‘খুনের’ খবর শুনে রাজধানীর পল্লবী থানায় গিয়ে পুলিশ ও সেবাপ্রত্যাশীদের মারধর করার কথা আড়াই ঘণ্টা পর বেমালুম ভুলে যান বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবদুর রাজ্জাক ফাহিম! পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পর পুলিশ তাঁর কাছে জানতে চায়, কেন তিনি এমন কাণ্ড ঘটালেন? জবাবে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি আপনাদের মেরেছি? কখন মারলাম? আমি তো কিছুই মনে করতে পারছি না।’ তাঁর আচরণের এমন অদ্ভুত পরিবর্তন দ্বিধায় ফেলেছে পুলিশকে। তদন্ত-সংশ্লিষ্টদের ধারণা, তিনি স্কোপোলামিন নামক রাসায়নিকের (শয়তানের নিঃশ্বাস নামে পরিচিত) প্রভাবে মারধরের ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারেন।
পল্লবী থানার ওসি নজরুল ইসলাম সমকালকে বলেন, সোমবার রাতে ওই যুবক থানায় ঢুকে যখন আমার সঙ্গে কথা বলেন, তখন তিনি অত্যন্ত উগ্র আচরণ করেন। পরে তিনি অন্যদের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করেন। এক পর্যায়ে তো মারধর শুরু করেন। তখন তাঁর এমন কর্মকাণ্ড আমাদের কাছে সন্দেহজনক মনে হয়। আবার পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পর তিনি যেন এক অন্য মানুষ। আমাদের প্রশ্ন করেন, কী হয়েছে? আমি এখানে কেন? তাঁকে বলা হয়, তিনি পুলিশসহ অন্যদের মারধর করেছেন বলে তাঁকে আটক করা হয়েছে। তখন তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে জানান, এমন কিছু তাঁর মনে নেই!
এর আগে সোমবার রাত পৌনে ২টার দিকে পল্লবী থানার ওসির কাছে গিয়ে ফাহিম বলেন, আপনার এলাকায় খুন হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে, আপনারা কী করছেন? তবে কোনো খুন হয়নি বলে দাবি করেন ওসি। পরে ডিউটি অফিসারসহ অন্য পুলিশ সদস্যরাও জানান, সেই রাতে কোনো খুনের ঘটনা ঘটেনি। শেষে থানায় সেবা নিতে যাওয়া এক ব্যক্তিও একই মত দিলে তাঁকে মারধর করেন ফাহিম। তাঁকে বাধা দিতে গেলে ওসিসহ তিনজন আহত হন। অপর দু’জন হলেন এসআই শরিফুল ইসলাম ও এএসআই মো.
এ ঘটনায় পুলিশের ওপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মঙ্গলবার ফাহিমকে কারাগারে পাঠানো হয়। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁর তিন বন্ধুকে আটক করা হলেও জিজ্ঞাসাবাদে সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
তদন্ত সূত্র জানায়, প্রথমে ধারণা করা হয় ফাহিম মাদকাসক্ত বা মানসিক বিকারগ্রস্ত। তবে প্রাথমিক পরীক্ষায় মাদক গ্রহণের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তাঁর বাবা মফিজুর রহমান একটি বায়িং হাউসের সিনিয়র মার্চেন্ডাইজার। তিনি পুলিশকে জানান, তাঁর ছেলে মাদক সেবন করে বলে তাঁর জানা নেই। তার কোনো মানসিক সমস্যাও নেই। ফলে তারাও ছেলের এমন কর্মকাণ্ডে অবাক হয়েছেন। অবশ্য কয়েক দিন ধরে ফাহিম ঠিকঠাক ঘুমাচ্ছিল না। অস্বাভাবিক আচরণ বলতে এটুকুই। সব শুনে পুলিশ ধারণা করছে, তিনি স্কোপালোমিন বা এই জাতীয় কোনো ড্রাগের প্রভাবে সোমবার রাতের ঘটনা ঘটিয়েছেন।
গাজীপুর থেকে বন্ধুদের নিয়ে সাহ্রি খেতে ঢাকায় এসেছিলেন ফাহিম। মাঝে পল্লবীতে গিয়ে শুনতে পান, সেখানে একজন খুন হয়েছে। বিষয়টি জানাতে তিনি থানায় হাজির হন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
নিউজ করায় তান্ডব সিনেমা থেকে বাদ, নায়িকা বললেন অপেশাদার আচরণ
সম্প্রতি অপেশাদার আচরণের মুখে পড়েছেন অভিনেত্রী নিদ্রা দে নেহা। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়ে জানিয়েছেন তিনি। যে স্ট্যাটাসে অভিনেত্রী অভিনয় ছাড়ারও ইঙ্গিত দিয়েছেন। সে ইঙ্গিতের সূত্র ধরে তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে নেহা জানান, অভিনয় ছাড়ার ঘোষণা নয়। পুরোপুরি পেশাদার না হলে তাদের সঙ্গে কাজ না করার ইঙ্গিতই দিয়েছেন তিনি। কাউকে বিষয়টি ভুল ব্যাখ্যা না করতেও অনুরোধ জানিয়েছেন।
কিছুদিন আগে তান্ডব সিনেমায় শাকিব খানের সঙ্গে কাজ করার খবর আসে তার। সে খবরটি প্রকাশের পরই সিনেমায় থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে তাকে। সিনেমাটিতে একদিনের শুটিংয়েও অংশ নিয়েছিলেন তিনি। এভাবে বাদ দেওয়াটাকে অপেশাদার আচরণ বলেই মন্তব্য অভিনেত্রীর। নেহা বললেন, ছবিটির নাম আমি আর বলতে চাইছি না। একদিন শুটিংও করেছি। আমার বাবা ক্যানসারের রোগী। চিকিৎসার জন্য তাকে মুম্বাই নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাজটির জন্য আমি সব বাদ দিই। ফ্লাইটের টিকিট বাতিল করে তাদের মে পর্যন্ত টানা দুই মাসের ডেট দিই। ঈদের আগে একদিন শুটিংও করি। এরমধ্যে এক পত্রিকার রিপোর্টার আমার কাছে নতুন কাজ সম্পর্কে জানতে চাইলে ছবিটির কথা বলি। এরপর নিউজ হলো। আমাকে নায়িকা বানিয়ে দেওয়া হলো। আমি তখনও নিউজটি দেখিনি। কিন্তু ছবি সংশ্লিষ্টরা মনে করলেন আমি নিউজ করিয়েছি। আমার সঙ্গে চেচামেচি করলেন। আমি বললাম, করাইনি। এরপর যা ঘটার ঘটল।
নেহা বলেন, আমার কাজের সংখ্যা কম কিন্তু যেকটা করেছি সবগুলো গুণগত মানসম্পন্ন। একজন অভিনয়শিল্পী কেমন অভিনয় করে তার কাজই বলে দেয়। উদাহরণস্বরুপ ওয়েব সিরিজ ‘আধুনিক বাংলা হোটেল’-এর ‘হাসের সালুন’-র কথা বলি। সেখানে আমার চরিত্রের দৈর্ঘ্য কম। কিন্তু ১০ মিনিটের ওই কাজের জন্য বিদেশি গণমাধ্যমে পর্যন্ত আমাকে নিয়ে লেখালেখি হয়েছে।কোয়ালিটি না থাকলে তো তারা ডাকতেন না।
নেহার মত সিনেমার খবরটি জানালেও তাকে বাদ দেওয়ার মত কাজ তারা করতে পারেন না। এটা পুরোপুরি অপেশাদারিত্ব। কারণ তারা অফিসিয়ালি কখনও বলেনি বিষয়টি গোপন রাখতে। অভিনেত্রীর ভাষ্য, যদি আমি নিউজ করিও তবুও তো তারা আমার সঙ্গে এরকম করতে পারেন না। কেননা আমাকে তো বলা হয়নি যে নিউজ করা যাবে না। সাধারণত কাজের ক্ষেত্রে টিম যদি কোনোকিছু গোপন রাখার প্রয়োজন বোধ করে তবে আর্টিস্টের সঙ্গে বসে আলোচনা করে। কিন্তু আমাকে এ ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি। চুক্তিপত্রে সাইন করার কথা ছিল। হয়তো সেখানে লেখা থাকত। কিন্তু তাড়াহুড়া করে কাজটি শুরু করা হয়। সাইন করার সময়টা-ই ছিল না। ঈদের পর চুক্তিপত্রে স্বাক্ষরের কথা ছিল। এছাড়া তাদের পক্ষ থেকে কেউ আমাকে কাজটির কথা গোপন রাখতে বলেওনি।’