ব্যবসায়ীর পুরুষাঙ্গ কর্তনের মামলায় ৭ হিজড়া কারাগারে
Published: 13th, March 2025 GMT
কুষ্টিয়ার মিরপুরে কাপড় ব্যবসায়ী শিপন আলীকে (৩৯) কৌশলে অপহরণ করে পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলার মামলায় অভিযুক্ত ৭ হিজড়াকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
বুধবার (১২ মার্চ) দুপুরে কুষ্টিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মামুনুর রহমান এ আদেশ দেন।
আসামিরা হলেন- কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ওয়াপদা সাইকেল স্ট্যান্ড এলাকার দুর্লভ প্রামাণিকের ছেলে ইমন ওরফে নেহা (২৮), একই এলাকার সোহেল রানার ছেলে বাঁধন ওরফে বেলী (২৬), আব্দুর রহমানের ছেলে মিজান ওরফে আঁখি (৩৬), নজু জোয়াদ্দারের ছেলে মিন্টু ওরফে ফুলি (২৮), মৃত জাহাঙ্গীরের ছেলে আলামিন ওরফে পানি (২৯), ইয়ার আলীর ছেলে হৃদয় ওরফে পাখি (২১) ও আকবার আলীর ছেলে জাফর ওরফে সোনালী (২৬)।
বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন, তিনি একজন ভ্রাম্যমাণ কাপড় ব্যবসায়ী। কাপড় বিক্রয়ের সুবাদে নেহা, আঁখি ও বেলী নামের আসামিদের সঙ্গে তার পরিচয় হয় এবং সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। তারা মাঝেমধ্যেই তার নিকট থেকে নগদ ও বাকিতে কাপড় ক্রয় করত।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বিকেল আনুমানিক ৪টার দিকে নেহা, আঁখি, বেলী, ফুলি ও পানি কুষ্টিয়া শহরের চৌড়হাস এলাকায় আসেন এবং তার নিকট থেকে পাঁচটি শাড়ি ক্রয় করেন। ক্রয়কৃত শাড়ির টাকা নেওয়ার জন্য তাকে তাদের সঙ্গে মিরপুর এলাকায় যেতে বলেন।
তিনি কাপড় নিয়ে আসামিদের সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে সেদিন বিকেল আনুমানিক ৫টার দিকে মিরপুরের ওয়াপদা এলাকায় এক নম্বর আসামি নেহার বসতবাড়িতে পৌঁছান। তারা শাড়ির বাকি টাকা পরিশোধ করে দেন।
একপর্যায়ে আসামিরা তাকে খাবার খেতে দিলে তিনি সরল বিশ্বাসে খাবার খান। কিছুক্ষণ পর তার মাথা ঝিমঝিম করতে থাকে এবং অচেতন হয়ে পড়েন। পরবর্তীতে রাতে তার জ্ঞান ফিরলে তিনি দেখতে পান যে, দুই নম্বর আসামি বেলির হাটুর ওপর মাথা রেখে তিনি শুয়ে আছেন এবং অন্যান্য আসামিরা তার আশপাশে বসে আছেন।
তখন তিনি বুঝতে পারেন যে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে তার পুরুষাঙ্গ কর্তন করে অপারেশন করে তাকে তৃতীয় লিঙ্গে রুপান্তর করেছে। তখন তিনি ভীষণ অসুস্থ অবস্থায় আসামিদের এমন কার্যকলাপের কারণ জিজ্ঞাসা করলে তারা কোনো সদুত্তর দেয়নি। বরং তাকে অবৈধভাবে জোরপূর্বক নেহার বাড়িতে আটক করে রাখে।
এভাবে দীর্ঘদিন আটক থাকার পর সুযোগ বুঝে কৌশলে গত ৩ মার্চ সেখান থেকে পালিয়ে আসেন এবং ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন।
এ বিষয়ে মিরপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম বলেন, “কাপড় ব্যবসায়ীর পুরুষাঙ্গ কর্তনের ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলার ৭ আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ঢাকা/কাঞ্চন/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবস ন ওরফ
এছাড়াও পড়ুন:
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকেরা উন্নীত হচ্ছেন দশম গ্রেডে
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের (প্রশিক্ষিত ও অপ্রশিক্ষিত) দশম গ্রেডে উন্নীত করতে ও দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে অফিশিয়াল গেজেটে অন্তর্ভুক্ত করতে দেওয়া নির্দেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।
এ–সংক্রান্ত রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন নিষ্পত্তি করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ আজ বৃহস্পতিবার এ সিদ্ধান্ত দেন। এতে কর্মরত ৩০ হাজার প্রধান শিক্ষকের দশম গ্রেডে উন্নীত হওয়ার পথ সুগম হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষকদের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. সালাহ উদ্দিন দোলন।
আইনজীবীর তথ্য অনুসারে, ২০১৪ সালের ৯ মার্চ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করার ঘোষণা দেন। সেদিনই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করলেও পরে মন্ত্রণালয় প্রশিক্ষিত প্রধান শিক্ষকদের জন্য ১১তম ও অপ্রশিক্ষিত প্রধান শিক্ষকদের জন্য ১২তম গ্রেড নির্ধারণ করে, যা বৈষম্যমূলক উল্লেখ করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির তৎকালীন সভাপতি রিয়াজ পারভেজসহ ৪৫ শিক্ষক রিট করেন।
রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে ৪৫ জন রিট আবেদনকারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে (প্রশিক্ষিত ও অপ্রশিক্ষিত) দশম গ্রেডে উন্নীত করতে ও দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে অফিশিয়াল গেজেটে অন্তর্ভুক্ত করাসহ তিনটি নির্দেশনা দেওয়া হয়। এর বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে রাষ্ট্রপক্ষ, যা ২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি খারিজ হয়। এই রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে একই বছর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তি করে সিদ্ধান্ত দেন আপিল বিভাগ।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক। শিক্ষকদের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন।
রায়ের পর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন প্রথম আলোকে বলেন, প্রধান শিক্ষক পদটি দ্বিতীয় শ্রেণির হলেও তাঁরা বেতন পান ১১তম ও ১২তম গ্রেডে। অথচ দ্বিতীয় শ্রেণির অন্য সব সরকারি চাকরিজীবী দশম গ্রেডে বেতন পান। ফলে সরকারি প্রধান শিক্ষকদের মর্যাদা দিলেও তাঁদের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে (প্রশিক্ষিত ও অপ্রশিক্ষিত) দশম গ্রেডে উন্নীত করতে ও দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তার মর্যাদা দিতে হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশ দুটি বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। ফলে তাঁরা সবাই দশম গ্রেড পাবেন এবং দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তার মর্যাদা পাবেন। আপিল বিভাগের রায়ের সুবিধা সংশ্লিষ্ট সবাই পাবেন বলে আশা করেন জ্যেষ্ঠ এই আইনজীবী।