চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের একান্ত সহকারী মারুফুল হক চৌধুরী। চসিকের একটি স্যালুন কার ব্যবহার করছেন তিনি। শুধু তিনি নন, বহিরাগতরাও ব্যবহার করছেন সিটি করপোরেশনের গাড়ি। এর মধ্যে চসিকের ঠিকাদার, মেয়রের কথিত উপদেষ্টাও আছেন।

প্রাধিকারভুক্ত নন, এমন কর্মচারী গাড়ি ব্যবহার করছেন। কিন্তু গাড়ি সংকটে কর্মকর্তাদের দাপ্তরিক কাজ বিঘ্নিত হওয়ার কারণ দেখিয়ে  সম্প্রতি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে পাঁচটি গাড়ি কেনার অনুমোদন চেয়েছে চসিক। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগে নিয়মবহির্ভূতভাবে গাড়ির ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। এর পর সংকট তৈরি হলে গাড়ি কিনতে পারে তারা।

গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর সরকারি কর্মচারীদের প্রাধিকারবহির্ভূত গাড়ি ব্যবহার বন্ধের কঠোর নির্দেশ দেয় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। এতে বিশৃঙ্খলা ও আর্থিক অপচয়ের পাশাপাশি প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের নৈতিকতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়। সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এর আগে মেয়রের একান্ত সহকারীরা চসিকের সিএনজিচালিত অটোরিকশা ব্যবহার করতেন। কিন্তু মারুফ ব্যবহার করছেন কার। এ প্রসঙ্গে মারুফ বলেন, ‘গাড়িটি ১৬ বছর ধরে অকেজো ছিল। মেরামত করে গাড়িটি ব্যবহারের উপযোগী করা হয়েছে। দিনরাত সিটি করপোরেশনের কাজে এটি ব্যবহার করছি।’ তবে তাঁর এ দাবি সত্য নয়। বিআরটিএর তথ্য অনুযায়ী, গাড়িটি রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে ২০০৯ সালের ৭ জুলাই। সেই হিসাবে গাড়িটির নিবন্ধনের পর ১৬ বছর পার হয়নি।

গত ফেব্রুয়ারি থেকে শিল্পী শাহরিয়ার খালেদ সিটি করপোরেশনের পিকআপ গাড়ি ব্যবহার করছেন। সিটি করপোরেশনের দুই কেবিনের এই গাড়ি তিনি কীভাবে ব্যবহার করছেন, কেউ বলতে পারছে না। সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গাড়িটি তিনি নগরের খাল পরিদর্শনে নিয়ে যান। নগরের খাল বিশেষজ্ঞ হিসেবে সিটি করপোরেশনের মেয়রের উপদেষ্টা হিসেবে তিনি কাজ করছেন। কিন্তু উপদেষ্টা নিয়োগের কোনো অফিস আদেশ হয়নি। মেয়রের নির্দেশে গাড়িটি তাঁকে ব্যবহার করতে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রায়ই সিটি করপোরেশনের একটি মাইক্রোবাস ব্যবহার করছেন আর কে লিটন নামে এক ঠিকাদার। তিনি সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা বিভাগে ঠিকাদার হিসেবে কাজ পেয়েছেন। সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্জ্যের কনটেইনার তৈরির কাজ তদারকিতে তিনি গাড়িটি ব্যবহার করেন। 

এদিকে ডা.

শাহাদাত হোসেন মেয়র হওয়ার পর চসিকের জাতীয়তাবাদী শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের নেতা মো. মামুনুর রশীদকে সমাজকল্যাণ ও সংস্কৃতিবিষয়ক কর্মকর্তা হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁর মূল পদ নকলনবিশ। তিনি একটি মাইক্রোবাস ব্যবহার করছেন। 

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সিটি করপোরেশনের যান্ত্রিক উপবিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তৌহিদুল হাসান বলেন, ‘মেয়রের নির্দেশে শাহরিয়ার খালেদকে গাড়ি ব্যবহার করতে দেওয়া হয়েছে। মারুফুল হকও একটি গাড়ি ব্যবহার করেন। কনটেইনার তৈরির কাজ পরিদর্শনের জন্য আর কে লিটন নামে একজন ব্যক্তিও গাড়ি ব্যবহার করেন। তিনি পরিচ্ছন্নতা বিভাগের ঠিকাদারির কাজ পেয়েছেন।’

এ প্রসঙ্গে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘তাদের কারও নামে গাড়ি বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। অফিসিয়াল কাজে হয়তো তারা গাড়ি ব্যবহার করছেন। জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজে মেয়রের অনারারি উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছেন শাহরিয়ার খালেদ। খাল পরিদর্শনে যাওয়ার সময় তিনি হয়তো গাড়িটি ব্যবহার করছেন। কোনো ঠিকাদারের গাড়ি ব্যবহারের সুযোগ নেই। এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকলে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

প্রাধিকারবহির্ভূত কর্মচারী ও বহিরাগতরা গাড়ি ব্যবহার করলেও সংকট দেখিয়ে আরও পাঁচটি গাড়ি কিনতে চায় চসিক। সংস্থার ছয়জন আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা এবং মেয়রের কর্মসূচিতে সাংবাদিকদের আনা-নেওয়ার জন্য গাড়িগুলো কেনার কথা বলেছেন কর্মকর্তারা। পাঁচটি গাড়ি কিনতে গত ২১ জানুয়ারি স্থানীয় সরকার বিভাগের অনুমতি চেয়ে চিঠি দিয়েছেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম। চিঠিতে বলা হয়েছে, সিটি করপোরেশনের ৪১টি ওয়ার্ডকে ৬টি অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়েছে। ছয়জন আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তার পদ রয়েছে। এর আগে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের জন্য দুটি গাড়ি কেনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এখন বাকি চারটি গাড়ি কেনা প্রয়োজন।

পাঁচটি গাড়ি কেনার বিষয়ে চিঠিতে বলা হয়, বর্তমানে সিটি করপোরেশনের অঞ্চলগুলোতে কাজের পরিধি আগের তুলনায় বেড়েছে। চারটি অঞ্চলের নির্বাহী কর্মকর্তাদের জন্য গাড়ি বরাদ্দ না থাকায় আঞ্চলিক কার্যালয়গুলোতে দাপ্তরিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনে ব্যাঘাত হচ্ছে। এ ছাড়া মেয়রের দৈনন্দিন কর্মসূচিতে গণমাধ্যম কর্মীদের পরিবহনের জন্য করপোরেশনের জনসংযোগ শাখার অধীন একটি মাইক্রোবাস খুব প্রয়োজন।

সিটি করপোরেশনের নিজস্ব তহবিলের টাকায় এসব গাড়ি কেনা হবে। এ প্রসঙ্গে তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সিটি করপোরেশনে বর্তমানে গাড়ির ব্যাপক সংকট। পর্যাপ্ত গাড়ি না থাকায় বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হচ্ছে। তাই সিটি করপোরেশনের নিজস্ব তহবিলের টাকায় গাড়ি কেনা হবে।’

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

জাপানিরা ড্রয়িংরুম যেভাবে সাজায়

জাপানিরা ড্রয়িংরুমের সাজ-সজ্জায় তিনটি বৈশিষ্ট্যকে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। তাদের মতো ড্রয়িংরুম সাজাতে চাইলে জেনে নিতে পারেন এই তিন উপায়।

কম উচ্চতার আসবাব: জাপানিরা তাদের ড্রংয়িংরুমে কম উচ্চতার আসবারপত্র রাখে। বিশেষ করে কম উচ্চতার টেবিল ব্যবহার করেন। অনেক সময় টেবিলের পরিবর্তে ফ্লোর কুশনও ব্যবহার করে থাকেন তারা।  মেঝেতে ‘তাতামি’ বা ফ্লোর ম্যাট  ব্যবহার করে তাকে জাপানিরা। 

ঘর সাজাতে প্রাকৃতিক উপকরণ: জাপানিরা ঘর সাজাতে প্রাকৃতিক উপদানে তৈরি আসবাবপত্র বেশি ব্যবহার করেন। বিশেষ করে কাঠ বা বাঁশের আসবাবই বেশি ব্যবহার করেন। রুম ডিভাইডার হিসেবে তারা ব্যবহার করেন ‘শোজি স্ক্রিন’ যা রাইস পেপার শিট। এগুলো কাঠের ফ্রেম দিয়ে তৈরি করা হয়। তারা দরজা জানালাতেও কাঠের ফ্রেম ব্যবহার করে থাকেন।

আরো পড়ুন:

নখের যে রং গুরুতর রোগের জানান দেয়

যে অভ্যাসগুলো আপনার আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দিতে পারে

আলোর ব্যবহার: জাপানিদের ঘরে তীক্ষ্ন আলোর পরিবর্তে নিয়ন আলোর ব্যবহার বেশি করা হয়। সেক্ষেত্রে কাঠের লণ্ঠন, পেন্ডেন্ট লাইট ব্যবহার করেন তারা। 

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ