আগামী শনিবার সারা দেশে ৬ থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুদের ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। সেদিন প্রায় ২ কোটি ২৬ লাখ শিশুকে এই ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। আজ বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশের সব শিশুর সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ১৫ মার্চ ভিটামিন এ ক্যাপসুল ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হবে। সেদিন ১ লাখ ২০ হাজার স্থায়ী ইপিআই কেন্দ্রের মাধ্যমে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।

যাঁদের ঘরে ৬ মাস থেকে ৫ বছর বয়সী শিশু আছে, সেসব মা–বাবা ও অভিভাবকদের তাঁদের শিশুদের কাছের ইপিআই টিকাদান কেন্দ্র, কমিউনিটি ক্লিনিক ও অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে নিয়ে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়াতে আহ্বান জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।

ভিটামিন এ শুধু অন্ধত্ব প্রতিরোধ করে না, পাশাপাশি পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মৃত্যুর হারও প্রায় এক–চতুর্থাংশ কমিয়ে আনে।

আরও পড়ুনশিশুর ভিটামিন এ কেন দরকার২৫ জুন ২০২৩

১৯৭৪ সালে রাতকানা রোগ প্রতিরোধে শিশুদের ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো শুরু হয়। বর্তমানে ভিটামিন এ–এর অভাবে রাতকানা রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা প্রায় নেই বললেই চলে।

ইতিমধ্যে জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে বছরে দুবার ৯৮ শতাংশ শিশুদের ভিটামিন এ খাওয়ানো হয়।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

স্কুলের জমি দখলে ছুটির দিনে প্রাচীর ভেঙে দিলেন বিএনপি নেতা

রাজশাহীর বাঘায় স্কুলের জমি দখলে নিতে স্থানীয় এক বিএনপি নেতা ছুটির দিনে সীমানা প্রাচীর গুঁড়িয়ে দিয়েছেন। বিএনপির ওই নেতা দাবি করছেন, এই জমি তার বাবার কেনা সম্পত্তি। এতদিন আওয়ামী লীগের লোকজন স্কুলের নাম করে জমিটি দখলে রেখেছিলেন। তারা উদ্ধার করেছেন।

এই বিএনপি নেতার নাম আমজাদ খাঁ। তিনি বাঘা পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি। তার ভাই আমিরুল খাঁ বাঘা পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক। তাদের বাড়ি বাঘার নারায়ণপুর গ্রামে। বাড়ি থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরের বাজুবাঘা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সঙ্গে তাদের জমি নিয়ে বিরোধ। স্কুলের জমির পাশে তাদের আমবাগান আছে।

রমজান মাস উপলক্ষে এখন স্কুল ছুটি। এ অবস্থায় গত ৫ মার্চ সকালে আমজাদ খাঁ এবং তার ভাই আমিরুল খাঁ ৩০-৪০ জন লোক নিয়ে গিয়ে বাজুবাঘা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উত্তর-পশ্চিম কোণের প্রায় ১০০ ফুট সীমানা প্রাচীর ভেঙে ফেলেন। 

খবর পেয়ে স্কুলে ছুটে যান প্রধান শিক্ষক আবদুল মান্নান। তিনি স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মীর মো. মামুনূর রহমানকে বিষয়টি অবহিত করেন।

শিক্ষা কর্মকর্তা তখন বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাম্মী আক্তারকে জানান। ইউএনও এরপর বিএনপি নেতা আমজাদ খাঁকে ফোন করে প্রাচীর ভাঙতে নিষেধ করেন। এরপর তারা একটি প্রাচীর ভেঙেই চলে যান। এর ফলে ৫৩ শতক জায়গা ‘উদ্ধার’ হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার বিকেলে জানিয়েছেন বিএনপি নেতা আমজাদ খাঁ।

তিনি বলেন, ‘‘আমার বাপে ১৯৫০ সালে এই জমি কিনেছেন। ১৯৭৪ সালে জমির রেকর্ড হয়েছে আমাদের নামে। তারপর থেকে আমরা খাজনা দিয়ে আসছি। জমি আমাদের দখলেও ছিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরে দলের পান্ডারা স্কুলের নামে আমাদের জায়গা দখল করে নেয়। আমরা প্রাচীর ভেঙে জায়গা উদ্ধার করেছি। আমরা স্কুলের জমি দখল করিনি।’’

তবে স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবদুল মান্নান বলছেন, “স্কুল প্রতিষ্ঠা হয়েছে ১৯৭২ সালে। তারপর তাসেন প্রামাণিক নামের এক ব্যক্তির এক দাগের ৯৪ শতক জায়গার মধ্যে স্কুল কেনে ৩৭ শতক। বাকিটা কেনেন আমজাদ খাঁ’র বাবা। কিন্তু তারা পুরো জমিটাই তাদের নামে রেকর্ড করে নিয়েছেন।”

প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘এতদিন জমি নিয়ে কোনো ঝামেলা হয়নি। তাই আমরাও মাথা ঘামাইনি। দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর আমজাদ খাঁ ক্ষমতা দেখিয়ে জমি দখল করেছেন। আমি শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। সরকারি সার্ভেয়ারের মাধ্যমে জমি মাপজোখ করা হবে।”

গত ১১ মার্চ স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মীর মো. মামুনূর রহমান এক চিঠিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাম্মী আক্তারকে সার্বিক বিষয় জানিয়েছেন। তিনি সার্ভেয়ার দিয়ে স্কুলের জমি পরিমাপে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।

শিক্ষা কর্মকর্তা মীর মো. মামুনূর রহমান বলেন, ‘‘স্কুলের জমি নিয়ে ঝামেলা হচ্ছে। একটা গ্রুপ দাবি করে যে, স্কুলের ভেতর তাদের জমি আছে। আমরা ইউএনও বরাবর আবেদন জানিয়েছি জমিটা মাপজোখ করার জন্য। মাপজোখের পর বিষয়টার মীমাংসা হয়ে যাবে বলে আশা করছি।’’

বাঘার ইউএনও শাম্মী আক্তার বলেন, ‘‘আমাকে জানানো হয় যে কেউ একজন জমি দখল করছে। কারা ভাঙছে নাম জানতে চাইলে সেটা আমাকে জানানো হয়। আমি তাকে ফোন করে প্রাচীর ভাঙতে নিষেধ করি। তারপর তিনি এসে দাবি করেন যে, জমি তাদের। এ অবস্থায় শিক্ষা কর্মকর্তা জমিটা মাপজোখের উদ্যোগ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। আমি এসি ল্যান্ডকে দায়িত্ব দিয়েছি। আগামী সপ্তাহে হয়তো সরকারি সার্ভেয়ার দিয়ে জমি মাপা হবে।’’

ঢাকা/কেয়া/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ