাগুরা জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহেদ হাসান টগর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। মেনে নিতে পারছি না। আমরা আইনজীবীর সমিতির পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ধর্ষকদের পক্ষে কোনো আইনি সহায়তা দেওয়া হবে না। দ্রুততম সময়ের মধ্যে ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। এ জন্য আইনজীবী সমিতি সব ধরনের সহায়তা করবে।

জেলা মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক লাবনী জামান জানান, সারাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতা বেড়েই চলেছে। তারই ধারাবাহিকতায় মাগুরায় এ ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। আমরা মহিলা পরিষদের পক্ষ থেকে ধর্ষকের অবিলম্বে ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি। বিচারকাজ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত জেলা মহিলা পরিষদ সবসময় শিশুটির পরিবারের পাশে থাকবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মো.

হুসাইন বলেন, এ ঘটনায় আমরা ক্ষুব্ধ। শিশুটির মৃত্যুর ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে ধর্ষকদের ফাঁসি কার্যকর না হলে মাগুরায় দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলব।

জেলা গণকমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী সম্পা বসু বলেন, এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। ধর্ষকের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা মাঠে থাকব।

মাগুরা শহরের রিকশাচালক আব্দুর রহমান ধর্ষকের প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবি জানান।

এদিকে শিশুটির মৃত্যুর খবরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া গ্রামে। গ্রামের ওহিদুর রহমান নামে এক বাসিন্দা বলেন, আমরা বাকরুদ্ধ। শুধু বলতে চাই, দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচারকাজ সম্পন্ন করে ধর্ষকের ফাঁসি নিশ্চিত করুন।
 
নিহত মেয়েটির প্রতিবন্ধী বাবা ফেরদৌস শেখ শোকে মুহ্যমান। কান্না করতে করতে বললেন, কন্যার হত্যার বিচার চান তিনি।

মাগুরা সদর থানার ওসি আয়ুব আলী জানান, এ ঘটনায় আইনি প্রক্রিয়াধীন। আসামিদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সর্তক রয়েছে পুলিশ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

থাকছে না ‘রিসিভার’, বেক্সিমকো গ্রুপ চলবে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায়

হাজার হাজার শ্রমিক ও কর্মীর স্বার্থ বিবেচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও অন্যান্য সংবিধিবদ্ধ সংস্থার তদারকি এবং যথাযথভাবে আইন মেনে বেক্সিমকো গ্রুপ অব কোম্পানিজকে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চলার অনুমতি দিয়ে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি বেক্সিমকো গ্রুপ অব কোম্পানিজে রিসিভার নিয়োগ এবং সম্পত্তি অ্যাটাচমেন্টে (সংযুক্ত) অন্তর্বর্তীকালীন আদেশের প্রয়োজনীয়তা না থাকায় তা প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এ রায় দেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের দাখিল করা প্রতিবেদন উল্লেখ করে আদালত বলেন, এতে দেখা যায় যে বাংলাদেশ ব্যাংকের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট তফসিলি ব্যাংকগুলো ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো গ্রুপ অব কোম্পানিজের সংশ্লিষ্ট কোম্পানির ক্ষেত্রে খেলাপি ও শ্রেণীকৃত ঋণ আদায়ে তাদের দায়িত্ব পালনে শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হয়েছে; এর পরিণতি শেষ পর্যন্ত সাধারণ মানুষকেই বহন করতে হবে।

রায়ে আদালত বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংক, অন্য সব সংশ্লিষ্ট তফসিলি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বেক্সিমকো গ্রুপ অব কোম্পানিজের ঋণ অনুমোদন সুবিধার ক্ষেত্রে ব্যাংকিং বিধিবিধান লঙ্ঘিত হওয়ায় প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে বেক্সিমকো গ্রুপ অব কোম্পানিজের প্রশ্নবিদ্ধ ঋণসুবিধা দেওয়ায় কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান দায়ী হলে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুসারে ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে নির্দেশ দেওয়া হলো।

আদালতে রিটের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মাসুদ আর সোবহান ও আইনজীবী ফাতেমা এস চৌধুরী শুনানিতে ছিলেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মুনীরুজ্জামান। বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফিদা এম কামাল ও আইনজীবী আনিসুল হাসান শুনানিতে ছিলেন।

রায়ের পর বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনজীবী মুনীরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বেক্সিমকো গ্রুপের ১৮৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৬৯টি পাবলিক/প্রাইভেট কোম্পানি। যার প্রতিটিতে আদালতের আদেশ অনুসারে রিসিভার নিয়োগ দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। রিসিভার কার্যক্রম বৈধ বলা হয়েছে রায়ে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে রিসিভার প্রয়োজন নেই। বেক্সিমকো গ্রুপ নিজেরাই তাদের কোম্পানি পরিচালনা করবে। এ ক্ষেত্রে বেক্সিমকো গ্রুপকে দেশের প্রচলিত আইন–বিধিবিধান যথাযথভাবে মানতে হবে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার তদারকি থাকবে। বেক্সিমকো গ্রুপের খেলাপি ও শ্রেণীকৃত ঋণ আদায়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।’

গত ২৫ বছরে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডসহ সংশ্লিষ্ট কোম্পানির অন্য সব ব্যবসার ক্ষেত্রে পরিশোধের পর ঋণ মওকুফ বিষয়ে তথ্যাদি সরবরাহসহ কয়েকটি বিষয় নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মাসুদ আর সোবহান গত বছরের সেপ্টেম্বরে ওই রিটটি করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। এতে বেক্সিমকো গ্রুপের সব সম্পত্তি সংযুক্ত (অ্যাটাচ) করতে ও গ্রুপটির কোম্পানিগুলোর ব্যবস্থাপনায় ছয় মাসের জন্য ‘রিসিভার’ নিয়োগ দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি অন্তর্বর্তী নির্দেশ দেওয়া হয়। রিসিভার নিয়োগের আদেশ স্থগিত চেয়ে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের পক্ষে আবেদন করা হয়। এর শুনানি নিয়ে গত ১২ নভেম্বর আপিল বিভাগ শুধু বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ক্ষেত্রে রিসিভারের বিষয়টি স্থগিত করেন। পাশাপাশি হাইকোর্টে এ-সংক্রান্ত রুল নিষ্পত্তি করতে বলা হয়। গত বছরের ২৭ নভেম্বর হাইকোর্টে রুলের ওপর শুনানি শুরু হয়, যা গত ২৭ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়। সেদিন শুনানি শেষে আদালত ১২ মার্চ রায়ের জন্য দিন রাখেন। পর্যবেক্ষণ, সিদ্ধান্ত, নির্দেশনাসহ নয়টি পয়েন্ট উল্লেখ করে আজ রুল নিষ্পত্তি করে রায় দেন আদালত।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাগুরার শিশুটির মৃত্যুতে মানুষের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া
  • মাগুরার শিশুটির মৃত্যুতে নানা মহলের মানুষের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া
  • পাবনা-১ আসনে জামায়াতের প্রার্থী নিজামী পুত্র মোমেন
  • ২৩৯ বিডিআর সদস্যের জামিন শুনানি শেষ, আদেশ অপেক্ষমাণ
  • প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা পাবেন ২য় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তার মর্যাদা 
  • সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মোস্তফা রিমান্ডে, নদী কারাগারে
  • সোনারগাঁয়ে আইনজীবীর বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর-লুটপাটের অভিযোগ
  • জামিন পেলেন অভিনেত্রী শমী কায়সার
  • থাকছে না ‘রিসিভার’, বেক্সিমকো গ্রুপ চলবে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায়