চলে গেলেন সময়ের চেয়ে এগিয়ে থাকা ভারতীয় ক্রিকেটার সৈয়দ আবিদ আলী
Published: 13th, March 2025 GMT
মিডিয়াম পেসার, এটাই ছিল তাঁর মূল পরিচয়। তবে সৈয়দ আবিদ আলী নামটা শুনলেই সেই পরিচয় ছাপিয়ে সামনে চলে আসে তাঁর দুর্দান্ত ফিল্ডিং ও ক্ষিপ্র গতির রানিং বিটুইন দ্য উইকেটের কথা। ফিল্ডিংয়ে ‘সময়ের চেয়ে এগিয়ে থাকা’ ভারতের সাবেক এই ক্রিকেটার আর নেই। ১৯৬৭ থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত ভারতের হয়ে ২৯টি টেস্ট খেলা এই ক্রিকেটার বুধবার ৮৩ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় মারা গেছেন।
আবিদ আলীর ক্যারিয়ারের সবচেয়ে স্মরণীয় মুহূর্তটা এসেছিল ১৯৭১ সালে ওভালে। বল হাতে নয়, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভারতের জয়সূচক রানটা এসেছিল তাঁর ব্যাট থেকেই। আবিদ আলী স্কয়ার কাট করতেই জয়ের উল্লাসে হুড়মুড়িয়ে মাঠে ঢুকে পড়েছিল হাজারো ভারতীয় সমর্থক। সিরিজে শেষ সেই ম্যাচটা জিতে তিন ম্যাচের সিরিজটা জিতে নেয় ভারত। ইংল্যান্ডের মাটিতে ভারতের সেটিই ছিল প্রথম সিরিজ জয়।
ভারতের ওয়ানডে ইতিহাসের প্রথম পাঁচটি ম্যাচই খেলা আবিদ আলী ছিলেন ১৯৭৫ বিশ্বকাপের দলে। বিশ্বকাপে ভারতের প্রথম ছক্কাটি এসেছে তাঁর ব্যাট থেকেই। ২৯ টেস্টের ক্যারিয়ারে মাত্র ৪৭টি উইকেট পেলেও শুরুটা ছিল দুর্দান্ত। ১৯৬৭ সালে অ্যাডিলেডে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট অভিষেকে প্রথম ইনিংসেই ৬ উইকেট পেয়ে যান। টেস্ট অভিষেকে ভারতের কোনো পেসারের সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড হিসেবে এখনো টিকে আছে যা।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে কোচিংয়ে সৈয়দ আবিদ আলী.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
পাকিস্তান যুগে বর্ষবরণ
বঙ্গীয় নববর্ষের স্বাতন্ত্র্য কোথায়? ছদ্মনামা লেখক এ বি এম ইংরেজি ১৯৬৭ সালে ‘পাকিস্তান অবজারভার’-এর পয়লা বৈশাখ ক্রোড়পত্রে লিখেছেন, ‘ঈদের উদ্যাপন হয় পুরো মুসলিম জাহানে,’ খ্রিষ্টান নিউ ইয়ার-এর প্রথা তো এ দেশে ব্রিটিশদের আমদানি; ‘বছরে শুধু একটা দিনই আমাদের গ্রামগুলো বিশেষ বঙ্গীয় রং আর উৎসবের চিহ্নে সেজে ওঠে।’ বাংলা নববর্ষ যেহেতু বিশেষভাবে দেশজ, অন্য কোনো উৎসবের সঙ্গে এর তুলনা হতে পারে না।
পাকিস্তান যুগের সংবাদপত্রে বঙ্গীয় নতুন সন উদ্যাপনের যে ভাষ্য ধরা পড়েছে, সেগুলোর ওপর ভর করে এই লেখায় আমার কাজ তিনটি। প্রথমত, এটা ব্যাখ্যা করা যে ঠিক কোন অর্থে বাংলা বর্ষপঞ্জির মহল বা তালুক হচ্ছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয়ত, কীভাবে বর্ষপঞ্জির প্রথম দিন উদ্যাপনের প্রথা আধুনিক অর্থে ‘ঐতিহ্য’ হয়ে উঠল। এবং সর্বশেষে নববর্ষের সঙ্গে ইসলামের সম্পর্কের প্রশ্নটিকে কীভাবে ফায়সালা করা হয়েছিল। বাংলা সন একান্তভাবে দেশজ—এ বি এমের এই দাবি সামান্য সঠিক হলেও সুনির্দিষ্টভাবে কথাটির মানে পাকিস্তান যুগে ছিল এই যে, বাংলা সন নির্দিষ্টভাবে বাংলার ভূগোলের মধ্যে প্রবিষ্ট। বাংলা সনের যে হিজরি এবং মোগল নছব, সেটার জিকির সূত্রে পঞ্চাশের দশক থেকেই এই ভূগোল বা স্থানিকতার কথাটা উঠতে থাকে। মোগল যুগে দরবারি বর্ষপঞ্জি হিজরি হলেও ‘পাকিস্তান অবজারভার’ তাদের ১৯৫৫ সালের নববর্ষ প্রতিবেদন-এ জানাচ্ছে: কৃষিভিত্তিক পূর্ববঙ্গে—যেখানে প্রকৃতির অলঙ্ঘ্য নিয়মে ষড়ঋতু ৩৬৫ দিন ঘিরে আবর্তিত—চান্দ্রমাসের হিজরি সন বিশৃঙ্খলা ঘটাতে বাধ্য। অর্থাৎ, একদিকে বাংলার প্রকৃতির আবর্তন এবং সেই প্রকৃতির সঙ্গে জড়িয়ে থাকা শ্রমের নানা রকম ধরন, আর অন্যদিকে হিজরি সনের, মধ্যে একটি অসামঞ্জস্য আছে। মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরীর সিধা জবানে: চান্দ্রমাসের হিজরি সন মেনে তারিখ ঠিক করলে ‘তাহা প্রত্যেক বৎসর ফসল তোলার সময়ের সাথে মেলে না।’ (১৯৬৯)
১৩৭৩ বঙ্গাব্দের (১৯৬৭ সাল) পয়লা বৈশাখে রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ