সাত বছর আগে রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের এক ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন বহিষ্কৃত উপ-সচিব এবং ওই কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ এ কে এম রেজাউল করিম ওরফে রতন (৫৩)।

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক মুন্সি মো.

মশিয়ার রহমান অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি মর্মে রেজাউল করিমকে খালাসের রায় দেন।

রায় ঘোষণার আগে রেজাউল করিমকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।
রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর এরশাদ আলম (জর্জ) বলেছেন, “এ রায়ে আমরা অসন্তুষ্ট। এর বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।”

বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের অভিযোগে ওই ছাত্রী ২০১৮ সালের ২৮ জুলাই রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০১৯ সালের ১৩ জানুয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তেজগাঁও নারী সহায়তা ও তদন্ত বিভাগের পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) কুইন আক্তার।

চার্জশিটে বলা হয়, এ কে এম রেজাউল করিম ২০১৬ সালের ১২ মে থেকে ২০১৮ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোহাম্মদপুর সরকারি কলেজের প্রিন্সিপাল হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ভিকটিম ২০১৬ সালের জুনে কলেজে ভর্তি হন। এর সুবাদে আসামির সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ভিকটিমের মোবাইর নাম্বার নেন এ কে এম রেজাউল করিম। তিনি ভিকটিমকে আশ্বস্ত করেন যে, তাকে কলেজের কোনো ফি দিতে হবে না। একপর্যায়ে রেজাউল করিম ভিকটিমের মন জয় করেন এবং তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখান। ২০১৭ সালের ১২ জুন রেজাউল করিম ভিকটিমকে কলেজে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেন। তাকে স্ত্রী পরিচয়ে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়। ২০১৮ সালের ২৬ মার্চ রেজাউল করিম ভিকটিমকে ফোন করে জানান, তার প্রমোশন হয়েছে। তাকে (ভিকটিম) সঙ্গে নিয়ে বাসা দেখতে যাবেন। ধানমন্ডি এলাকায় বাসা দেখার কথা বলে তাকে আবার ধর্ষণ করা হয়।

২০১৯ সালের ২৫ জুন আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। মামলার বিচার চলাকালে আদালত ১৩ সাক্ষীর মধ্যে ৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।

ঢাকা/মামুন/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কল জ র

এছাড়াও পড়ুন:

পাঁচ বছর পর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন

ঘুড়ি উৎসব, লাঠিখেলা, সাপখেলা, নাগরদোলা, পুতুলনাচ—এমন নানা আয়োজনে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাজানো হচ্ছে চৈত্রসংক্রান্তি ও বাংলা বর্ষবরণ উৎসব। গ্রামীণ ঐহিত্য আর খুলনার আঞ্চলিক বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে আয়োজিত ওই উৎসব হচ্ছে দীর্ঘ প্রায় পাঁচ বছর পর। ২০১৯ সালে সর্বশেষ এমন পরিপূর্ণ আয়োজন করতে পেরেছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

তবে এবার নিরাপত্তার কারণে ক্যাম্পাসের বাইরে শোভাযাত্রা না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তারা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ২০ বছরের বেশি সময় ধরে ভিন্নধর্মী বিভিন্ন আয়োজনের মধ্য দিয়ে দুই দিনব্যাপী উৎসব উদ্‌যাপন করা হয়ে থাকে। ১৩ এপ্রিল (বাংলা ৩০ চৈত্র) উদ্‌যাপন করা হয় চৈত্রসংক্রান্তি আর পরের দিনে বাংলা বর্ষবরণ। রকমারি গ্রামীণ খেলাধুলা ও উৎসবের মধ্য দিয়ে দিন দুটি উদ্‌যাপন করা হয়। কিন্তু ২০২০ সাল থেকে শুরু হওয়া কোভিড এবং পরে পয়লা বৈশাখের সময় রোজা, ছুটিসহ বিভিন্ন কারণে গত পাঁচ বছর বাংলা বর্ষবরণে বড় কোনো আয়োজন ছিল না। কোনো রকম একটা আয়োজনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকতা শেষ করা হতো। তবে এবার আয়োজনে পরিপূর্ণতা রয়েছে। প্রায় সব ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।

চৈত্রসংক্রান্তি উৎসব শুরু হবে আজ রোববার বিকেল ৪টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে হবে বিভিন্ন গ্রামীণ খেলা, ঘুড়ি উৎসব ও আলপনা উৎসব। সন্ধা ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত পুতুলনাচ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। পরদিন পয়লা বৈশাখে সকাল সোয়া ৭টায় বর্ষ আবাহন, সকাল ৯টায় খেলার মাঠে মেলার উদ্বোধন, ১০টায় আনন্দ শোভাযাত্রা ও বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এ ছাড়া দিনব্যাপী থাকবে লাঠিখেলা, জাদু প্রদর্শনী, নাগরদোলাসহ বিভিন্ন আয়োজন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌথভাবে দুই দিনব্যাপী ওই উৎসবের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীরা। আর্থিক সহায়তা করে বিশ্ববিদ্যালয়। শোভাযাত্রার আয়োজন করার দায়িত্ব থাকে চারুকলা স্কুলের (অনুষদ) ওপর। পবিত্র রোজা ও ঈদের ছুটি শেষে বিশ্ববিদ্যালয় খুলেছে ৬ এপ্রিল। ৭ এপ্রিল ইসরায়েলবিরোধী সমাবেশের কারণে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ছিল। এরপর সিদ্ধান্ত নিয়ে উৎসব আয়োজনের কাজ শুরু করা হয়েছে।

গত শনিবার দুপুরের দিকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, চারুকলা স্কুল (অনুষদ) চত্বরে হরিণ, মুখোশসহ বিভিন্ন কিছু বানানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন শিক্ষার্থীরা। শেষ মুহূর্তে হাতের ছোঁয়া বুলিয়ে আরও সুন্দর করার চেষ্টা চলছে সবকিছুতে।

সেখানে কাগজের মণ্ডের মুখোশ বানানোর কাজে ব্যস্ত ছিলেন ভাস্কয ডিসিপ্লিনের (বিভাগ) শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার হোসেন ও তৃতীয় বর্ষের সংগীত পাল। আবরার হোসেন বলেন, গত কয়েক বছর রোজা ও ঈদের ছুটির কারণে বড় কোনো অনুষ্ঠান করা যায়নি। ২০১৯ সালের পর এবারই বর্ষবরণের যে উৎসব, সেটি পরিপূর্ণভাবে উদ্‌যাপন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এবার অবশ্য ঢাকার সঙ্গে সংগতি রেখে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রার’ নাম পরিবর্তন করে ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’ করা হয়েছে। কোনো কিছু পরিবর্তন করে যদি ভালোকিছু হয়, তাহলে সেটাই সবাই গ্রহণ করবে। নাম দিয়ে আসলে তেমন কিছু হয় না, উদ্‌যাপনে উৎসবটা থাকলেই হলো।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বর্ষবরণ উপলক্ষে তৈরি করা হচ্ছে শোভাযাত্রার মাসকট সুন্দরবনের ঐতিহ্য হরিণ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারতে আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িত সন্দেহভাজন নীরব মোদির সহযোগী চোকসি বেলজিয়ামে গ্রেপ্তার
  • ৬ বছর পর পাবিপ্রবির বর্ষবরণে বাঙালি সংস্কৃতির ছোঁয়া
  • পাঁচ বছর পর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন