এসআইবিএলের ক্রেডিট কার্ডে পেমেন্ট সিস্টেম নমনীয়
Published: 13th, March 2025 GMT
সমকাল: আপনাদের ক্রেডিট কার্ড সেবা সম্পর্কে জানতে চাই।
নাজমুস সায়াদাত: তুলনামূলকভাবে আমাদের ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডে প্রফিট রেট, ফি ও অন্যান্য চার্জ অনেক কম। শরিয়াহসম্মত হওয়ায় আমাদের কার্ডে কোনো হিডেন চার্জ নেই। এসআইবিএলের কার্ডে বিভিন্ন নির্বাচিত মার্চেন্ট আউটলেটে প্রায় সময়ই বিভিন্ন ধরনের ইএমআই সুবিধায় শূন্য শতাংশ আই-পে সুবিধা দেওয়া হয়, যা গ্রাহককে সহজেই আকৃষ্ট করছে। এ ছাড়া এসআইবিএলের ক্রেডিট কার্ডের পেমেন্ট সিস্টেমও অত্যন্ত নমনীয়। গ্রাহকরা পেমেন্ট প্রদানে সর্বোচ্চ ৫০ দিন পর্যন্ত মুনাফা ফ্রি সময় পান। এ সময়ের মধ্যে পেমেন্ট দেওয়া হলে কোনো ধরনের মুনাফা, চার্জ ধার্য করা হয় না। গ্রাহকরা কার্ড দিয়ে ব্যালান্স ট্রান্সফারের সুবিধা ভোগ করতে পারছেন খুব সহজেই। সেই সঙ্গে তারা বিভিন্ন নির্বাচিত আউটলেটে ডিসকাউন্টসহ ইএমআই সুবিধাও পাচ্ছেন। ব্যাংকের প্লাটিনাম কার্ডধারীদের জন্য বিনামূল্যে প্রায়োরিটি পাস কার্ড দেওয়া হয়, যা দিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বলাকা ভিআইপি লাউঞ্জে ও বিশ্বব্যাপী নির্বাচিত লাউঞ্জে বিনামূল্যে প্রবেশের সুবিধা পাওয়া যায়। গ্রাহকরা এসআইবিএলের ক্রেডিট কার্ড দিয়ে দেশে ও বিদেশে এটিএম থেকে নগদ উত্তোলনের সুযোগ পান। বর্তমান সময়ে ক্রেডিট কার্ড হলো বিপদের বন্ধু। কারণ আমাদের কার্ড দিয়ে গ্রাহক প্রয়োজনের মুহূর্তে যখন তখন যে কোনো সময়ে এটিএম থেকে টাকা তুলতে পারছেন। বিভিন্ন পিওএস মেশিনে ব্যবহার করতে পারছেন। দেশে ও দেশের বাইরে ই-কমার্স লেনদেন করতে পারছেন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ডিসকাউন্ট, ইএমআই ও শূন্য শতাংশ আই-পে সুবিধা পাচ্ছেন। ব্যালান্স ট্রান্সফারের মাধ্যমে কার্ড থেকে টাকা ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে নিয়ে নগদ ব্যবহার করতে পারছেন। কাজেই এসআইবিএলের ক্রেডিট কার্ড আসলেই মানুষের বিপদের বন্ধু, সব সময়ের সঙ্গী। বর্তমানে দেশের ইসলামী ব্যাংকগুলোর মধ্যে ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহকের সংখ্যা এবং সেবার দিক দিয়ে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক শীর্ষে রয়েছে।
সমকাল: রমজান ও ঈদ উপলক্ষে আপনাদের ক্রেডিট কার্ডে কী ধরনের অফার ও ছাড় আছে?
নাজমুস সায়াদাত: মানুষের সুবিধার কথা বিবেচনায় এনে ব্যাংকগুলো বিভিন্ন উৎসবের সময় গ্রাহকদের বিভিন্ন অফার দিয়ে থাকে। আমরা বিভিন্ন শপিংমল, ইলেকট্রনিক ও ফার্নিচার শোরুম, হোটেল ও রেস্তোরাঁ, হাসপাতালসহ অনেক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করছি, যাতে গ্রাহকরা তাদের কেনাকাটা ও সেবায় ডিসকাউন্ট, ইএমআই ও শূন্য শতাংশ আই-পে সুবিধা পেতে পারেন। এসব সুবিধা আরও বাড়ানোর জন্য আমরা কাজ করছি। এসআইবিএলের গ্রাহক তাদের ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে সহজ ও স্বাচ্ছন্দ্যে কেনাকাটা ও প্রয়োজন মেটাতে পারছেন।
সমকাল: ক্রেডিট কার্ডের সুদহার অনেক বেশি। সুদহার কমলে কি ব্যবহার আরও বাড়বে?
নাজমুস সায়াদাত: ক্রেডিট কার্ড পরিচালনা ব্যয় অনেক বেশি। সে জন্য মুনাফা হার অন্যান্য ইনভেস্টমেন্টের চেয়ে বেশি। মুনাফা কমালে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার বাড়বে।
সমকাল: কার্ড ব্যবহার উৎসাহিত করতে নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছ থেকে কী ধরনের পদক্ষেপ প্রত্যাশা করেন?
নাজমুস সায়াদাত: আমরা কোটার মধ্যেই ট্রানজেকশন করি। যেমন– আমাদের ট্রাভেল কোটা হচ্ছে ১২ হাজার ডলার। সেখানে ই-কমার্স পার ট্রানজেকশন ৩০০ ডলার করার নিয়ম। যেখানে ১২ হাজার ডলার একজন গ্রাহক এক বছরে খরচ করতে পারবেন, সেখানে ৩০০ ডলারের এই প্রতিবন্ধকতা কেন? সর্বোপরি ১২ হাজার ডলারের এই বার্ষিক কোটার পরিবর্তনও অতি জরুরি।
সমকাল: ডিজিটাল লেনদেন অর্থনীতিতে কতটা অবদান রাখছে?
নাজমুস সায়াদাত: ডিজিটাল লেনদেনের মাধ্যমে কার্ডহোল্ডাররা ঘরে বসে যাবতীয় পেমেন্ট সম্পন্ন এবং প্রয়োজনীয় পণ্যসেবা ক্রয় করতে পারেন, যার ফলে কার্ড ব্যবহারকারীদের জীবনযাত্রা সহজ হয়েছে।
সমকাল: কার্ডের ব্যবহার বাড়ানোর বিষয়ে আপনাদের পরিকল্পনা জানতে চাই।
নাজমুস সায়াদাত: কার্ডের প্রসার আরও বাড়াতে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। নগরকেন্দ্রিক ব্যবহারের পাশাপাশি গ্রামীণ পর্যায়েও কার্ডের ব্যবহার বাড়াতে নতুন নতুন কার্যক্রম হাতে নিচ্ছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গ র হকর ব যবহ র গ র হক আম দ র সমক ল ধরন র
এছাড়াও পড়ুন:
যে প্রলোভনে মিয়ানমারে দুই বছর জেল খাটলেন ২০ কিশোর–তরুণ
কারও বয়স ১৬, কারও ১৮ ছুঁই ছুঁই। দালালের প্রলোভনে পড়ে মালয়েশিয়ায় ভালো বেতনে চাকরি আর উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখেছিলেন তাঁরা। পরিবারকে না জানিয়েই রওনা দিয়েছিলেন অবৈধ বিপদসংকুল সাগরপথে। কিন্তু মিয়ানমারে পৌঁছেই আটক হন তাঁরা। তারপর অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে ২২ মাস কারাভোগ করেন।
অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে ২০২৩ সালের জুনে মিয়ানমারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক এসব কিশোর–তরুণ আজ মঙ্গলবার সকালে নৌবাহিনীর জাহাজে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছান। সেখান থেকে সন্ধ্যায় বাসে তাঁদের নেওয়া হয় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে। সেখানে অপেক্ষারত পরিবারের সদস্যদের কাছে তুলে দেওয়া হয় এসব কিশোর–তরুণকে।
সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসের সামনে বাস থেকে একে একে নামেন তরুণেরা। ছেলে কিংবা ভাইকে এত মাস পর কাছে পেয়ে দৌড়ে যান স্বজনেরা। কেউ কেউ কান্নায় ভেঙে পড়েন।
জানা গেছে, অসাধু দালালেরা এসব কিশোর–তরুণকে মালয়েশিয়ায় পাচারের চেষ্টা করেছিল। পথে মিয়ানমারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তাঁরা আটক হন। তাঁদের বাংলাদেশি নাগরিকত্ব যাচাইয়ের পর মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে সরকার। এরপর বাংলাদেশ দূতাবাস তাঁদের প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করে।
অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ফিরে আসা কিশোর–তরুণেরা কক্সবাজার জেলার টেকনাফ ও উখিয়া অঞ্চলের বাসিন্দা। মালয়েশিয়া যাত্রার কথা কেউ পরিবারকে জানাননি। প্রায় এক মাস পর স্বজনেরা জানতে পারেন তাঁরা আটক হয়েছেন। এক বছর আগে সরকারের কাছে তাঁদের ফিরিয়ে আনতে কাগজপত্র জমা দেয় পরিবার।
ফিরে আসা এক কিশোরের বোনের স্বামী আবদুল্লাহ বলেন, ‘পরিবারকে না জানিয়েই আমার শ্যালক দালালের খপ্পরে পড়ে মালয়েশিয়া যেতে চেয়েছিল। সে মিয়ানমারে আটক হয়। প্রায় এক মাস পর আমরা জানতে পারি। এখন সে পরিবারের কাছে ফিরে এসেছে।’
কিশোর–তরুণদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘তথ্য যাচাই করে তাঁদের বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। আমরা তাঁদের পরিবারের জিম্মায় হস্তান্তর করেছি।’
এর আগে গত রোববার মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন শহরের এমআইটিটি বন্দর থেকে ২০ বাংলাদেশি নাগরিক বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ বিএনএস সমুদ্র অভিযানে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা করেন। আজ সকালে জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছায়।