অনুমতি লাগবে না, প্রকল্প পরিচালকেরা টাকা খরচ করতে পারবেন। এ জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় কিংবা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কোনো অনুমতি লাগবে না।

অর্থ বিভাগ গত মঙ্গলবার হিসাব মহানিয়ন্ত্রককে (সিজিএ) চিঠি দিয়ে এ কথা জানিয়েছে। প্রতি অর্থবছরেই মার্চ বা এপ্রিলে অর্থ বিভাগ এ ধরনের চিঠি দিয়ে থাকে। এ বরাদ্দের এই টাকা প্রকল্পের পুরো অর্থবছরের শেষ কিস্তি বা চতুর্থ কিস্তির বরাদ্দ হিসেবে পরিচিত।

অর্থ বিভাগ চিঠিতে বলেছে, প্রকল্প পরিচালকেরা নিজেরাই প্রকল্পের অনুকূলে বরাদ্দের টাকা খরচ করতে পারবেন এবং তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ছাড় হয়েছে বলে গণ্য হবে। তবে সংশোধিত অননুমোদিত প্রকল্পসহ স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রকল্পের অর্থছাড়ের ক্ষেত্রে অর্থ বিভাগের জারি করা ২০১৮ সালের নির্দেশিকা মেনে চলতে হবে।

অতীতের মতো এবারও সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (আরএডিপি) আকার কমেছে ৪৯ হাজার কোটি টাকা। সংশোধিত এডিপির আকার দাঁড়াল ২ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা। সংশোধিত এডিপিতে প্রকল্পের সংখ্যা ১ হাজার ৪৩৭। প্রতিটি প্রকল্পের অনুকূলে বরাদ্দ নির্ধারণ করা থাকে। সেই বরাদ্দ অনুসারে চার কিস্তিতে অর্থ ছাড় করা হয়। আগে অর্থ বিভাগ ও প্রকল্প–সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক বিভাগের অনুমোদন নেওয়ার বাধ্যবাধকতা ছিল।

কাজে গতি আনার জন্য প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তির অর্থছাড়ের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল প্রকল্প পরিচালকদের। তবে তৃতীয় কিস্তির অর্থ ছাড় করতে প্রকল্প–সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক বিভাগের অনুমোদন নেওয়ার প্রয়োজন হতো।

কিন্তু এরপর প্রকল্প পরিচালকেরা অভিযোগ করেন, প্রকল্পের কাজে ধীরগতি আসছে না এবং টাকা ছাড়ের ক্ষেত্রে তাঁদের নানা ধরনের হয়রানির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এসব কেনাকাটা, বিল–ভাউচারের শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে অর্থ বিভাগের অনুমোদনক্রমে অর্থ ছাড় করার নিয়ম ছিল। এ পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে অর্থ বিভাগ অর্থছাড়ে সংস্থাগুলোকে এখতিয়ার দিয়ে প্রথম প্রজ্ঞাপন জারি করে ২০২০ সালে। এর ধারাবাহিকতা এখনো চলছে।

তবে প্রকল্পের শুল্ক, ভ্যাট ও ভূমি অধিগ্রহণ বাবদ ব্যয়ে যে অর্থের প্রয়োজন হবে, তা প্রকল্প পরিচালকেরা ছাড় করতে পারবেন না বলে জানা গেছে। প্রকল্প সাহায্যের বর্তমান নিয়ম বহাল থাকবে। অর্থাৎ ঋণ ও অনুদানের ক্ষেত্রে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার শর্ত ও সরকারের সংশ্লিষ্ট নীতিমালার শর্ত মানতে হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রকল প র ছ ড় কর বর দ দ

এছাড়াও পড়ুন:

ভারত থেকে শুল্ক ফাঁকি ও চোরাচালানের মাধ্যমে শাড়ি ও থ্রি-পিস দেশে আসছে

ভারত থেকে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে ও চোরাচালানের মাধ্যমে শাড়ি, টু-পিস, থ্রি-পিস, লেহেঙ্গা ইত্যাদি পোশাক দেশে আসছে—এমনটাই বলছে সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি)। তারা বলছে, স্থানীয় বাজারে যে পরিমাণ ভারতীয় টু-পিস, থ্রি-পিস, লেহেঙ্গা, জামদানি ও তাঁত শাড়ি বিক্রি হয়, সে তুলনায় বৈধ আমদানি অনেক কম। মূলত আমদানির ক্ষেত্রে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে বা চোরাচালানের মাধ্যমে এসব পণ্যের একটি বড় অংশ দেশীয় বাজারে নিয়ে আসা হচ্ছে।

বিদেশি কাপড় ও পোশাক আমদানিতে শুল্ক ফাঁকি ও চোরাচালান রোধে বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত তাঁত ও জামদানি শাড়ি, থ্রি–পিসসহ অন্যান্য পোশাকের বাজার সংরক্ষণ করা যায়। বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের এক প্রতিবেদনে এমন কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনটি আজ সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানকে পাঠিয়েছে ট্যারিফ কমিশন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে বর্তমানে কাপড়ের চাহিদা প্রায় ৮০০ কোটি মিটার। কাপড়ের এই চাহিদার একটি অংশ দেশীয় তাঁত, হস্তশিল্প ও পাওয়ারলুমের মাধ্যমে পূরণ হয়। তবে বিদেশ থেকে বৈধ ও অবৈধভাবে (শুল্ক ফাঁকি ও চোরাচালান) প্রবেশ করা কাপড় ও পোশাকের একটি বড় অংশ দেশীয় চাহিদা মেটায়।

ট্যারিফ কমিশন বলছে, দেশে সাধারণত ভারত, পাকিস্তান, চীন, মিয়ানমার, হংকং, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, জাপান ও অন্যান্য দেশ থেকে কাপড় আমদানি হয়। গত ২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে যথাক্রমে ১৩ হাজার কোটি ও ১৩ হাজার ৬৩৫ কোটি টাকার শাড়ি আমদানি হয়। এর মধ্যে ভারত থেকে আসে যথাক্রমে ২৮২ ও ২৫৮ কোটি টাকার শাড়ি। এ ছাড়া গত ২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে উল্লিখিত দেশগুলো থেকে যথাক্রমে ২ হাজার ১৭৯ কোটি ও ১ হাজার ৫৩১ কোটি টাকার টু-পিস, থ্রি-পিস, লেহেঙ্গা ইত্যাদি পোশাক আমদানি হয়। এর মধ্যে ভারত থেকে আমদানি হয় যথাক্রমে ১১৬ ও ৭৬ কোটি টাকার পোশাক।

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে গত ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৭ হাজার ৯৩০ কোটি টাকার শাড়ি আমদানি হয়েছে। তার মধ্যে ভারত থেকে এসেছে ১০৬ কোটি টাকার শাড়ি। এ ছাড়া চলতি অর্থবছরের ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬৫৮ কোটি টাকার টু-পিস, থ্রি-পিস, লেহেঙ্গা ইত্যাদি পোশাক আমদানি হয়েছে। এর মধ্যে ভারত থেকে এসেছে ১৭ কোটি টাকার পণ্য।

ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় বাজারে যে পরিমাণ ভারতীয় টু-পিস, থ্রি-পিস, লেহেঙ্গা, জামদানি ও তাঁত শাড়ি বিক্রি হয়, সে তুলনায় বৈধ আমদানি অনেক কম। এসব পণ্যের আমদানি পর্যায়ে যে শুল্কায়নযোগ্য মূল্য ঘোষণা করা হয়, তা বাজারজাত করা মূল্যের তুলনায় অনেক কম।

স্থানীয় শিল্পের সুরক্ষায় ট্যারিফ কমিশনের সুপারিশ হচ্ছে টু-পিস, থ্রি-পিস, লেহেঙ্গা, শাড়িসহ সব ধরনের কাপড় ও পোশাক আমদানিতে বা ব্যাগেজ রুলসে আনা এসব পণ্যে ব্যবহৃত এইচএস কোডে যথাযথ শুল্কায়নের জন্য এনবিআর আমদানি–সংশ্লিষ্ট সব শুল্কস্টেশনকে বিশেষ নির্দেশনা দিতে পারে। এসব পণ্য আমদানিতে মিথ্যা ঘোষণা পরিহারের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন শুল্ক ভবন বা স্টেশন দিয়ে আমদানি করা সব ধরনের কাপড় ও পোশাকের শুল্কায়নকালে সংশ্লিষ্ট পণ্য পরীক্ষাকারী কাস্টমস কর্মকর্তার পাশাপাশি তৃতীয় কোনো এজেন্সির (শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর) উপস্থিতিতে শতভাগ পণ্য পরীক্ষা সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেওয়া যেতে পারে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সংশোধিত বরাদ্দের অতিরিক্ত কোন ব্যয় বিল না নেওয়ার নির্দেশ
  • কারিগরি ক্ষতিতে বাড়ছে গ্যাস অপচয়
  • সার্কভুক্ত দেশের বাণিজ্য, কে বেশি লাভবান, বাংলাদেশ নাকি ভারত
  • অর্থসংকটে সরকার, বাড়ছে না বাজেটের আকার
  • প্রকল্প বদলাতে পারেনি ভিক্ষুকের ভাগ্য
  • চট্টগ্রাম সিটিতে ৮ মাসে রাজস্ব আদায় মাত্র ৪০%, গাফিলতির অভিযোগে শোকজ
  • উত্তরা ব্যাংকের পর্ষদ সভার তারিখ ঘোষণা
  • সুদ পরিশোধে সরকারের ব্যয় বেড়েছে ২৭ শতাংশ
  • ভারত থেকে শুল্ক ফাঁকি ও চোরাচালানের মাধ্যমে শাড়ি ও থ্রি-পিস দেশে আসছে