রেশমের কাপড় বুনলেও ঈদে কেনা হয় না নতুন কাপড়
Published: 13th, March 2025 GMT
হস্তচালিত তাঁতে রেশম সুতায় চকচকে দামি সব কাপড় বুনলেও নিজেরা কখনো দামি কাপড় পরতে পারেন না। জীবনও তাঁদের মসৃণ নয়, বড়ই সাদামাটা। কোনো উৎসব উপলক্ষে ছেলেমেয়েদেরও কিনে দিতে পারেন না নতুন কাপড়। রমজান মাসে ইফতার ও সাহ্রিতে জোটে না ভালো খাবার। রমজান বা ঈদ উপলক্ষে বাড়তি কোনো আয়ের ব্যবস্থা না থাকায় তাঁরা তাঁদের জীবনের অনেক ইচ্ছাই পূরণ করতে পারেন না।
এ অবস্থা চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার রেশম তাঁতপল্লির তাঁতশ্রমিকদের। এ পল্লি তাঁতে কাপড় বুনে জীবিকা নির্বাহ করেন ২৫০ থেকে ৩০০ জন শ্রমিক। এখানের তাঁত কারখানাগুলোর মালিকেরা হিন্দু হলেও শ্রমিকদের ৭০ ভাগই মুসলমান।
খট খট ছন্দ তুলে একমনে হস্তচালিত তাঁতযন্ত্রে রেশমের থান কাপড় বুনছিলেন তাঁতশ্রমিক মো.
গত মঙ্গলবার দুপুরে সহুবুলের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদ উপলক্ষে তাঁতিদের বাড়তি আয়ের সুযোগ নেই। বছরের অন্যান্য সময় যা আয় করেন, রমজান মাসেও তেমন। যদিও রমজান মাসে বাড়তি খরচ হয়। আছে রোজা শেষে ঈদের খরচ। ঈদে পরিবারের কারও নতুন পোশাক হোক বা না হোক ঈদের দিনে একটু ভালো খাবার তো জোগাড় করতেই হয়।
সহুবুল তাঁর দুর্দশার কথা জানাতে গিয়ে বলেন, সপ্তাহে দুই হাজার টাকার বেশি আয় হয় না। প্রতি মাসেই কাজ থাকে না দু-চার দিন। কোনো মাসে তারও বেশি। তখন করেন রাজমিস্ত্রির জোগালির কাজ। মা, স্ত্রী, তিন ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে তাঁর পরিবার। পরিবারের অন্নসংস্থান করতেই হিমশিম খেতে হয়। বাড়তি খরচের উপায় নেই। ইফতার করতে হয় ভাত অথবা ছাতু দিয়ে। তিন ছেলেও রোজা রাখে। তারা মুরগির মাংস খাওয়ার বায়না ধরেছে। কিন্তু কয়েকটি রোজা চলে গেলেও মুরগির মাংস কিনতে পারেননি।
সহুবুল বলেন, ‘ঈদ কহ্যা লতুন কাপড় কিন্যা দিতে পারি না কাহুকে। যখুন জুটে তখুনি কিন্যা দি একটা দুটা কইর্যা। কিন্তুক ছোট দুটাকে বুঝিয়্যা পারা যায় না। একেকবার দিতে হয়। তবে এবার বুঝিন পারব না। শুধু হামার কহ্যা লয়, এ রকুমই অবস্থা সব তাঁতিদের। ভালো কর্যা ভাতই জুটে না তো, লতুন কাপড়। ঈদ-বকরিঈদ কহ্যা আলাদ কুনু দিন নাই হামারঘে।’
৬ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হরিনগর তাঁতিপাড়ায় ইন্দু সিল্ক স্টোরের তাঁতঘরে গিয়ে দেখা যায়, কাপড় বুনতে থাকা পাঁচজনের চারজনই মুসলমান। এই সময় নয়ালাভাঙ্গা গ্রামের সাদিকুল শেখ (৪৩), হরিনগর মুসলিম পাড়ার মো. ঈমান আলী (৪৫), মো. জামিল হোসেন (৪০) ও শরিফ উদ্দীনের (৩৭) সঙ্গে কথা হয়।
শরিফ উদ্দীন বলেন, ‘সিল্কের কাপড় বুনি ম্যালা বছর থ্যাকা। কিন্তু কুনুদিন পরতে পারিনি। মেয়েরা কেউ কিন্যা দিতে পারিনি। ইফতারের ল্যাগা একখানটাই জিলাপি কিনি। কুচরি কইর্যা ভাঙ্যা মুড়ির সোথে মিলিয়্যা খাই। হামার তিনটা বেটি। ওরঘে ল্যাগা লতুন জামা কিনতে হোইবে। চিন্তাতে আছি।’
সাদিকুল শেখ বলেন, ‘হামার ঘরে সাতজন খানেআলা। ওষুধের দোকানে বাকি আছে। দু সিজিনে ধান কাটি কহ্যা কুনমতে সংসার চলে। শেষমেশ ঈদে কাহুরি ল্যাগা কিছু করতে পারব কি না কহিতে পারব না। হামারঘে তো আর বাড়তি আয় হয় না।’
দুঘর পার হয়ে গৌড় চন্দ্র দাসের তাঁত কারখানায় কাজ করছিলেন কমলাকান্তপুর গ্রামের এরফান আলী, আবুল কাশেম, রিপন আলী, কবির আলী ও ওয়াসিম আলী। সামনে ঈদ এলেও তাঁদের মনে কোনো আনন্দ নেই। তিনি জানালেন, ভালো খাবার কেনার চেয়ে ঈদে বাড়ির শিশু সদস্য ও বৃদ্ধ মা-বাবার জন্য ঈদে নতুন কাপড় কেনার চিন্তাই তাড়া করছে তাঁদের। অথচ বাড়তি কোনো আয়ের ব্যবস্থা নেই।
এরফান আলী, আবুল কাশেম, রিপন আলীদের তাঁত কারখানার মালিক চন্দন দাস (৪৬) বলেন, ‘করোনার পর এক বছরই মোটামুটি ভালো ব্যবসা হয়েছে। এখানকার সিংহভাগ কাপড় কেনে আড়ং। তাঁরা কাপড় কেনা কমিয়ে দিয়েছে। আমরাও তাঁতের সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছি। আগে ছিল ১৬টি। এখন ৮-১০টি চালাই।’
তাঁতের কাজ করে ভালোভাবে সংসার চলে না। অনেকেই পেশা বদল করছেনউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
খোঁজখবর
স্টেপ ফুটওয়্যারের স্টাইলিশ ও আরামদায়ক জুতা
আসন্ন ঈদ উৎসবকে আরও স্টাইলিশ, আনন্দময় ও উপভোগ্য করে তুলতে দেশের অন্যতম শু ব্র্যান্ড ‘স্টেপ ফুটওয়্যার’ নিয়ে এসেছে অসাধারণ ডিজাইনের বিশেষ কালেকশন। জুতার সৌন্দর্যের পাশাপাশি আরাম, টেকসই মান, ট্রেন্ডি ফ্যাশন এবং সাশ্রয়ী দামকে বেশি গুরুত্ব দেওয়ায় ক্রেতারা নিজের পছন্দের পণ্যটি কিনতে পারবেন এই কালেকশন থেকে। স্টেপ ফুটওয়্যারের এই কালেকশনে পুরুষের জন্য রয়েছে স্যান্ডেল, স্নিকার্স, ফর্মাল ও ক্যাজুয়াল শু, পাঞ্জাবির সঙ্গে মানানসই হাফ শু ও স্লাইড এবং নানা ডিজাইনের ক্যাজুয়াল শু। নারীর জন্য রয়েছে মিডহিল, হাইহিল, ড্রেস শু এবং বিভিন্ন ধরনের ক্যাজুয়াল শু। পাশাপাশি, বিভিন্ন বয়সের বাচ্চাদের জন্য রয়েছে অনন্য ডিজাইন ও আকর্ষণীয় রঙের স্যান্ডেল, স্নিকার্স, ফর্মাল ও ক্যাজুয়াল শু। স্টেপ ফুটওয়্যারের জুতাগুলো দেশের সব স্টেপ আউটলেটে সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যাচ্ছে। পাশাপাশি স্টেপের অনলাইন স্টোর থেকেও সহজেই জুতা কেনার সুযোগ রয়েছে। v
রেনেসন্স হোটেলে রমজানের বিশেষ আয়োজন
রেনেসন্স ঢাকা গুলশান হোটেল নিয়ে এসেছে রমজানের বিশেষ আয়োজন। রমজান উপলক্ষে হোটেলটি সেজেছে মধ্যপ্রাচ্যের সূক্ষ্ম সজ্জায়, যা আপনাকে ঐতিহ্যের অন্য এক দুনিয়ায় নিয়ে যাবে।
হোটেলটি ক্রেতার জন্য এক্সক্লুসিভ রমজান স্পেশাল অফার দিচ্ছে, যেখানে রয়েছে বুফে ইফতার ও ডিনার। এতে খরচ পড়বে ৯ হাজার ৯৯৯ টাকা। বুফে সাহ্রি পাবেন ৬ হাজার ১৯৯ টাকায়। এর পাশাপাশি রমজান মাসজুড়ে টেকওয়ে সিলভার ইফতার বক্স মিলবে ৬ হাজার ৫০০ টাকায়, গোল্ড ৭ হাজার ৫০০ এবং প্লাটিনাম ৯ হাজার ৫০০ টাকায়। তাছাড়া হোটেলটিতে রমজান উপলক্ষে অন্যান্য বিশেষ পদও থাকছে। এর মধ্যে রয়েছে– সুগন্ধিত ল্যাম্ব ওউজি, স্বাদে ভরপুর ল্যাম্ব মানডি, ল্যাম্ব ট্যাজিন অলিভ, অ্যাপ্রিকট, নানা রকমের মিষ্টি ইত্যাদি। এতে প্রাইম পার্টনার হিসেবে রয়েছে প্রিমিয়ার ব্যাংক এবং এয়ারলাইন পার্টনার নভোএয়ার।
ঈদে সুন্দোরার বিশেষ ক্যাম্পেইন
ঈদ উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রিমিয়াম মাল্টি-ক্যাটেগরি রিটেইলার ‘সুন্দোরা’ তাদের বিশেষ ঈদ ক্যাম্পেইন চালু করেছে। এ ক্যাম্পেইনের মূল লক্ষ্য হলো উৎসবের আনন্দ, উপহার দেওয়া এবং পারিবারিক বন্ধনকে সুদৃঢ় করা। এ আয়োজনে গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন আকর্ষণীয় অফার থাকছে। সুন্দোরা বিউটিতে বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ডের প্রিমিয়াম স্কিনকেয়ার, মেকআপ এবং পারফিউমের বিস্তৃত কালেকশন নিয়ে এসেছে। অন্যদিকে সুন্দোরা টয়েজে সব বয়সী গ্রাহকের জন্য সৃজনশীলতা ও আনন্দ উদযাপনের লক্ষ্যে বিভিন্ন খেলনা এবং স্টেশনারি সামগ্রী পাওয়া যাবে। ঈদে সুন্দোরা ‘বিগ ঈদ সেল’-এর আয়োজন করেছে, যেখানে বিউটি প্রডাক্টের ওপর ৬০ শতাংশ এবং খেলনার ওপর ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হচ্ছে। ৭ মার্চ থেকে শুরু হওয়া এই অফার রমজান মাসজুড়ে সুন্দোরার অনলাইন প্ল্যাটফর্ম এবং সব স্টোরে পাওয়া যাবে। সুন্দোরার বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার থমাস ক্যাসিন বলেন, ‘গ্রাহক সন্তুষ্টি, নতুনত্ব এবং গুণগত মান বজায় রাখার মাধ্যমে সুন্দোরা পরিবার ও ব্যক্তিগত ক্রেতাদের জন্য একটি বিশ্বস্ত রিটেইলার হিসেবে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
সাজগোজের ‘ইউর ঈদ শপিং ডেস্টিনেশন’ ক্যাম্পেইন শুরু
ঈদ উপলক্ষে বিউটি ও লাইফস্টাইল রিটেইলার ‘সাজগোজ’ শুরু করেছে গিগা সেল ক্যাম্পেইন ‘ইউর ঈদ শপিং ডেস্টিনেশন’। ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এ ক্যাম্পেইনটি চলবে আগামী ৬ এপ্রিল পর্যন্ত। এর আওতায় কেনাকাটা করলে গ্রাহকরা ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ডিসকাউন্ট, এক্সক্লুসিভ বান্ডেল ডিলসসহ বিশেষ পুরস্কার জেতার সুযোগ পাবেন। ক্যাম্পেইনের মূল আকর্ষণ– সর্বোচ্চ টাকার কেনাকাটা করলে ঈদ উপহার হিসেবে ‘সাজগোজ’-এর পক্ষ থেকে পাবেন একটি ডায়মন্ড রিং এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় সর্বোচ্চ টাকার কেনাকাটা করলে পাবেন ৫ হাজার ও ৩ হাজার টাকা দামের আকর্ষণীয় গিফট হ্যাম্পার। গিগা সেল প্রসঙ্গে সাজগোজের সিসিও সিনথিয়া শারমিন ইসলাম বলেন, ‘ঈদের কেনাকাটাকে উপভোগ্য ও ঝামেলামুক্ত এবং ঈদের আনন্দকে আরও বাড়িয়ে তোলাই হলো আমাদের লক্ষ্য।’ v