ওয়ারী থেকে ‘নিখোঁজ’ মা-ছেলে দুদিনেও উদ্ধার হননি
Published: 13th, March 2025 GMT
রাজধানীর ওয়ারী থেকে ‘নিখোঁজ’ হওয়ার দুই দিন পরও শিশুসহ মাকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
স্ত্রী-সন্তানের গত মঙ্গলবার নিখোঁজের কথা জানিয়ে ব্যবসায়ী হুমায়ুন কবির ওয়ারী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
হুমায়ুন কবির বলেন, মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে তাঁর স্ত্রী শিশুপুত্রকে নিয়ে ওয়ারীর ওয়ার স্ট্রিট এলাকার একটি স্কুলে যান। দুপুর ১২টার দিকে পরীক্ষা শেষে ছেলেকে নিয়ে তাঁর স্ত্রীর বাসায় ফেরার কথা ছিল; কিন্তু কেউ বাসায় ফেরেনি। পরে তিনি তাঁর স্ত্রীর মুঠোফোন নম্বরে কল দিলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। স্থানীয় সিসিটিভির ফুটেজে দেখা গেছে, মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে তাঁর স্ত্রী ছেলেকে নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছেন।
হুমায়ুন কবির আরও বলেন, মঙ্গলবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে একটি অপরিচিত নম্বর থেকে তাঁর ছেলের নানির মুঠোফোনে কল আসে। বলা হয়, ‘আপনার নাতির সঙ্গে কথা বলেন।’ তখন তাঁর ছেলে তার নানিকে বলে, ‘আমরা নিরাপদে আছি।’ এ কথার পরই মুঠোফোনের লাইন কেটে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুনওয়ারীতে স্কুল থেকে ফেরার পথে মা–ছেলে নিখোঁজ১৮ ঘণ্টা আগেএ ঘটনায় পুলিশ অভিযোগ গ্রহণ করলেও মামলা হিসেবে নেয়নি। হুমায়ুন কবির মনে করেন, এটি অপহরণের ঘটনা। তিনি স্ত্রী-সন্তানকে উদ্ধারে র্যাবের কাছেও অভিযোগ দিয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে যোগাযোগ করা হলে ওয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়সাল আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, মা-ছেলে যে ব্যক্তির কাছে আছে, তার নাম ও সম্ভাব্য অবস্থান সম্পর্কে পুলিশ জানতে পেরেছে। তিনি আশা করছেন, আজকের মধ্যে মা-ছেলেকে উদ্ধার করতে সক্ষম হবেন তাঁরা।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সারাদেশে আজ ‘রাইজ ইন রেড’ কর্মসূচি কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের
সারাদেশে আজ শনিবার ‘রাইজ ইন রেড’ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে কারিগরি ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ। দেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের মূল ফটক অনির্দিষ্টকালের জন্য লাল কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হবে আজ। একযোগে বেলা ১১টা ৩০ মিনিট থেকে শান্তিপূর্ণভাবে এ কর্মসূচি পালন করা হবে। পাশাপাশি ছয় দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না করে সড়কের দুই পাশে বা গুরুত্বপূর্ণ স্থানে শিক্ষার্থীরা প্ল্যাকার্ড হাতে মানববন্ধন করবেন।
সরকারের সঙ্গে আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পর কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। এর অংশ হিসেবে শুক্রবার সারাদেশে কাফনের কাপড় পরে ছয় দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন আন্দোলনকারীরা। বরিশালে মহাসড়ক অবরোধ এবং চট্টগ্রামে কফিন মিছিল হয়েছে। এ ছাড়া সিলেট, রাজশাহী, বগুড়া, দিনাজপুর, রংপুর, কুমিল্লা ও ময়মনসিংহে বিক্ষোভ করেছেন তারা। আজ ‘রাইজ ইন রেড’ কর্মসূচি পালনের কথা জানানো হয়েছে।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে জুমার নামাজের পর ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা কাফন মিছিল বের করেন। তেজগাঁওয়ের সাতরাস্তা এলাকায় মিছিলে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের অনেকের পরনে ও মাথায় ছিল কাফনের কাপড় বাঁধা। মিছিল থেকে বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়। স্লোগানের মধ্যে ছিল– ‘মামা থেকে মাস্টার, মামাবাড়ির আবদার’, ‘এক হও এক হও, পলিটেকনিক এক হও’, ‘ষড়যন্ত্রের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘কুমিল্লায় হামলা কেন, প্রশাসন জবাব দাও’।
কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি মাসফিক ইসলাম বলেন, সচিবালয়ে বৈঠক করে ব্যবস্থা নিতে বলেছিলাম। কিন্তু সেসবের কোনো বাস্তবায়ন নেই। বৃহস্পতিবার আমাদের কর্মসূচি শিক্ষা উপদেষ্টার আহ্বানে শিথিল করা হয়। কিন্তু বৈঠকে গিয়ে দেখি শিক্ষা উপদেষ্টাও নেই, সচিবও নেই। তাই আমরা দাবি আদায়ে জনদুর্ভোগ না হয়, এমন কঠোর কর্মসূচিতে যাব। বুধবার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা সড়ক, মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। পরে বৃহস্পতিবার তারা সারাদেশে ‘রেল ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তবে শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের ঘোষণায় কর্মসূচি শিথিল করেন তারা। বৈঠকে সন্তুষ্ট না হতে পেরে আবারও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা।
দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও মহাসড়ক অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। বরিশাল ব্যুরো জানায়, ছয় দাবিতে গতকাল দুপুরে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন আন্দোলনরত কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এ সময় কয়েক শিক্ষার্থী কাফনের কাপড় পরে সড়কের ওপর শুয়ে পড়েন। দুপুর ২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত দেড় ঘণ্টা নগরের সরকারি হাতেম আলী কলেজসংলগ্ন চৌমাথায় মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন তারা। ফলে কুয়াকাটাসহ দক্ষিণাঞ্চলের পাঁচ জেলায় দূরপাল্লা রুটের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশের হস্তক্ষেপে শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক ছেড়ে যান।
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ছয় দফা দাবিতে কফিন মিছিল করেছেন চট্টগ্রামের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।