রিয়াদের বিদায়ে আবেগঘন বার্তা মাশরাফি-সাকিবদের
Published: 13th, March 2025 GMT
ওয়ানডে ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন অভিজ্ঞ ব্যাটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের অবসরের ঘোষণা দিয়ে দীর্ঘ ১৮ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ইতি টানেন তিনি। তার এই সিদ্ধান্তে আবেগাপ্লুত হয়ে উঠেছেন দেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সোনালি প্রজন্মের সতীর্থরা।
মাশরাফি বিন মর্তুজা তার ফেসবুকে লেখেন, ‘দারুণ এক ক্যারিয়ারের জন্য অভিনন্দন, রিয়াদ। তোর নামের পাশে থাকা পরিসংখ্যানের বাইরেও তুই আমাদের কাছে অনেক বড়। আমরা জানি, তোকে দলে কতটা প্রয়োজন ছিল এবং দলের সেই চাওয়ার সঙ্গে তুই কতটা মিশে গিয়েছিলি। মাঠের ভেতরে-বাইরে তোর সঙ্গে কত স্মৃতি! কত কত আনন্দ আর হতাশায় একাকার হয়েছে আমাদের সময়!’
মাহমুদউল্লাহর অবসর ঘোষণার দিনটিতে মাশরাফির চোখে ভাসছে ২০১৫ সালে অ্যাডিলেডে এবং ২০১৭ সালে কার্ডিফে করা তার সেঞ্চুরি দুটি, ‘অ্যাডিলেইড আর কার্ডিফে তোর সেঞ্চুরির কথা আজ আবার মনে পড়ছে। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান, তোর এই অর্জন কেড়ে নিতে পারবে না কেউ। তবে আশা করি, তোকে আদর্শ মেনে বৈশ্বিক আসরে তোর চার সেঞ্চুরির রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে দেশের অনেকে। বড় মঞ্চে তুই যেভাবে নিজের সেরাটা মেলে ধরেছিস, সেই পথ অনুসরণ করবে প্রজন্মের পর প্রজন্ম।’
পরে অবশ্য শুভ কামনা জানিয়ে মাশরাফি লিখেছেন, ‘ঘরোয়া ক্রিকেটে তোর বাকি দিনগুলি উপভোগ্য হবে আর অবসর জীবন কাটবে আনন্দে, এই কামনা থাকল।’
এদিকে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর থেকেই দেশের বাইরে আছেন সাকিব আল হাসান। দীর্ঘদিন ধরে নীরব থাকলেও মাহমুদউল্লাহর বিদায়ের পর নীরবতা ভাঙলেন তিনি। ফেসবুক পোস্টে সাকিব লিখেছেন, ‘রিয়াদ ভাই, আপনার পাশে খেলা এবং আপনার কাছ থেকে শেখা আমার জন্য সৌভাগ্যের। আপনি মাঠে এবং মাঠের বাইরে উভয় ক্ষেত্রেই উদাহরণ স্থাপন করেছেন এবং আপনার রেকর্ডই কথা বলে। খেলার প্রতি আপনার নিষ্ঠা, সহনশীলতা এবং ভালোবাসার জন্য জাতি আপনার কাছে ঋণী।’
তামিম ইকবাল লেখেন, ‘অসাধারণ আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শেষ করার জন্য অভিনন্দন রিয়াদ ভাই। আপনি ছিলেন দলের অন্যতম স্তম্ভ ও প্রেরণা। ড্রেসিংরুমে কাটানো মুহূর্তগুলো চিরকাল স্মরণীয় থাকবে।’
মুশফিকুর রহিমও স্মৃতিময় বার্তা দিয়ে লিখেছেন, ‘আপনার সঙ্গে মাঠ ভাগ করে নেওয়া ছিল সম্মানের। আপনার দিকনির্দেশনার জন্য ধন্যবাদ।’
২০০৭ সালে ওয়ানডেতে অভিষেক হওয়া মাহমুদউল্লাহ ২৩৯ ম্যাচে করেছেন ৫৬৮৯ রান। আইসিসি ইভেন্টে করা ৪টি সেঞ্চুরি ও ৩২টি হাফসেঞ্চুরির পাশাপাশি বল হাতেও উইকেট নিয়েছেন ১৬৬টি। ৫০টি টেস্টে ৫ সেঞ্চুরিতে ২৯১৪ রান এবং ১২১টি টি-টোয়েন্টিতে করেছেন ২৪৪৪ রান। তার বিদায়ে কার্যত দেশের সাদা বলের ক্রিকেটে ‘পঞ্চপাণ্ডব’ অধ্যায় প্রায় শেষ হয়ে গেল।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ক ব আল হ স ন র জন য আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
এখানেই কি শেষ মাহমুদউল্লাহর
জাতীয় দলের কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বিসিবি গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, মার্চ মাস থেকে চুক্তিতে না রাখার অনুরোধ করেছেন মিডলঅর্ডার এ ব্যাটার। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলায় এ বছর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন পাবেন তিনি। ওয়ানডে থেকে অবসর নেওয়ায় মুশফিকুর রহিম মার্চ থেকে অবনমিত হবেন ‘বি’ ক্যাটেগরিতে। মাহমুদউল্লাহ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়ার ঘোষণা না দিলেও কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার অর্থ হতে পারে জাতীয় দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকছেন না।
টেস্ট ও টি২০ থেকে আগেই অবসর নেওয়ায় শুধু ওয়ানডে খেলতেন ৩৯ বছর বয়সী এ ব্যাটার। তাঁর ওয়ানডে ক্রিকেট ছেড়ে দেওয়ার অর্থ হবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বাই বলে দেওয়া। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ইতি টানার আগে সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল, মাশরাফি বিন মুর্তজাও কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। মাশরাফি আনুষ্ঠানিক বিদায় না বললেও তামিম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন গত জানুয়ারিতে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শেষে ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসর নেন মুশফিক।
গতকাল ঘোষিত ২২ সদস্যের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে সবচেয়ে বেশি বেতন পাবেন তাসকিন আহমেদ। অভিজ্ঞতা ও তিন সংস্করণ খেলার কারণে ‘এ’ প্লাস ক্যাটেগরিতে রাখা হয়েছে তাঁকে। মাসে ১০ লাখ টাকা বেতন টাইগার এ ফাস্ট বোলারের। গত বছর টেস্টের চুক্তিতে ছিলেন না তিনি। ‘এ’ ক্যাটেগরিতে থেকে থাকা ক্রিকেটারের বেতন আট লাখ টাকা। টেস্ট ও ওয়ানডে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত, মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে লিটন কুমার দাস ও মুশফিকুর রহিম আছেন ‘এ’ ক্যাটেগরিতে। গেল বছর তিন সংস্করণের চুক্তিতে ছিলেন লিটন, মিরাজ, শান্ত, শরিফুল ইসলাম ও সাকিব আল হাসান। জাতীয় দলে না থাকায় সাকিব বাদ পড়েছেন। বাঁহাতি পেসার শরিফুলকে ‘এ’ থেকে ‘সি’ ক্যাটেগরিতে অবনমিত করা হয়েছে।
অনেক বছর পর কেন্দ্রীয় চুক্তিতে ফিরেছেন সৌম্য সরকার। ওয়ানডে-টি২০ খেলার কারণে ‘সি’ ক্যাটেগরিতে আছেন তিনি। জাকের আলী তিন সংস্করণে খেলার পরও ‘সি’ ক্যাটেগরিতে রাখেন নির্বাচকরা। পেস বোলার নাহিদ রানাকে সৌভাগ্যবান বলতেই হবে। টেস্ট ও ওয়ানডে খেলা এ ফাস্ট বোলার নতুন হয়েও মাসে ছয় লাখ টাকা বেতন পাবেন।
মুমিনুল হক, তাইজুল ইসলাম, মুশফিকুর রহিম, তাওহীদ হৃদয়, হাসান মাহমুদরাও ছয় লাখ টাকা বেতনের ক্রিকেটার। বাঁহাতি স্পিনার নাসুম ও পেসার খালেদ আহমেদকে রাখা হয়েছে ‘ডি’ ক্যাটেগরি তথা দুই লাখ টাকা বেতন গ্রেডে। মূলত টেস্ট ক্রিকেটারদের বেশি সুবিধা দেওয়া হয়েছে বলে জানান বিসিবির এক কর্মকর্তা। মাহমুদুল হাসান জয়, শাহাদাত হোসেন দিপুকে কেন্দ্রীয় চুক্তির বাইরে রাখার কারণ জানতে চাওয়া হলে একজন পরিচালক বলেন, ‘কে চুক্তিতে থাকবেন, তা ঠিক করেন নির্বাচকরা। তারা যাঁকে এ মুহূর্তের চুক্তিতে রাখা প্রয়োজন বলে মনে করেছেন, তারা আছেন।’