সমকাল: রমজান ও ঈদ উপলক্ষে আপনাদের ক্রেডিট কার্ডে কী কী অফার রয়েছে?

খোরশেদ আনোয়ার: প্রতিবছর ঈদ উপলক্ষে ইস্টার্ন ব্যাংক পিএলসি (ইবিএল) ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীদের জন্য আকর্ষণীয় ডিসকাউন্ট, ক্যাশব্যাক ও ইএমআই সুবিধা নিয়ে আসে। এ বছর নির্দিষ্ট ক্লোথিং ও ফুটওয়্যার ব্র্যান্ডে শপিং, সিলেকটিভ গ্রোসারি মার্চেন্টে ক্যাশব্যাক অফার, উইকেন্ড গ্রোসারি শপিংয়ে রিওয়ার্ড পয়েন্ট, রোজায় নির্দিষ্ট হোটেল চেইনের সঙ্গে বুফে বাই ওয়ান গেট ওয়ান ডিনার অফার এবং সিলেকটিভ ইএমআই মার্চেন্টে ক্যাশব্যাক অফার রয়েছে। এ ছাড়া অনলাইন স্টোর, রেস্টুরেন্ট, ট্রাভেল এজেন্সি ও হোটেল বুকিংয়ে বিশেষ ডিসকাউন্ট পাওয়া যাবে। অফারগুলো নির্দিষ্ট শর্ত ও সীমিত সময়ের জন্য প্রযোজ্য। বিস্তারিত জানতে ইবিএল ওয়েবসাইটে ভিজিট অথবা হেল্পলাইনে কল করতে পারেন গ্রাহকরা।

সমকাল: আপনাদের কার্ডগুলো সম্পর্কে  বিস্তারিত জানতে চাই। 

খোরশেদ আনোয়ার: ইবিএল গ্রাহকদের জীবনযাত্রা ও প্রয়োজন অনুযায়ী বিশেষভাবে ডিজাইন করা ক্রেডিট কার্ড অফার করে থাকে। আমাদের সব কার্ডই ডুয়াল কারেন্সি সুবিধাসম্পন্ন, যা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক লেনদেন সহজ করে তোলে। আমাদের ক্রেডিট কার্ডগুলো বিভিন্ন গ্রাহক চাহিদার ভিত্তিতে বিন্যস্ত করা হয়েছে। দৈনন্দিন কেনাকাটায় সাশ্রয়ী করার জন্য কিছু কার্ড বিশেষ ডিসকাউন্ট ও ক্যাশব্যাক সুবিধা প্রদান করে। ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য রয়েছে বিশেষ ট্রাভেল কার্ড। প্রিমিয়াম গ্রাহকদের জন্য রয়েছে বিশ্বব্যাপী লাউঞ্জ অ্যাক্সেস, ঢাকা এবং চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইবিএল স্কাইলাউঞ্জ সুবিধা, ঢাকা বিমানবন্দরে মিট-অ্যান্ড-গ্রিট সেবা, এক্সক্লুসিভ ডিসকাউন্ট ও রিওয়ার্ড পয়েন্টসহ আরও অনেক সুবিধা। ইবিএল ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের বিভিন্ন চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ও প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা প্রদান করে।

সমকাল: ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার কতটা বাড়ছে? 

খোরশেদ আনোয়ার: বাংলাদেশের বাজারে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের প্রবণতা ধীরে ধীরে বাড়ছে। বর্তমান বাজার বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন আরও সুবিধাজনক ও সহজলভ্য হয়ে উঠছে। এটি গ্রাহকদের দৈনন্দিন কেনাকাটা ও প্রয়োজন মেটাতে সহায়তা করছে। পাশাপাশি তাদের অর্থ ব্যবস্থাপনায় আরও বেশি স্বাধীনতা দিচ্ছে। ক্যাশলেস বাংলাদেশ গড়ার ধারণা সামনে রেখে ভবিষ্যতে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার আরও দ্রুত বাড়বে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। বাজারের এই বৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে ইবিএল সর্বদা পরিবর্তনশীল গ্রাহক চাহিদা অনুযায়ী আধুনিক ও প্রতিযোগিতামূলক ক্রেডিট কার্ড সেবা প্রদান করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের ক্রেডিট কার্ড বাজারের অগ্রগতিতে ইবিএল অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। ভবিষ্যতেও উদ্ভাবনী অফার ও সুবিধার মাধ্যমে এই সেক্টরে নেতৃত্ব বজায় রাখবে।

সমকাল: ডিজিটাল লেনদেন উৎসাহিত করতে কী করণীয় রয়েছে?

খোরশেদ আনোয়ার: ডিজিটাল লেনদেনকে আরও জনপ্রিয় করতে হলে ডিজিটাল পেমেন্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার উন্নয়ন, গ্রাহকদের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং লেনদেন খরচ কমানো প্রয়োজন। ইস্টার্ন ব্যাংক পিএলসি (ইবিএল) ডিজিটাল ব্যাংকিং এবং কার্ড পেমেন্টের মাধ্যমে এই পরিবর্তনের অন্যতম পার্টনার হিসেবে কাজ করছে। আমাদের গ্রাহকদের জন্য রয়েছে ইবিএল স্কাইব্যাংকিং, যা একটি সমৃদ্ধ মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপলিকেশন। এটি বিভিন্ন ইবিএল সেবাকে একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে একত্র করেছে। এই অ্যাপের মাধ্যমে গ্রাহকরা যে কোনো সময়, যে কোনো স্থান থেকে অ্যাকাউন্ট চেক, ফান্ড ট্রান্সফার, বিল পেমেন্ট, মোবাইল রিচার্জ, ক্রেডিট কার্ড ম্যানেজমেন্ট, এটিএম লোকেশন, ব্রাঞ্চ লোকেশন ট্র্যাকিংসহ আরও অনেক সেবা নিতে পারেন।

সমকাল: ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে গ্রাহকদের কোন কোন ক্ষেত্রে সচেতন থাকা উচিত?

খোরশেদ আনোয়ার: ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। গ্রাহকদের জন্য বিশেষ অনুরোধ, দয়া করে কেউ ওটিপি, পিন, সিভিভি বা কার্ড ডিটেইলস কারও সঙ্গে শেয়ার করবেন না। ব্যাংক কখনোই গ্রাহকের কাছ থেকে এই তথ্য জানতে চাইবে না। অনলাইন শপিংয়ের সময় বিশ্বস্ত ওয়েবসাইট ব্যবহার করার চেষ্টা করতে হবে। সন্দেহজনক বা অস্বাভাবিক কোনো লেনদেন দেখে যোগাযোগ করতে হবে ব্যাংকের  কন্ট্যাক্ট সেন্টারে। আমরা বিশ্বাস করি, গ্রাহক সচেতনতা ও উন্নত সাইবার সিকিউরিটি ব্যবস্থা সম্মিলিতভাবে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকে সম্পূর্ণ নিরাপদ ও ঝুঁকিমুক্ত রাখবে।

সমকাল: ক্রেডিট কার্ড নিয়ে আপনাদের ভবিষ্যতে কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা?

খোরশেদ আনোয়ার: ইবিএল ক্রেডিট কার্ড নিয়ে ভবিষ্যতের জন্য বেশ কিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। কিছু উদ্যোগ ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। আমরা আমাদের ক্রেডিট কার্ড গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য আমাদের প্রোডাক্ট ফিচারস অ্যান্ড বেনিফিটস ক্রমাগত আপডেট করছি, যা ডিজিটালি কম্প্যাটিবল এবং গ্রাহকদের জন্য উপকারী। এ ছাড়া আমরা নতুন ও উদ্ভাবনী ক্রেডিট কার্ড সলিউশন আনার জন্য পেমেন্ট স্কিম পার্টনারদের সঙ্গে কৌশলগতভাবে কাজ করছি। বাজারের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান ধরে রাখতে আমাদের কার্ড সেলস টিমও ধাপে ধাপে সম্প্রসারিত করা হচ্ছে, যাতে আমরা আরও কার্যকরভাবে নতুন গ্রাহকদের কাছে পৌঁছাতে পারি। ইবিএল বিশ্বাস করে, উন্নত গ্রাহক সেবা সাফল্যের চাবিকাঠি। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে ইবিএল ক্রমাগত তার ব্যাংকিং সেবাগুলো উন্নত করছে, যা পরিবর্তনশীল গ্রাহক চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম। উন্নত ডিজিটাল সেবা ও প্রোডাক্টের মাধ্যমে ব্যাংকিং অভিজ্ঞতাকে আরও সহজ, নিরাপদ ও দক্ষ করে তোলাই আমাদের লক্ষ্য। ভবিষ্যতে ইবিএল আধুনিক ও উদ্ভাবনী সেবা নিয়ে দেশের ক্রেডিট কার্ড বাজারে আরও প্রসারিত হবে বলে আশা করি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক র ড ট ক র ড ব যবহ র গ র হকদ র জ দ র জন য গ র হক ল নদ ন আম দ র সমক ল

এছাড়াও পড়ুন:

ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলবে নারী ফুটবলার, কবে-কোথায়

জুন-জুলাইয়ে মিয়ানমারে অনুষ্ঠিত হবে এএফসি নারী এশিয়ান কাপ বাছাই পর্ব। গ্রুপ ‘সি’তে মিয়ানমার ছাড়া বাংলাদেশের অন্য দুই প্রতিপক্ষ বাহরাইন ও তুর্কমেনিস্তান। বড় আসরে লড়াইয়ের আগে নিজেদের অবস্থান বোঝার জন্য প্রথমে শক্তিশালী কোনো দেশের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার পরিকল্পনা করে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন।

এরই ধারাবাহিকতায় মে মাসের ফিফা উইন্ডোতে জর্ডানে ট্রাই নেশন্স সিরিজ খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশের নারী ফুটবলাররা। স্বাগতিক জর্ডান ছাড়া অন্য দলটি হলো ইন্দোনেশিয়া। বাংলাদেশের দুটি ম্যাচ হবে ৩১ মে এবং ৩ জুন। কোন দিন কোন প্রতিপক্ষ, সেটা এখনও নির্ধারণ হয়নি। তিন দল খেললেও সেখানে কোনো ট্রফি দেওয়া হবে না। ট্রাই নেশন্স খেলতে ২৭ মে ঢাকা ছাড়ার কথা বাংলাদেশ নারী দলের।

বৃহস্পতিবার বাফুফে ভবনে সংবাদ মাধ্যমের সামনে এসব তথ্য তুলে ধরেন বাফুফে নারী ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ, ‘এএফসি নারী এশিয়ান কাপ বাছাই পর্ব সামনে রেখে অনেক দিন থেকেই চেষ্টা করে যাচ্ছি ভালো দেশের সঙ্গে ফিফা ফ্রেন্ডলি বা প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার জন্য। এরই ধারাবাহিকতায় জর্ডানে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলতে যাচ্ছি আমরা। জর্ডান আমাদের ২৯ মে থেকে আতিথেয়তা দিতে পারবে। পিটার (কোচ পিটার বাটলার) আমাকে বলেছেন দু’দিন আগে যেতে পারলে সেটা আমাদের জন্য ভালো হয়। কোচের সঙ্গে কথা বলেই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ২৭ মে দল পাঠাব। তিন দিন ওখানে অনুশীলন হবে।’

র‍্যাঙ্কিংয়ে জর্ডান ৭৪ এবং ইন্দোনেশিয়ার অবস্থান ৯৪তম। শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে এশিয়ান কাপের প্রস্তুতি সারতে চায় বাংলাদেশের মেয়েরা। বর্তমানে সিনিয়র ১০ নারী ফুটবলার আছেন ভুটানে। জাতীয় দলের বাকিরা দেশে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অতীতে অনেক দেশে খেলার প্রস্তাব পেলেও বাফুফে ছাড়পত্র দেয়নি মেয়েদের।

এশিয়ান কাপের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিযোগিতার আগে ভুটানের মতো দেশের লিগে এবার সাবিনাদের অনুমতি দেওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে। এই প্রসঙ্গে কিরণের ব্যাখ্যা, ‘সাবিনাদের সঙ্গে এ নিয়ে আমি কথা বলেছিলাম। সাবিনা বলেছে পারোতে (সাবিনা, ঋতুপর্ণা, মনিকা ও সুমাইয়ার ক্লাব) ভালো মানের ট্রেনিং হবে। তারা অনুশীলনে থেকে ফিটই থাকবে। বিশেষ করে পারো মেয়েদের জন্য খানিকটা মানসিক স্বস্তিরও। মেয়েরা একটা অবস্থানের (কোচের সঙ্গে বিদ্রোহ) মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল। ওদের একটা মেন্টাল রিক্রিয়েশনের দরকার ছিল। ওরা বলেছে আমরা যদি ভুটানে খেলি, তাহলে আমাদের অবস্থাটা আরও ভালো হবে। আমরা ভালোভাবে ফিরতে পারব। মেন্টালি যদি আপনি ভালো না থাকেন, তাহলে কিন্তু কোথাও কোনো কিছু করতে পারবেন না। এই দিক বিবেচনা করলে আমি মনে করি মেয়েদের ভুটান লিগে খেলার অনুমতি দেওয়াটা সঠিক।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ