ভারতের হরিয়ানার পৌর ভোটে বিজেপির বিপুল জয়, কংগ্রেস পর্যুদস্ত
Published: 13th, March 2025 GMT
বিধানসভা নির্বাচনে বিস্ময়কর জয়ের পর ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের ১০ পৌরসভার মেয়র নির্বাচনেও বিজেপির জয়জয়কার। রাজ্যে ক্ষমতাসীন বিজেপি ১০টির মধ্যে ৯টিতেই বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছে। মানেসর পৌরসভা বিজেপি দখল করতে না পারলেও সেখানে জয়ী হয়েছেন বিজেপির বিক্ষুব্ধ প্রার্থী ইন্দ্রজিৎ যাদব। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। গতকাল বুধবার ফলাফল প্রকাশের পর দেখা গেল, কংগ্রেস একটি পৌরসভাও দখল করতে পারেনি।
বিজেপি জিতেছে পানিপথ, রোহতক, হিসার, কারনাল, আম্বালা, সোনিপত ও যমুনানগরের পাশাপাশি দিল্লি লাগোয়া গুরুত্বপূর্ণ গুরুগ্রাম ও ফরিদাবাদ পৌরসভা।
বিপুল এ জয়ের পরেই মুখ্যমন্ত্রী নায়েব সিং সৈনি বলেন, লোকসভা ও বিধানসভার নির্বাচনের পর পৌরসভাতেও জিতিয়ে হরিয়ানার মানুষ বুঝিয়ে দিলেন, তাঁরা ‘ট্রিপল ইঞ্জিন’ সরকারের পক্ষে। এভাবে হরিয়ানার জনতা প্রধানমন্ত্রীর ‘বিকশিত ভারত’–এর স্বপ্ন সত্যি করবে।
এই ভোটের ফলাফল বুঝিয়ে দিল, বিধানসভায় অপ্রত্যাশিত পরাজয়ের ধাক্কা রাজ্য কংগ্রেস এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি। গত বছর বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস পুরোপুরি নির্ভর করেছিল জাট নেতা ও সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দর সিং হুডার ওপর। উপেক্ষিত হয়েছিলেন দলিত নেত্রী কুমারী শৈলজাসহ অন্য অনগ্রসর নেতা–নেত্রীরা। অতিরিক্ত জাটনির্ভরতার দরুণ জাতপাত সর্বস্ব হরিয়ানার অ-জাট জনতা বিজেপির পাশে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। ফলে ১০ বছর ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও বিজেপি জিতে যায়। প্রমাণিত হয়, বিজেপির মোকাবিলায় গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের ধাক্কা কংগ্রেস এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি।
গোষ্ঠী কোন্দল সামলাতে ব্যর্থ বলেই কংগ্রেস এখনো ঠিক করে উঠতে পারেনি, বিধানসভায় বিরোধী নেতা কাকে করা হবে। এ পরিস্থিতিতে পৌরসভার ভোটের ধাক্কা তাদের আরও কোণঠাসা করে দিল। কংগ্রেসের পাশাপাশি আম আদমি পার্টি, সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমপ্রকাশ চৌতালার দল আইএনএলডি ও বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে সরকার গড়া সাবেক উপমুখ্যমন্ত্রী দুষ্মন্ত চৌটালার দল জেজেপিও পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম খ যমন ত র ব ধ নসভ প রসভ
এছাড়াও পড়ুন:
শরীয়তপুরের জাজিরায় আবারও সংঘর্ষ, মুহুর্মুহু ককটেল বিস্ফোরণ
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় শতাধিক ককটেল (হাতবোমা) বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
গতকাল রোববার দুপুরে জয়নগর ইউনিয়নের ছাব্বিশপারা এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়। এতে এক তরুণের হাতের কব্জিতে গুরুতর ক্ষত হয় এবং আরও একজন আহত হন।
জাজিরা থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জয়নগর ইউনিয়নের ছাব্বিশপারা এলাকায় তেজগাঁও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিঠুন ঢালী ও জয়নগর ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হালিম তালুকদারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলছে। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর এই দুই নেতা আত্মগোপনে গেলে স্থানীয় পর্যায়ে তাদের পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন জসিম তালুকদার ও নুর আলম সরদার।
রোববার দুপুরে দুই পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র ও ককটেল নিয়ে সংঘর্ষের প্রস্তুতি নেয়। এ সময় নুর আলম সরদারের অনুসারীরা প্রতিপক্ষের ওপর ককটেল বোমা নিক্ষেপ করে। এরপর উভয় পক্ষ ঘণ্টা-ব্যাপী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। চলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ককটেল বিস্ফোরণ ও মারামারি। পরে পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
সংঘর্ষের কিছু দৃশ্য স্থানীয় এক ব্যক্তির সিসিটিভি ক্যামেরায় ধারণ হয়, যা ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ৪ মিনিট ৪৪ সেকেন্ডের সেই ভিডিওতে দেখা যায়, এক পক্ষের সমর্থকরা বালতিতে করে ককটেল নিয়ে প্রতিপক্ষের দিকে নিক্ষেপ করছেন। তাদের হাতে ছিল টেঁটা, রামদা, ছেনদা, বল্লম, ডাল-সুরকি ও অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র।
সম্প্রতি জাজিরার বিলাশপুরে সংঘর্ষের ঘটনায় খইয়ের মতো ককটেল বিস্ফোরণ দেশজুড়ে আলোচিত হয়। গত ৫ এপ্রিল সেখানে দুই শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে, যা এখনও আলোচনায় রয়েছে। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটলো ছাব্বিশপারা এলাকায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুলাল আখন্দ বলেন, গতকাল দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বেশ কিছু হাতবোমা বিস্ফোরিত হয় বলে জানতে পেরেছি। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।