মুড়ি তৈরির রেসিপির ছবি বা ভিডিও পাঠিয়ে পুরস্কার জেতার সুযোগ
Published: 13th, March 2025 GMT
বাঙালি খাদ্যসংস্কৃতিতে বছরের পর বছর ধরে যেসব খাবার ঐতিহ্য ধরে রেখেছে, সেগুলোর মধ্যে নিঃসন্দেহে মুড়ি অন্যতম। গ্রামীণ জীবনে যেমন মিশে রয়েছে গুড়ের সঙ্গে মুড়ির স্বাদ, নাগরিক জীবনের চায়ের আড্ডাতেও কিন্তু বাদ যায়নি মুড়ি। তবে একেক অঞ্চলে মুড়ি খাওয়া হয় একেকভাবে। উত্তরাঞ্চলের সরলতায় যেমন মিশে আছে ‘মুড়ির মোয়া’, তেমনি পুরান ঢাকার ঐতিহ্য হলো ‘শাহী মুড়িমাখা’। আর গ্রামবাংলায় মেলা মানেই তো মুড়ি–মুড়কির পসরা।
আর আমাদের দেশে পবিত্র রমজান মাসজুড়েই ইফতারের প্রধান উপকরণ হিসেবে যুগ যুগ ধরে রয়েছে মুড়ি। স্বাস্থ্যসম্মত, ধুলাবালু ও ইউরিয়ামুক্ত মুড়ি দিয়েই ইফতার করতে চান সবাই। ছোলার সঙ্গে মুড়িমাখা ছাড়া যেন ইফতার কল্পনাই করা যায় না। কেউ জিলাপি আর বুন্দিয়ার সঙ্গে মিষ্টি মুড়িমাখা খেতে পছন্দ করেন, আবার কেউ জিলাপি আর মুড়িমাখা একসঙ্গে যেন ভাবতেই পারেন না। অনেকেই আবার বিভিন্ন ধরনের মসলা বানিয়ে ভাজাভুজির সঙ্গে মিশিয়ে তৈরি করেন ঝাল ঝাল মুড়িমাখা। কেউ কেউ সাদামাটাভাবে দইয়ের সঙ্গে মুড়ি মিলিয়েই ইফতার সেরে ফেলতে ভালোবাসেন।
বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রচলিত মুড়ি দিয়ে বানানো হরেক রকমের রেসিপি সংগ্রহে আয়োজন করা হয়েছে বিশেষ ক্যাম্পেইন ‘রুচি ইফতারে মুড়ি’। ‘রুচি মুড়ি’ ব্র্যান্ডের উদ্যোগটির সহযোগিতায় রয়েছে প্রথম আলো ডটকম।
আপনার অঞ্চলের জনপ্রিয় অথবা নিজের পছন্দের মুড়ির রেসিপির ছবি অথবা ভিডিও পাঠিয়ে অংশ নিতে পারেন এই ক্যাম্পেইনে। জমা হওয়া রেসিপির মধ্যে থেকে বিজয়ী ১০ জন পাবেন আকর্ষণীয় পুরস্কার।
অংশগ্রহণের নিয়মাবলি১.
২. তৈরি করা রেসিপিটির মূল উপকরণ হিসেবে অবশ্যই মুড়ি থাকতে হবে।
৩. রেসিপিটির নাম, উপকরণ ও প্রস্তুতপ্রণালি উল্লেখ করে সেটির ছবি অথবা ভিডিওটি হ্যাশট্যাগ #RuchiIftareMuri দিয়ে পোস্ট করতে হবে নিজ ফেসবুক প্রোফাইলে।
৪. এরপর পোস্টটির লিংক পাঠাতে হবে [email protected]এ। ই-মেইলে অবশ্যই প্রতিযোগীর নাম, ঠিকানা ও মুঠোফোন নম্বর উল্লেখ করতে হবে।
৫. রেসিপির উপস্থাপন, বিশেষত্ব, ফেসবুকে লাইক, কমেন্ট ও শেয়ারের ভিত্তিতে বিজয়ী নির্ধারিত হবেন।
৬. অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ১০ জন বিজয়ী পাবেন রুচির পক্ষ থেকে আকর্ষণীয় পুরস্কার।
৭. প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের শেষ সময়: ২০ মার্চ ২০২৫, বৃহস্পতিবার রাত ১২টা।
৮. প্রতিযোগিতা-সংক্রান্ত সব বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইফত র
এছাড়াও পড়ুন:
টেসলা কতটা ‘মেড ইন আমেরিকা’
যুক্তরাষ্ট্রে এখন ব্যবসা নিয়ে অনেক আলাপ শোনা যাচ্ছে। কোন প্রতিষ্ঠান কতটা আমেরিকান, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। অন্য দেশের আমদানির ওপরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সহযোগী ইলন মাস্কের টেসলা গাড়ি এই সময় সবচেয়ে বেশি চাপের ওপরে রয়েছে। টেসলার বিভিন্ন কারখানায় যুক্তরাষ্ট্রের গাড়ি উৎপাদন করা হলেও অন্য সব দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে টেসলা বিভিন্ন যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করে বলে জানা যায়।
যুক্তরাষ্ট্রে টেসলার বিস্তৃত কারখানা নেটওয়ার্কের মাধ্যমে গাড়ি উৎপাদন করা হচ্ছে। ক্যালিফোর্নিয়ার ফ্রেমন্ট টেসলার প্রধান কারখানা। এখানে মডেল এস, মডেল ৩, মডেল এক্স এবং মডেল ওয়াইয়ের মতো গাড়ি সংযোজন করা হয়। নেভাদার গিগাফ্যাক্টরিতে প্যানাসনিকের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে একটি প্ল্যান্ট রয়েছে টেসলার। এখানে লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি সেল, পাওয়ারওয়াল ও মেগাপ্যাকের মতো শক্তি সঞ্চয়কারী পণ্য তৈরি করে টেসলা। টেক্সাসের গিগাফ্যাক্টরিতে সাইবারট্রাক এবং মডেল ওয়াই তৈরি করা হচ্ছে। নিউইয়র্কের গিগাফ্যাক্টরিতে প্রাথমিকভাবে সৌর প্যানেল উৎপাদনের জন্য প্রতিষ্ঠিত করা হলেও এখন জ্বালানির বিভিন্ন পণ্য ও উদ্ভাবন নিয়ে কাজ করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে টেসলার কারখানা রয়েছে। চীনের গিগাফ্যাক্টরি সাংহাই ২০১৯ সালে চালু হয়। এখানে মডেল ৩ ও মডেল ওয়াই নির্মাণ করা হচ্ছে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে টেসলার প্রথম কারখানা। এখানকার গাড়ি চীনের বাজারসহ ইউরোপ ও এশিয়ায় রপ্তানি করা হচ্ছে। জার্মানিতে আছে গিগাফ্যাক্টরি বার্লিন-ব্রান্ডেনবার্গ। ২০২২ সালে হওয়া এই ফ্যাক্টরিতে মডেল ওয়াই নির্মাণ করা হচ্ছে। জার্মান প্রকৌশল ও স্থায়িত্বের ওপর গুরুত্ব দিয়ে এই কারখানা চালু করা হয়। এখানে স্থানীয়ভাবে ব্যাটারি তৈরি করা হচ্ছে।
এ ছাড়া মেক্সিকো ও ভারতে টেসলার কারখানা চালুর কথা রয়েছে। কানাডায় টেসলার ব্যাটারি তৈরির ব্যবস্থা আছে। এখানে ৪৬৮০ ব্যাটারি সেল তৈরি হচ্ছে। এ ছাড়া যুক্তরাজ্য টেসলার ফ্যাক্টরি ভবিষ্যতে তৈরির কথা শোনা যায়। ব্যাটারি উপকরণের জন্য টেসলা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। লিথিয়াম, কোবাল্ট, গ্রাফাইট এবং নিকেলের জন্য চীনের গানফেং লিথিয়াম ও হুয়ায়ু কোবাল্টের মতো কোম্পানি টেসলার প্রধান সরবরাহকারী।
টেসলার লিথিয়াম সংগ্রহ করছে অস্ট্রেলিয়া থেকে। অস্ট্রেলিয়া বিশ্বের বৃহত্তম লিথিয়াম উৎপাদক। টেসলার পিলবারা মিনারেলস এবং মিনারেল রিসোর্সের মতো কোম্পানির সঙ্গে অংশীদারত্ব রয়েছে। নিকেল ও কোবাল্টের জন্য টেসলা পরিবেশবান্ধব উপায়ে কাঁচামাল সংগ্রহের জন্য কানাডার খনি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি সই করেছে। টেসলাকে ভ্যালে কানাডা কম কার্বনযুক্ত নিকেল সরবরাহ করে। কঙ্গো প্রজাতন্ত্র থেকে টেসলার জন্য কোবাল্ট সংগ্রহ করা হচ্ছে। টেসলা তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে এসব খনিজ উপাদান সংগ্রহ করছে।
টেসলার অটো যন্ত্রাংশ ও উপাদান বিশ্বের নানা দেশ থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে। ওয়্যারিং, প্লাস্টিকের যন্ত্রাংশ ও ধাতব উপাদান মেক্সিকো থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে। জার্মানির গিগাফ্যাক্টরি বার্লিন টেসলা মোটর এবং ড্রাইভ ইউনিটের জন্য উপাদান তৈরি করছে। টেসলা ও জাপানের প্যানাসনিক যৌথভাবে গিগাফ্যাক্টরি নেভাদায় ব্যাটারি সেল তৈরি করছে। এ ছাড়া জাপানের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ইলেকট্রনিকস ও সেন্সর ব্যবহার করে টেসলা। দক্ষিণ কোরিয়ার এলজি এনার্জি সলিউশন ও স্যামসাং এসডিআইয়ের কাছ থেকে টেসলা ব্যাটারি উপাদান ও ডিসপ্লে প্রযুক্তি গ্রহণ করছে। ভারতের টাটা অটোকম্প, সোনা কমস্টার ও ভারত ফোর্জের মতো কোম্পানি টেসলার ডিফারেনশিয়াল সিস্টেম এবং ছোট প্লাস্টিকের যন্ত্রাংশের মতো উপাদান সরবরাহ করে।
টেসলার গাড়িতে ব্যবহৃত বিরল মৃত্তিকা উপাদান ও বিশেষায়িত উপকরণ সংগ্রহ করা হচ্ছে ব্রাজিল থেকে। ইন্দোনেশিয়া থেকে নিকেল সংগ্রহ করা হচ্ছে। ইন্দোনেশিয়া বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় নিকেল উৎপাদকদের মধ্যে অন্যতম। টেসলা সুইডেন থেকে গ্রিন ইস্পাত ও বিরল মৃত্তিকা সংগ্রহ করছে।
সূত্র: সিএনবিসি, রয়টার্স, ন্যাসড্যাক