পাল্টা জবাবে রাশিয়ার এক কূটনীতিককে বহিষ্কার করল যুক্তরাজ্যে
Published: 13th, March 2025 GMT
প্রায় তিন বছরে ধরে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ইউক্রেনকে সহায়তা দিয়ে আসছে যুক্তরাজ্য। এই পরিস্থিতিতে ক্রমাগত দুই দেশের মধ্যে কূটনীতিক বহিষ্কার ও পাল্টা বহিষ্কারের ঘটনা উঠে আসছে।
কিছুদিন আগেই যুক্তরাজ্যের দুই কূটনীতিকের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ এনে তাদেরকে মস্কো থেকে বহিষ্কার করে রাশিয়া। আর এবার এর পাল্টা জবাব হিসেবে, যুক্তরাজ্যে তাদের দেশ থেকে রাশিয়ার এক কূটনীতিক ও তার স্ত্রীকে বহিষ্কার করেছে। খবর এপির।
যুক্তরাজ্য সরকার বুধবার (১২ মার্চ) জানিয়েছে, তারা এই সপ্তাহের শুরুতে মস্কোতে দুই ব্রিটিশ দূতাবাস কর্মীকে বহিষ্কারের প্রতিক্রিয়া হিসেবে একজন রাশিয়ান কূটনীতিক এবং তার স্ত্রীকে বহিষ্কার করেছে।
আরো পড়ুন:
যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনায় মস্কো যাচ্ছেন মার্কিন প্রতিনিধিরা
যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব অমান্য করলে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে: ট্রাম্প
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত রাশিয়ান রাষ্ট্রদূত আন্দ্রেই কেলিনকে তলব করে বহিষ্কারের বিষয়টি অবহিত করেছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, গত বারো মাস ধরে রাশিয়া ব্রিটিশ কূটনীতিকদের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান আক্রমণাত্মক এবং সমন্বিত হয়রানি চালিয়েছে, তাদের কাজ সম্পর্কে বিদ্বেষপূর্ণ এবং সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলেছে।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, রাশিয়া এসব পদক্ষেপের মাধ্যমে মস্কোতে ব্রিটিশ দূতাবাস বন্ধ করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র সচিব এক্স-এ একটি পোস্টে বলেছেন, “আমরা ক্রেমলিনের ভীতি প্রদর্শনের অবিরাম এবং অগ্রহণযোগ্য প্রচারণা এবং যুক্তরাজ্যের নিরাপত্তার জন্য হুমকি দেওয়ার তাদের বারবার প্রচেষ্টা সহ্য করব না।”
গত সোমবার (১০ মার্চ) যুক্তরাজ্যের দুই কূটনীতিককে বহিষ্কারের ঘোষণা দিয়ে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বিভাগ দাবি করে, রাশিয়ায় অবস্থিত দুই ব্রিটিশ কূটনীতিক সেদেশে ঢোকার অনুমতি পাওয়ার পর মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করেছেন। তাদের গুপ্তচরবৃত্তি ও ধ্বংসাত্মক কাজের আলামত মস্কোর হাতে রয়েছে, যা রাশিয়ার নিরাপত্তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
রাশিয়ার এই পদক্ষেপ ৩ দিনের মধ্যে পাল্টা পদক্ষেপে জবাব দিল যুক্তরাজ্য।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, “রাশিয়া যে গভীরতায় ডুবে গেছে তা কেবল শক্তির মাধ্যমেই পূরণ করা যেতে পারে। আমরা এই ঘটনার অধীনে একটি রেখা টেনেছি এবং রাশিয়াকে একই কাজ করার দাবি জানাচ্ছি। রাশিয়ার দ্বারা গৃহীত পরবর্তী যেকোনো পদক্ষেপকে উত্তেজনা বৃদ্ধি হিসেবে বিবেচনা করা হবে এবং সেই অনুযায়ী প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।”
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর থেকে পশ্চিমা দেশগুলো ও রাশিয়ার মধ্যে পাল্টাপাল্টি কূটনীতিক বহিষ্কারের ঘটনা ক্রমশ সাধারণ হয়ে উঠেছে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক টন ত ক পদক ষ প
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাজ্যের দুই কূটনীতিককে বহিষ্কারের ঘোষণা রাশিয়ার
যুক্তরাজ্যের দুই কূটনীতিকের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ এনে আজ সোমবার তাঁদের দুই সপ্তাহের মধ্যে রাশিয়া ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে মস্কো। এতে করে ইউরোপের সঙ্গে খারাপ হতে থাকা রাশিয়ার সম্পর্ক আরও অবনতি হলো। তবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে উদ্যোগ নিয়েছে ওয়াশিংটন-মস্কো।
নিজেদের কূটনীতিকদের বিরুদ্ধে রাশিয়ার আনা অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’ বলে তা প্রত্যাখ্যান করেছে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তর।
যুক্তরাষ্ট্র ফিরিয়ে নিলেও ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দেওয়া অব্যাহত রেখেছে যুক্তরাজ্য। দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার সম্প্রতি বলেছেন, তাঁরা ইউক্রেনে শান্তি রক্ষার জন্য সেনা পাঠানো ও উড়োজাহাজ দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন। যুক্তরাজ্যের এসব পদক্ষেপ ও ঘোষণা রাশিয়াকে ক্ষুব্ধ করেছে।
রাশিয়া এমন এক সময়ে যুক্তরাজ্যের কূটনীতিকদের বহিষ্কার করতে যাচ্ছে, যার মাত্র কয়েক দিন আগে রাশিয়ার হয়ে গোয়েন্দাগিরি করার অভিযোগে বুলগেরিয়ার তিন ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন লন্ডনের একটি আদালত। বুলগেরিয়ার এই তিন ব্যক্তি জান মার্সালেক পরিচালিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান ওয়্যারকার্ডের সহায়তাপুষ্ট রাশিয়ার একটি গোয়েন্দা ইউনিটে কাজ করতেন। তাঁরা মস্কোর নিশানা করা যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক ঘাঁটি ও কিছু ব্যক্তির ওপর নজরদারি করতেন। প্রসঙ্গত, ওয়্যারকার্ড বর্তমানে একটি দেউলিয়া প্রতিষ্ঠান। আর অস্ট্রিয়ার নাগরিক জান মার্সালেক পলাতক।
ওয়াশিংটন-মস্কোর সম্পর্ক ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করার পর থেকে এবারই প্রথমবারের মতো দুই পশ্চিমা কূটনীতিককে বহিষ্কারের ঘোষণা দিল রাশিয়া। তবে ২০২২ সালে ইউক্রেনে হাজার হাজার সেনা পাঠানোর পর রাশিয়া ও পশ্চিমা দেশগুলো দফায় দফায় পাল্টাপাল্টি কূটনীতিক বহিষ্কার করেছে।
রাশিয়ার কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বিভাগ বলেছে, ‘এই দুই ব্রিটিশ কূটনীতিক আমাদের দেশে ঢোকার অনুমতি পাওয়ার পর মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করেছেন। তাঁদের “গুপ্তচরবৃত্তি ও ধ্বংসাত্মক কাজের আলামত” আমাদের হাতে আছে, যা রাশিয়ার নিরাপত্তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য রাশিয়ার গোয়েন্দা বিভাগ প্রয়োজনীয় সবকিছু করছে।’
মস্কোর সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তর এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমাদের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে রাশিয়ার বিদ্বেষপ্রসূত ও ভিত্তিহীন অভিযোগ এটাই প্রথম নয়।’