তুচ্ছ ঘটনায় সংস্কৃতি কর্মীকে হেনস্তা, আ’লীগ ট্যাগ দেওয়ার অভিযোগ
Published: 13th, March 2025 GMT
চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার বড়তাকিয়া পূর্ব পোলমোগরা এলাকায় তুচ্ছ ঘটনায় ইফতেখার পলাশ নামে এক অভিনয়শিল্পী ও সংস্কৃতিকর্মীকে হেনস্তার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় গতকাল বুধবার মিরসরাইয়ের সেনা ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।
অভিযোগে পলাশ উল্লেখ করেছেন, গত শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে নিজ বাড়ির আঙিনায় তাঁর পরিবারের এক সদস্য প্রতিবেশীদের সঙ্গে পারিবারিক বিষয়ে আলাপ করছিলেন। তাদের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় জামায়াত অনুসারী স্থানীয় মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর ওই কথোপকথনে রমজানের পবিত্রতা বিঘ্ন হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। তাঁর কথা না মানলে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখবেন বলে হুমকিও দেন। ওই সময় পলাশ তাঁকে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ না করতে এবং বয়োজ্যেষ্ঠদের সঙ্গে সৌজন্যতা বজায় রাখতে বলেন। তবে জাহাঙ্গীর আরও উদ্যত হয়ে একপর্যায়ে তাঁকে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে আখ্যা দেন। মারধর করতে উদ্যত হওয়ার পাশাপাশি গালিও দেন। এ ছাড়া কল করে আরও ১০-১৫ জন উচ্ছৃঙ্খল যুবককে ডেকে আনেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিএনপি কর্মী পরিচয় দেওয়া স্থানীয় মাহমুদুল হক রকি, জাহাঙ্গীরের ছোট ভাই মোহাম্মদ শাহাদাতের নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ওই দলটি এসে পলাশকে ঘিরে ধরে। তারা ‘সুশীল রাখব না, সুশীলের আস্তানা রাখব না’, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর রাখব না’ বলতে বলতে পলাশকে মারতে উদ্যত হয়। পরে স্থানীয়রা পলাশকে সরিয়ে নেন।
ইফতেখার পলাশ ও তাঁর পরিবার আশঙ্কা করছে, যে কোন সময় তাদের বাড়িতে এবং পরিবারের সদস্যদের ওপর ‘মব জাস্টিস’ এর নামে সন্ত্রাসী আক্রমণ হতে পারে। উল্লেখ্য, ইফতেখার পলাশ অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক সংস্কার কর্মসূচির পরামর্শক হিসেবে কর্মরত। তাঁর আশঙ্কা, যে কোনো সময় তাদের বাড়িতে অথবা পরিবারের সদস্যদের ওপর ‘মব’ তৈরি করে হামলা হতে পারে।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, ৫ আগস্টের পর গ্রামে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কারও নিয়ন্ত্রণে নেই। এই সুযোগে ব্যক্তিগত, সামাজিক ও পারিবারিক ইস্যুতেও রাজনীতি টেনে এনে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে। সুযোগ পেলেই আওয়ামী লীগ ট্যাগ দিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে।
তারা আরও জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় শান্তিশৃঙ্খলা নষ্ট করার অভিযোগে মামলা হওয়ার পর জাহাঙ্গীর ও রকি দেশত্যাগ করে। সম্প্রতি দু’জনই মধ্যপ্রাচ্য থেকে ফিরে ভিন্ন মতাবলম্বীদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া, উচ্ছেদের হুমকিসহ সাধারণ মানুষকে অপদস্থ করে বেড়াচ্ছেন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনায় মস্কো যাচ্ছেন মার্কিন প্রতিনিধিরা
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য রাশিয়ার রাজধানী মস্কোয় যাচ্ছেন মধ্যস্থতাকারী মার্কিন প্রতিনিধিরা। খবর বিবিসির।
যুদ্ধবিরতি নিয়ে সৌদি আরবের জেদ্দায় গত মঙ্গলবার ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতাকারীরা। এতে ৩০ দিনের জন্য সাময়িক যুদ্ধবিরতি কার্যকরে সম্মত হয়েছে কিয়েভ। এরপরই রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার জন্য মস্কোয় যাচ্ছেন মার্কিন প্রতিনিধিরা।
মঙ্গলবার বৈঠক শেষে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছিলেন, “বল এখন (যুদ্ধবিরতি নিয়ে) পুরোপুরি রাশিয়ার কোর্টে। মস্কো যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় কি না, সেটা দেখেই বোঝা যাবে, তারা শান্তি চায় কি না।”
আরো পড়ুন:
যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব অমান্য করলে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে: ট্রাম্প
রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধবিরতির মার্কিন প্রস্তাবে রাজি ইউক্রেন
গতকাল বুধবার হোয়াইট হাউজের ওভাল অফিসে আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীকে পাশে নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতির সম্ভাব্যতা নিয়ে তিনি ‘ইতিবাচক বার্তা’ পেয়েছেন।
ট্রাম্প আরও বলেন, “তবে এই ইতিবাচক বার্তাই সবকিছু নয়। এটা খুবই গুরুতর একটি পরিস্থিতি।”
ট্রাম্প জানান, রাশিয়ার জন্য যুদ্ধবিরতি মেনে নেওয়াটা যুক্তিসঙ্গত হবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট এমন মন্তব্যও করেছেন যে, ‘রাশিয়াও খুব একটা ভালো অবস্থায় নেই।’ যদিও এ বিষয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু জানাননি।
ট্রাম্প বলেন, “(যুদ্ধের) একটি পক্ষের সঙ্গে আমাদের একটি অত্যন্ত জটিল পরিস্থিতির সমাধান হয়েছে। মোটামুটি সমাধান হয়ে গেছে। আমরা ভূমি এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যান্য বিষয় নিয়েও আলোচনা করেছি।”
যুদ্ধবিরতির বিষয়ে ইউক্রেনকে রাজি করানোর জন্য রীতিমত চাপ প্রয়োগ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তার ওভাল অফিসে মি. জেলেনস্কির বাদানুবাদের ঘটনার পর ইউক্রেনে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় ও সামরিক সহযোগিতা বন্ধ করে দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
এখন যুদ্ধের আরেকপক্ষ রাশিয়াকে রাজি করানোর জন্যও যদি চাপ দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে, সেক্ষেত্রে কীভাবে সেটি করবে যুক্তরাষ্ট্র?
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, “আমরা এমন কিছু করতে পারি যা আর্থিকভাবে রাশিয়ার জন্য খুবই খারাপ হবে। কিন্তু আমি তা করতে চাই না, কারণ আমি শান্তি চাই।”
এদিকে, ক্রেমলিন জানিয়েছে যে, তারা যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবটি ভেবে দেখছে। বিষয়টি নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্টের ভ্লাদিমির পুতিন ফোনে কথা বলতে পারেন বলেও জানানো হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ