গাজার বাসিন্দাদের বাস্তুচ্যুত করার পরিকল্পনা থেকে সরে আসার ইঙ্গিত
Published: 13th, March 2025 GMT
গাজার বাসিন্দাদের বাস্তুচ্যুত করার পরিকল্পনা থেকে সরে আসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার (১২ মার্চ) হোয়াইট হাউজে আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাইকেল মার্টিনের সঙ্গে এক বৈঠকে ট্রাম্প এমন ইঙ্গিত দেন। তিনি বলেন, ‘কেউ গাজা থেকে কোনো ফিলিস্তিনিকে বের করে দিচ্ছে না।’
একজন সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন।
ট্রাম্পের এমন মন্তব্য প্রেসিডেন্টের পূর্বে প্রস্তাবিত পরিকল্পনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মনে হচ্ছে। খবর রয়টার্সের।
আরো পড়ুন:
যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনায় মস্কো যাচ্ছেন মার্কিন প্রতিনিধিরা
যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব অমান্য করলে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে: ট্রাম্প
এর আগে ট্রাম্প বলেছিলেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গাজার মালিকানা নিবে। ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীকে অন্য জায়গায় স্থানান্তর করা হবে এবং এই অঞ্চলটিকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভেরা’ হিসেবে গড়ে তুলবে।”
গাজায় ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে একটি ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রাথমিক পর্যায়ে ফেব্রুয়ারিতে ট্রাম্পের এমন প্রস্তাব ব্যাপক আন্তর্জাতিক নিন্দা কুড়ায়। ফিলিস্তিনিদের তাদের বাড়িঘর থেকে স্থায়ীভাবে বিতাড়িত হওয়ার আশঙ্কাকে আরো জোরদার করেছিলেন ট্রাম্প।
এ ঘটনার পর মিসর, জর্দান এবং উপসাগরীয় আরব দেশগুলো সতর্ক করে জানায়, এই ধরনের পরিকল্পনা পুরো অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করতে পারে। প্রতিক্রিয়ায় আরব রাষ্ট্রগুলো গাজার পুনর্গঠনের জন্য ৫৩ বিলিয়ন ডলারের মিসরীয় পরিকল্পনা গ্রহণ করে, যার ফলে ফিলিস্তিনিদের স্থানচ্যুতি এড়ানো যাবে।
গাজার পুনর্গঠন নিয়ে আলোচনার জন্য গতকাল বুধবার আরব দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা কাতারে মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফের সঙ্গে বৈঠক করেন। এতে ট্রাম্পের পরিকল্পনার স্পষ্ট বিরোধিতা করা হয়।
বৈঠকে কাতার, জর্ডান, মিসর, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এবং প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (পিএলও) মহাসচিব অংশ নেন। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, আরব দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা গাজার পুনর্গঠন পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। মিসরের কায়রোয় ৪ মার্চ আরব লীগের সম্মেলনে এই পরিকল্পনা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের স্থায়ীভাবে উচ্ছেদের প্রস্তাব থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরে আসার বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছে হামাস। ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠনটির মুখপাত্র হাজেম কাসেমি এক বিবৃতিতে বলেন, “যদি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বক্তব্য গাজা উপত্যকার জনগণকে বাস্তুচ্যুত করার ধারণা থেকে সরে আসার প্রতিনিধিত্ব করে, তাহলে তাদের স্বাগত জানানো হবে।”
অন্যদিকে, হামাসের হাতে থাকা বাকি জিম্মিদের মুক্তি দিতে হামাসকে বাধ্য করতে কিছুদিন আগে গাজায় বিদ্যুৎ ও ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। গাজায় প্রবেশের অনুমতি না পাওয়ায় মিশর সীমান্তে শত শত ত্রাণবাহী ট্রাক আটকে আছে। আর এতে গাজাজুড়ে তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধের। পবিত্র রমজান মাসে ইফতার ও সেহরিতে কিছু না খেয়েই রোজা রাখছেন অনেক ফিলিস্তিনি।
ত্রাণ প্রবেশ বন্ধ থাকায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন জাতিসংঘ। সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, এমন অবস্থা অব্যাহত থাকলে উপত্যকায় আবারো চরম মানবিক সংকট দেখা দিতে পারে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র পরর ষ ট র
এছাড়াও পড়ুন:
মৌলিক সংস্কার ছাড়া নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ইঙ্গিত এনসিপির
মৌলিক সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে সেই নির্বাচনে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) অংশ না নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) মার্কিন কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে নির্বাচনের বিষয়ে এমন ইঙ্গিত দেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘‘আমরা বলেছি যে আমরা এখানে ন্যূনতম সংস্কার নয়; বরং রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কারের জন্য আমরা কাজ করছি। এই পরিবর্তনগুলো ছাড়া নির্বাচন হলে, তা গ্রহণযোগ্য হবে না। সেই নির্বাচনে জাতীয় নাগরিক পার্টি অংশগ্রহণ করবে কি না, সেটাও বিবেচনাধীন থাকবে।’’
আরো পড়ুন:
বেড়াতে গিয়ে পায়ে আঘাত পেলেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম
দেশে সংস্কারের দরকার আছে : নুসরাত তাবাসসুম
তিনি বলেন, ‘‘আমরা আমাদের এজেন্ডাগুলো নিয়ে কাজ করছি। বর্তমান সময়ে মাঠ প্রশাসন নিরপেক্ষভাবে কাজ করছে না। বিভিন্ন জায়গায় জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা হচ্ছে। সেখানে প্রশাসন নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করছে। এসব বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘মূলত বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সংস্কার কার্যক্রম এবং নির্বাচন বিষয়ে আমাদের প্রধান ফোকাস ছিল। এ ছাড়া সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা, বাংলাদেশে রাজনীতি কোনদিকে যাবে এবং আমাদের রাজনীতিতে দলের গঠন প্রক্রিয়া, সাংগঠনিক কার্যক্রম, আদর্শ ইত্যাদি বিষয়ে তাদের আগ্রহ ছিল। আমরা আমাদের জায়গা থেকে ব্যাখ্যা করেছি।’’
এনসিপি আহ্বায়ক বলেন, ‘‘আমাদের যে তিনটি দাবি- বিচার, সংস্কার ও গণপরিষদ নির্বাচন; সে বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে বলেছি। আমরা বলেছি, ন্যূনতম সংস্কার নয়, মৌলিক সংস্কার, রাষ্ট্রের গুণগত পরিবর্তনের জন্যই আমরা কাজ করছি। কোনো ধরনের পরিবর্তন ছাড়া নির্বাচনের দিকে গেলে সে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। সে নির্বাচনে জাতীয় নাগরিক পার্টি অংশগ্রহণ করবে কি না- সেটাও বিবেচনাধীন থাকবে।’’
এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, আমরা দেখছি প্রশাসন বিএনপির পক্ষ অবলম্বন করছে অনেক জায়গায়। মাঠপর্যায়ে যেসব জায়গায় চাঁদাবাজি চলছে, সেই জায়গায়ও প্রশাসন আসলে নীরব ভূমিকা পালন করছে। আমরা বলেছি, এ ধরনের প্রশাসন যদি থাকে তাহলে এর অধীনে নির্বাচন করাটা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, ‘‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের জন্য নিরপেক্ষ প্রশাসন, আমলাতন্ত্র, পুলিশ নিশ্চিত করতে হবে।’’
ঢাকা/হাসান/এনএইচ