রুদ্ধশ্বাস লড়াই জিতে কোয়ার্টার ফাইনালে রিয়াল
Published: 13th, March 2025 GMT
উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের কিং রিয়াল মাদ্রিদ। আর সেই চ্যাম্পিয়ন মাদ্রিদকেই বুধবার (১২ মার্চ, ২০২৫) দিবাগত রাতে ভীষণ চ্যালেঞ্জ ছুড়েছিল নগর প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। ম্যাচজুড়ে এলোমেলো পারফরম্যান্স করা রিয়াল অবশ্য দিনশেষে বিজয়ীর হাসি হেসেছে। টাইব্রেকার নামক ভাগ্য পরীক্ষায় নাটকীয়ভাবে ৪-২ ব্যবধানে জিতে আরও একবার চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে।
প্রথম লেগে রিয়ালের মাঠে ২-১ গোলে হার মানা অ্যাটলেটিকো এদিন ঘরের মাঠ পেয়ে জ্বলে উঠে। ম্যাচের প্রথম মিনিটেই কনর গালাহারের অসাধারণ এক গোলে লিড নিয়ে নেয় তারা। সেই লিড নিয়ে প্রথমার্ধের খেলা শেষ করে দিয়েগো সিমিওনের শিষ্যরা।
প্রথমার্ধে এলোমেলো পারফরম্যান্স করা রিয়াল অবশ্য বিরতির পর গোল করে এগিয়ে যাওয়ার দারুণ সুযোগ পেয়েছিল। ম্যাচের ৬৮ মিনিটে অ্যাটলেটিকোর ল্যাংলেট বক্সের মধ্যে কিলিয়ান এমবাপ্পেকে ফাউল করলে রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজান। দুর্ভাগ্য বলতে হবে রিয়ালের, দুর্ভাগ্য বলতে হবে ভিনিসিউস জুনিয়রের। তার নেওয়া পেনাল্টি শট দৃষ্টিকটুভাবে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। তাতে অ্যাটলেটিকো ১-০ গোলে এগিয়ে থেকেই নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা শেষ করে।
আরো পড়ুন:
অ্যাতলেটিকোর ঘরের মাঠে রিয়ালের সুযোগ আছে?
জয়ের পর আনচেলত্তি জানালেন, নজর কেবল ‘তিন পয়েন্টে’
তাতে দুই লেগ মিলিয়ে ২-২ সমতা থাকায় ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানেও চলে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণ। সুযোগ আর গোল মিসের মহড়া। তাতে ১২০ মিনিটও শেষ হয় ২-২ সমতায়। এরপর ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকার নামক ভাগ্য পরীক্ষায়। যে পরীক্ষায় অ্যাটলেটিকো হেরে যায়, রিয়াল বীরের বেশে মেট্রোপলিটানো থেকে বার্নাব্যুতে ফেরে।
টাইব্রেকারে রিয়াল আগে কিক নেওয়ার সুযোগ পায়। তাদের তারকা এমবাপ্পে প্রথম শটেই গোল করেন। অ্যাটলেটিকোর আলেক্সজান্ডার সোরলোথও যথারীতি লক্ষ্যভেদ করেন। রিয়ালের জুদ বেলিংহ্যামও বল জালে জড়াতে ভুল করেননি। কিন্তু ঝামেলা পাকিয়ে বসেন অ্যাটলেটিকোর জুলিয়ান আলভারেজ। তিনি কিক নিতে গিয়ে পা পিছলে যান। তারপরও বল জালে পাঠান। কিন্তু পিছলে গিয়ে তার দুই পায়ের স্পর্শ লাগে বলে। নিয়ম অনুযায়ী তাতে তার গোলটি বাতিল হয়। রিয়াল এগিয়ে যায়।
এরপর রিয়ালের ফেদেরিকো ভালভার্দে ও অ্যাটলেটিকোর অ্যাঞ্জেল কোরেরা গোল করেন। কিন্তু রিয়ালের লুকাস ভাসকেজের নেওয়া চতুর্থ শট রুখে দেন অ্যাটলেটিকোর গোলরক্ষক জান ওব্লাক। তাতে সম্ভাবনা তৈরি হয় তাদেরও। কিন্তু রিয়ালের থিবাউট কোর্তোয়া অ্যাটলেটিকোর মার্কোস লরেন্তের নেওয়া চতুর্থ শটটি রুখে দিয়ে এগিয়ে রাখেন দলকে। আর অ্যান্তোনিও রুদিগারের নেওয়া পঞ্চম শটটি ওব্লাকের হাত ছুঁয়ে জালে ঢুকে গেলে মেট্রোপলিটানোতে রিয়ালের আনন্দ-উল্লাস শুরু হয়ে যায়। ৪-২ ব্যবধানে টাইব্রেকার জিতে শেষ আটে জায়গা করে নেয় কার্লো আনচেলোত্তির শিষ্যরা।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল চ য ম প য়নস ল গ প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
পঁয়ত্রিশের পর ধার বেড়েছে যাদের
বছর পঁচিশের ক্রিস গেইলকে কতজনই বা চিনেছিলেন, যতটা না তাঁকে চেনা গিয়েছিল বুড়ো বয়সে! ক্যারিবিয়ান এ তারকা ‘ইউনিভার্সাল বস’ হয়েছেন তো পঁয়ত্রিশের পরে এসে। তার সেই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ছক্কা মারার ভঙ্গিটা দেখা গেছে ক্যারিয়ারের শেষের দিকেই। ক্রিকেটে আসলে এমন কিছু ব্যাপার থাকে, যা ব্যাকরণের মধ্যে ফেলা যায় না। যেখানে অনেকেই পঁয়ত্রিশের আগেই হাঁপিয়ে ওঠেন, সেখানে কেউ কেউ জ্বলে ওঠেন আগের চেয়েও ভয়ংকর হয়ে।
ক্রিস গেইল, কুমারা সাঙ্গাকারা, ম্যাথু হেডেন, মোহাম্মদ হাফিজরা তাদের সেরা সময়টা কাটিয়েছেন পঁয়ত্রিশোর্ধ্ব ক্যারিয়ারে। তাদের প্রত্যেকের স্ট্রাইকরেট বেড়েছে এই সময়ে। সেই তালিকার সর্বশেষ সংযোজন বোধহয় বছর সাঁইত্রিশের ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা। যিনি কিনা গত দুই বছরে ব্যাটিংয়ে আরও বেশি আগ্রাসী, আরও বেশি বলশালী হয়েছেন।
আঠারো বছরের ক্যারিয়ারে প্রথম ষোলো বছর, রোহিতের স্ট্রাইকরেট ছিল ৮৯.০২; গত আড়াই বছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৭.৩৭তে। গড় আগে যা ছিল ৪৮.৬, সেটা সামান্যই বেড়েছে ৪৯.৬। অর্থাৎ রানের গড় ঠিক রেখে রান তোলার গতি বেড়েছে তার এই সময়ের মধ্যে।
য়সের সঙ্গে সঙ্গে ধারে ও ভারে নিজেকে যে জায়গায় নিয়ে গিয়েছেন রোহিত, তারপর তিনি বলতেই পারেন, ‘আমি এখনই অবসর নিচ্ছি না।’
গত আড়াই বছরের মধ্যে যেন স্বর্ণ সময় পার করছেন তিনি। অধিনায়ক হিসেবে ট্রফি জেতার অর্জনে কিংবদন্তি ইমরান খানের পাশে চলে এসেছেন। পাঁচ বা এর বেশি দল নিয়ে আয়োজিত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট টুর্নামেন্টে সবচেয়ে বেশি চারটি করে ট্রফি জিতেছেন মাত্র চার অধিনায়ক। পাকিস্তানের কিংবদন্তি ইমরান খান ১৯৯২ বিশ্বকাপ জেতার আগে অস্ট্রাল- এশিয়া কাপ জিতেছিলেন ১৯৮৬ ও ১৯৯০ সালে।
এ ছাড়া ১৯৮৯ সালের ওয়ার্ল্ড সিরিজ এনে দিয়েছিলেন পাকিস্তানকে। অস্ট্রেলিয়ার রিকি পন্টিং ২০০৩ ও ২০০৭ বিশ্বকাপ জয়ের পাশাপাশি জিতেছিলেন ২০০৬ ও ২০০৯ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। ধোনি এনেছিলেন ২০১১ বিশ্বকাপ, ২০০৭ টি২০ বিশ্বকাপ, ২০১৩ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি এবং ২০১৬ এশিয়া কাপ। আর অধিনায়ক রোহিত জিতেছেন ২০১৮ ও ২০২৩ সালের এশিয়া কাপ, ২০২৪ সালের টি২০ বিশ্বকাপ আর এবারের ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। এই চারটি শিরোপার তিনটিই তিনি জিতেছেন পঁয়ত্রিশোর্ধ্ব বয়সে পরিণত একজন হয়ে। বয়সেই সৌন্দর্য বেড়েছে তাদের।
৩৫ বছরের পর পারফরম্যান্স ৩৫ বছরের আগের পারফরম্যান্স
ব্যাটার রান স্ট্রাইকরেট রান স্ট্রাইকরেট
রোহিত শর্মা ১৮৮৫ ১১৭.৩৭ ৯২৮৩ ৮৯.০২
ক্রিস গেইল ১৬৭০ ১০৮.৬৫ ৮৮১০ ৮৪.০৫
কুমারা সাঙ্গাকারা ৩৩৯২ ৯১.১৩ ১০৮৪২ ৭৫.৬৮
ম্যাথু হেডেন ১৮৯৯ ৯১.১৩ ৪২৩৪ ৭৫.৮১
মোহাম্মদ হাফিজ ১৫৬০ ৮৪.২৮ ৫০৫৪ ৭৪.৫২
# পঁয়ত্রিশ বছর বয়সের পর কমপক্ষে ১৫০০ রান করা ব্যাটারদের মধ্যে।