Prothomalo:
2025-04-13@11:08:06 GMT

আপনার কিডনি কি সুস্থ আছে

Published: 13th, March 2025 GMT

কিডনির রোগ বিশ্বজুড়ে ক্রমাগত বেড়েই চলছে। বাংলাদেশেও উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে এটি। কিডনির রোগের কারণে শুধু ব্যক্তিগত জীবনই বিপর্যস্ত হয় না; বরং এটি পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের ওপরও বিশাল অর্থনৈতিক চাপ তৈরি করে।

কিডনির রোগ বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর অন্যতম কারণ। বিশ্বে প্রায় ৮৫ কোটি মানুষ কোনো না কোনো কিডনির রোগে আক্রান্ত। এ দেশে প্রায় ৩ কোটি ৮০ লাখ লোক এ রোগে আক্রান্ত। এর মধ্যে প্রতিবছর প্রায় ৪০ হাজার রোগী ডায়ালাইসিসের ওপর নির্ভরশীল হন। আরও ২৪ থেকে ৩০ হাজার রোগী হঠাৎ কিডনি বিকল হয়ে সাময়িক ডায়ালাইসিসের শরণাপন্ন হন। অন্য সব রোগের তুলনায় কিডনি বিকল হওয়ার চিকিৎসাব্যয় বেশি।

কিডনির রোগের কারণ

কিডনির রোগের প্রধান কারণ হলো অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা, নেফ্রাইটিস, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, ধূমপান, ব্যথানাশক ওষুধের অতিরিক্ত ব্যবহার, জন্মগত ও বংশগত কিডনির রোগ, মূত্রতন্ত্রের প্রদাহ ও পাথর। প্রায় প্রতিটি কারণই আমাদের অস্বাস্থ্যকর জীবনধারার সঙ্গে যুক্ত, যা একটু সচেতন হলেই প্রতিরোধ করা যায়।

 

উপসর্গ ও লক্ষণ

বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ৭০ থেকে ৯০ ভাগ নষ্ট হওয়ার আগপর্যন্ত কিডনি বিকল হওয়ার কোনো লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা যায় না। তবে যেসব লক্ষণ বা উপসর্গ থাকলে কিডনি আক্রান্ত বলে মনে করতে হবে সেগুলো হলো, প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া বা এর রং পরিবর্তন, পা, গোড়ালি ও চোখের নিচে ফোলা ভাব, অবসাদ ও দুর্বলতা, শ্বাসকষ্ট, বমি বমি ভাব বা বমি, বিনা কারণে গা চুলকানো, রাতে বারবার প্রস্রাব, প্রস্রাবে ফেনা বা রক্ত, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া ও ঘন ঘন প্রস্রাব, মেরুদণ্ডের কোনো এক পাশে বা তলপেটে ব্যথা ইত্যাদি।

এসব লক্ষণের বাইরে শিশুদের জন্মগত কোনো ত্রুটি আছে কি না, তা পরীক্ষা করানো ও প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা জরুরি।

প্রতিরোধের উপায়

কিডনি একবার সম্পূর্ণ বিকল হলে বেঁচে থাকার উপায় হলো ডায়ালাইসিস বা কিডনি প্রতিস্থাপন। কিন্তু এর খরচ এত বেশি যে এ দেশের শতকরা ১০ ভাগ রোগীও তা বহন করতে পারেন না। প্রাথমিক অবস্থায় রোগ শনাক্ত করে চিকিৎসার মাধ্যমে এবং আটটি সুস্থ জীবনধারা চর্চার মাধ্যমে প্রায় ৭০ ভাগ পর্যন্ত কিডনি বিকল হওয়া ঠেকানো যায়।

প্রাথমিক অবস্থায় রোগ শনাক্ত করতে হলে কারা এ রোগের ঝুঁকিতে আছেন, তা জানতে হবে। যাঁদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, বংশে কিডনির রোগ আছে, ধূমপায়ী, মাদকসেবী, অতিরিক্ত ওজন, দীর্ঘদিন ব্যথার ওষুধ নিয়েছেন, বারবার কিডনিতে পাথর বা মূত্রতন্ত্রের প্রদাহ হয়, শিশুকালে কিডনির রোগ থাকলে, এমনকি বয়স ৪০ এর ওপরে—তাঁরা সবাই কিডনি বিকল হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন। তাঁদের বছরে দুবার মাত্র দুটি পরীক্ষা করলেই প্রাথমিক অবস্থায় কিডনির রোগ শনাক্ত করা যায়। প্রথমটি হলো প্রস্রাবে আমিষ যায় কি না এবং দ্বিতীয়টি হলো রক্তের ক্রিয়েটিনিন।

সুস্থ জীবনধারা চর্চার আট উপায়

নিয়মিত ব্যায়াম ও সচল থাকা। কমপক্ষে দিনে ৩০ মিনিট এবং সপ্তাহে ৫ দিন জোরে হাঁটা।

পরিমিত সুষম খাবার গ্রহণ, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা। নিয়মিত শাকসবজি ও ফল খাওয়া, চর্বিজাতীয় খাবার ও লবণ কম খাওয়া।

ধূমপান ও মাদক সেবন বর্জন করা।

ডায়াবেটিক রোগীদের নিয়মিত রক্তের শর্করা এবং প্রস্রাবের অ্যালবুমিন পরীক্ষা করা ও রক্তের হিমোগ্লোবিন এ-ওয়ান সি ৭–এর নিচে রাখা।

উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে (১৩০/৮০-এর নিচে) রাখা। যাঁদের প্রস্রাবে অ্যালবুমিন থাকে, তাঁদের ১২০/৭০–এর নিচে রাখা। সুপ্ত উচ্চ রক্তচাপ আছে কি না, নিয়মিত পরীক্ষা করা।

ডায়াবেটিক ও উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের কিডনির কার্যকারিতা ছয় মাস অন্তর পরীক্ষা করা।

চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক ও তীব্র ব্যথার ওষুধ সেবন না করা।

পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি পান করা, পানিশূন্যতা পরিহার করা।

ডা.

এম এ সামাদ, অধ্যাপক, কিডনি রোগ বিভাগ, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল, কলেজ হাসপাতাল

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ক ষ হওয় র

এছাড়াও পড়ুন:

মহিষ লুট: কুষ্টিয়ায় বিএনপি নেতাসহ ১১ জন কারাগারে

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে ৪১টি মহিষ লুট করার মামলায় বিএনপি নেতা সাইদুর রহমানসহ ১১ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

রবিবার (১৩ এপ্রিল) কুষ্টিয়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোস্তফা পারভেজ তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগে, আসামিরা আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন।

কারাগারে পাঠানো ব্যক্তিরা হলেন- কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার মরিচা ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান, পলাশ, জাকির, বকুল, অভিক, বক্কর, মোজাফফর, হানা, তককুল, তুহিন ও শাহিনুর। তারা সবাই বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী। তারা কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার মরিচার বৈরাগীরচর এলাকার বাসিন্দা। 

আরো পড়ুন:

শ্রমিক দল নেতার হামলায় ৩ পুলিশ আহত, গ্রেপ্তার ২

ছেলে সন্তানের জন্ম দিল ‘ধর্ষণের শিকার’ কিশোরী

আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ১১ ফেব্রুয়ারি ভোরে উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের বৈরাগীরচর গ্রামের মন্ডলপাড়া এলাকার পদ্মার চরের সাইদ মন্ডলের মহিষের বাথানে হামলা হয়। রাখালদের অস্ত্রের মুখে রেখে ৪১টি মহিষ লুট করা হয়। মরিচা ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক সাইদুর রহমানের নেতৃত্বে তার লোকজন মহিষগুলো লুট করেন। তারা রাখাল মাজদার আলী, কামাল হোসেন ও সৈকতকে মারধর করে ও অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে পার্শ্ববর্তী রহিমপুর মাঠে নিয়ে আটকে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রাখালদের উদ্ধার করে। তবে লুট হওয়া মহিষ উদ্ধার করতে পারেনি তারা। লুট হওয়া ৪১টি মহিষের আনুমানিক মূল্য এক কোটি ৯ লাখ টাকা।

এ ঘটনায় মহিষের বাথান মালিক সাইদের স্ত্রী তমা খাতুন গত ১৪ ফেব্রুয়ারি দৌলতপুর থানায় মামলা করেন। মামলায় সাইদুর রহমানকে প্রধান আসামি করে ১৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। ৮-১০ জনকে নাম না জানা আসামি করা হয়।

দৌলতপুর থানার ওসি নাজমুল হুদা বলেন, “৪১টি মহিষ লুট করার মামলায় ১২ আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। তারা জামিন আবেদন করেন। ১১ আসামির জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো আদেশ দেন বিচারক। এক আসামিকে জামিন দেন আদালত।”

ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ