এক হাঁটু ভেঙে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে আলো আঁধারের মধ্যে বসে তাকিয়ে আছেন আফরান নিশো। তার লম্বা চুল, মুখভর্তি সাদা কালো দাড়ি। পিছনে লোহার বেড়ি, যেখানে রক্তের ছাপ লেগে আছে। এমন একটি পোস্টার প্রকাশ হয়েছে ‘দাগি’ সিনেমার। যা দেখে চমকে উঠেছে সিনেমাপ্রেমীরা।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্টারটি প্রকাশের পর নেটিজেনরা ধারণা করছেন, পোস্টারের মতো দাগি সিনেমাজুড়ে নিশো তার নামের সুবিচার করবেন। দু‘দিন আগে ‘দাগি’র এক মিনিটের টিজার রিলিজ হলেও প্রশংসিত হয়। তবে পোস্টার নিয়ে চলছে বেশী মাতামাতি।

জাকির হোসেন জয় নামের একজন লিখেছেন, আফরান নিশো এমন ভয়ংকর এক্সপ্রেশন একদম কড়া লাগছে। টিজারের পর এমন একটা কড়া পোস্টার আসার খুব দরকার ছিল। সুমাইয়া সাথী লিখেছেন, নিশোর এই লুকটা জাস্ট ওয়াও। নিরব মিয়া লিখেছেন, ক্যালেন্ডারের পাতায় দাগ দিয়ে রাখছি। আশা করি মনেও দাগ কেটে যাবে।

প্রকাশিত অফিশিয়াল পোস্টারের ক্যাপশনে লেখা, ‘ক্ষমা চাইতে সাহস লাগে। অনেক ক্ষমতাশালীর পতন ঘটে গেছে ক্ষমা চায় নাই বলে।’

নাটকে তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে ২০২৩ সালে রায়হান রাফী পরিচালিত ‘সুড়ঙ্গ’ সিনেমার মাধ্যমে বড়পর্দায় অভিষেক হয় আফরান নিশোর। দুবছর বিরতি দিয়ে তিনি ফের সিনেমা করছেন। দাগি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন। তিনি জানান, দাগির কেন্দ্রীয় চরিত্রে নিশো। তাকে ঘিরেই এই সিনেমা নির্মিত হয়েছে। এই সময়ের সামাজিক ও প্রাসঙ্গিক সিনেমা ‘দাগি’। এতে আরও অভিনয় করেছেন তমা মির্জা, সুনেরাহ, শহিদুজ্জামান সেলিম, রাশেদ অপু।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আফর ন ন শ

এছাড়াও পড়ুন:

জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা নির্বাচন কমিশনের অধীনে রাখতে মানববন্ধন

জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা নির্বাচন কমিশনের অধীনে রাখতে মানববন্ধন করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।

‎‎বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

‎‎এসময় কর্মকর্তাগণ বলেন, ২০০৭-০৮ সালে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে এবং বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সার্বিক সহযোগিতায় একটি নির্ভুল ও গ্রহণযোগ্য ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রনয়ণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।

নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অক্লান্ত পরিশ্রমে গড়ে ওঠে ৮ কোটি ১০ লক্ষ নাগরিকের ডেমোগ্রাফিক ও বায়োমেট্রিক তথ্য সম্বলিত এক সুবিশাল ভোটার ডেটাবেইজ যা পৃথিবীর ইতিহাসে এক অনন্য নজির।

সর্বশেষ প্রকাশিত চূড়ান্ত ভোটার তালিকা অনুসারে এই ডাটাবেজে প্রায় ১২.৫০ কোটি নাগরিকের তথ্য রয়েছে। টঘউচ-র সমীক্ষা অনুসারে ভোটারদের এই সংগৃহীত ডাটা ৯৯.৭% সঠিক মর্মে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করেছে।

ভোটার তালিকার এই তথ্যভান্ডার থেকেই উপজাত হিসেবে নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান করা হয়ে থাকে। সাম্প্রতিক সময়ে ঘওউ সেবা নির্বাচন কমিশনের আওতা থেকে স্থানান্তরের বিষয়ে বিভিন্ন আলোচনা চলছে। এ প্রেক্ষাপটে নির্বাচন কমিশন নিম্নলিখিত বিষয়গুলো স্পষ্ট করতে চায়। 

‎‎১। সাংবিধানিক ম্যান্ডেট : সংবিধান-এর ১১৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ভোটার তালিকা প্রস্তুতকরণের তত্ত্বাবধান, নির্দেশ ও নিয়ন্ত্রণ নির্বাচন কমিশনের উপর ন্যস্ত। ভোটার তালিকার তথ্যভান্ডার একটি সংবিধানিক দলিল, যা কারও কাছে হস্তান্তর করার সুযোগ নেই।

‎২। ভোটার তালিকা প্রণয়ন প্রক্রিয়া : উচ্চ আদালতের আদেশ অনুসারে, ভোটার তালিকা প্রস্তুতের ক্ষেত্রে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এটি একটি সংবিধানসম্মত ও সুরক্ষিত প্রক্রিয়া, যা ঘওউ কার্যক্রমের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।

‎৩। জাতীয় পরিচয়পত্র ও ভোটার তালিকা : জাতীয় পরিচয়পত্র, ভোটার তালিকার উপজাত (নুঢ়ৎড়ফঁপঃ)। প্রকৃতপক্ষে, জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য আলাদা কোনো তথ্যভান্ডার নেই, এটি শুধুমাত্র ভোটার তালিকা থেকে উদ্ভূত।

‎৪। ডাটাবেজের নিরাপত্তা ও সম্ভাব্য ঝুঁকি : ঘওউ সেবা অন্য সংস্থার অধীনে গেলে ফধঃধ ফঁঢ়ষরপধঃরড়হ ফধঃধনধংব সধহরঢ়ঁষধঃরড়হ এর আশংকা দেখা দিতে পারে। এতে বিদ্যমান পযবপশ ্ নধষধহপব ব্যবস্থা বিনষ্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকবে।

‎৫। গোপনীয়তা ও তথ্য সুরক্ষা : নাগরিকদের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিগত ও গোপনীয় তথ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে আমানত হিসেবে সংরক্ষিত। সাংবিধানিকভাবে কমিশন এই তথ্য অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করতে পারে না। এটি নাগরিকদের তথ্য সুরক্ষার প্রশ্নেও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

‎৬। জনগণের বিপুল অর্থের সাশ্রয় : জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা নির্বাচন কমিশনে থাকায় এবং কমিশনের একই জনবল দ্বারা এই কার্যক্রম সম্পাদনের ফলে দেশ ও সরকারের জন্য এটি একটি সাশ্রয়ী সেবায় পরিণত হয়েছে।

আলাদা কোন কর্তৃপক্ষ তৈরি করা হলে জনবল, স্থাপনা ও অন্যান্য অবকাঠামো তৈরিতে জনগণের বিপুল অর্থের অপচয় হবে যা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

‎৭। ভোটার নিবন্ধনে নেতিবাচক প্রভাব : জাতীয় পরিচয়পত্র নির্বাচন কমিশন হতে অন্যত্র স্থানান্তর করা হলে শুধুমাত্র ভোটার হওয়ার জন্য জনগণের আগ্রহ ও উদ্দীপনায় নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি হবে যা ভবিষ্যতে নির্বাচন ব্যবস্থা ও গণতন্ত্রকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে। উপরন্তু নির্বাচন কমিশন নিজস্ব উদ্ভাবনী কার্যক্রমের স্বীকৃতি হারালে নতুন কোন উদ্ভাবনে (রহহড়াধঃরড়হ) প্রতিষ্ঠানিকভাবে নিরুৎসাহিত হবে।

‎৮। ভোটার তালিকার শুদ্ধতা নিয়ে সন্দেহ: নির্বাচন কমিশন থেকে ঘওউ কার্যক্রম সরিয়ে নেওয়া হলে ভোটার তালিকার নির্ভুলতা নিয়ে রাজনৈতিক দল ও সাধারণ জনগণের মধ্যে সংশয় তৈরি হতে পারে। ফলে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতা হুমকির মুখে পড়বে।

‎৯। রাজনৈতিক দলগুলোর অভিমত : অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ২০২৩ সালের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন বাতিল করে ঘওউ কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের অধীনে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়ে আসছে। এতে স্পষ্ট যে, নির্বাচন কমিশনের অধীনে ঘওউ কার্যক্রম পরিচালিত হওয়াই সর্বজনস্বীকৃত ও গ্রহণযোগ্য ব্যবস্থা।

‎সর্বপরি আমরা মনে করি, জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকাই সংবিধানসম্মত, নিরাপদ ও কার্যকর ব্যবস্থা। আমরা সকল অংশীজনের সহযোগিতা কামনা করছি, যাতে ভোটার তালিকা ও জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত কার্যক্রম যথাযথভাবে পরিচালিত হতে পারে এবং জনগণের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত থাকে।

‎‎এসময় উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন অফিসার মোঃ রাকিবুজ্জামান, সহকারী প্রোগ্রামার মোঃ রিয়াজুল আলম, উপজেলা নির্বাচন অফিসার আফরোজা খাতুন সহ  মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, মোঃ মনির হোসেন, মোঃ ইসমাইল, রাখি প্রমুখ।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ