জৌলুশ হারিয়েছে দিনাজপুরের কড়াই বিল, এবার কাটা পড়ল ৬ শতাধিক গাছ
Published: 13th, March 2025 GMT
দিনাজপুরে রামসাগর, সুখসাগর, শালবনের মতো প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আরেকটি স্থান কড়াই বিল। অতিথি পাখিদের কলকালিতে মুখরিত থাকত বিল এলাকা। ৫৬ একর আয়তনের বিলটি স্থানীয় মানুষের ধান ও মাছের বড় উৎস। স্বাধীনতা–পরবর্তী সময়ে বিলের মাঝবরাবর প্রায় ২৮ একর (পাড়সহ) আয়তনের পুকুর খনন করা হয়। পাড়ে লাগানো হয় কয়েক হাজার ফলদ, বনজ, ঔষধি ও ফুলের গাছ। বিল ও পুকুরের সৌন্দর্য উপভোগ এবং অতিথি পাখিদের দেখতে ভিড় করতেন দর্শনার্থীরা। এখন বিলে পানি নেই, কাটা হয়েছে পাড়ের গাছগুলো। দর্শনার্থীরাও মুখ ফিরিয়েছে।
দিনাজপুর শহর থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে বিরল উপজেলার কড়াই বিল। সবশেষ গত সোমবার পুকুরপাড়ের ৬ শতাধিক ফলজ ও বনজ গাছ কাটা পড়েছে। বিরল থানা মুক্তিযোদ্ধা হাঁস-মুরগি ও পশু পালন খামার সমবায় সমিতির নেতারা নিয়মবহির্ভূতভাবে এসব গাছ কেটেছেন বল অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে কেটে ফেলা গাছগুলো জব্দ করেছে স্থানীয় প্রশাসন। তবে সমিতির নেতাদের দাবি, এখানে কোনো অনিয়ম হয়নি।
গাছ কাটার ঘটনায় ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা বাদী হয়ে গাছ চুরির অভিযোগে একটি মামলাও করেছেন। মামলায় দুজনের নাম দিয়ে ও অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন বিরল উপজেলার উসমান গণির ছেলে আইবুর রহমান (৬৮) এবং সদর উপজেলার পশ্চিম রামনগর গোবরাপাড়া এলাকার কাঠ ব্যবসায়ী ও জেলা মৎস্যজীবী দলের সভাপতি জোবাইদুর রহমান (৫৫)।
বিরল থানা মুক্তিযোদ্ধা হাঁস-মুরগি ও পশু পালন খামার সমবায় সমিতি সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৪ সালে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা মিস্টার জর্জের নেতৃত্বে সমবায় সমিতি গঠন করে বিলটি সরকারের কাছে ইজারা নেন তাঁরা। পরবর্তী সময়ে ১৯৭৭ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান দিনাজপুরে আসলে ওই সমিতিতে অনুদান দেন এবং খালকাটা কর্মসূচির আওতায় এই পুকুর খনন করা হয়। পাড়ে লাগানো হয় ফলদ-বনজ ও ফুলের গাছ। সমিতির সদস্যরা পুকুরে মাছ চাষ শুরু করেন। পরে মুক্তিযোদ্ধারা ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক স্থায়ীভাবে পুকুরের মালিকানা পায়। তবে কয়েক বছর পরে প্রশাসন ইজারা বা মালিকানা বাতিল করলে মুক্তিযোদ্ধারা আদালতে মামলা করেন। সেই মামলা এখনো চলমান। পুকুর ও গাছের ফল বিক্রি করে বিলের উন্নয়ন করাসহ ঈদে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারগুলোকে অনুদান দেওয়া হয়ে থাকে।
স্বাধীনতা–পরবর্তী সময়ে বিলের মাঝবরাবর খনন করা পুকুরটির আয়ত প্রায় ২৮ একর। বুধবার সকালে দিনাজপুরের বিরল উপজেলায় কড়াই বিলে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
হামজার পর আরও একজন, বাংলাদেশের হয়ে খেলতে রাজি সামিত
চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে দুই সপ্তাহ সময় নিয়েছিলেন সামিত সোম। অবশেষে আজ বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে (বাফুফে) জানিয়ে দিলেন তিনি লাল-সবুজের জার্সিতে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে চান।
সূত্র জানিয়েছে, সামিত হ্যাঁ বলায় রোববার থেকে তাঁর পাসপোর্ট তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করবে বাফুফে। এ বিষয়ে আজ বাফুফের সহসভাপতি ফাহাদ করিম প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘সামিত আমাদের জানিয়েছে সে বাংলাদেশের হয়ে খেলতে চায়। এখন পাসপোর্ট করতে কোন প্রক্রিয়ায় এগোতে হবে, কত দিন লাগবে এসব জানতে চেয়েছে সে।’
এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বে বাংলাদেশের পরবর্তী ম্যাচ ঢাকায় সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ১০ জুন। সেই ম্যাচের আগেই সামিতের পাসপোর্ট ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতে চায় বাফুফে।
২৭ বছর বয়সী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সামিতের জন্ম কানাডায়। মা-বাবা দুজনই বাংলাদেশি। ফলে তাঁর বাংলাদেশি পাসপোর্ট পেতে খুব বেশি সমস্যা হবে না মনে করছে বাফুফে। তবে সামিত কানাডার জাতীয় দলের হয়ে খেলায় ফিফার অনুমতির ব্যাপারও আছে।
সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা গেলে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে সামিতকে অভিষেক করানোর কথা ভাবছে ফুটবল ফেডারেশন। এ বিষয়ে সামিতও আগ্রহী জানিয়ে ফাহাদ করিম বলেন, ‘সামিত বাংলাদেশের পরবর্তী ম্যাচগুলোর বিষয়ে আমাদের থেকে জানতে চেয়েছে।
কানাডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব কালাভরি এফসির মিডফিল্ডার সামিত। ২০১৬ সালে কানাডার অনূর্ধ্ব-২০ দলের হয়ে ৭টি ও ২০১৮ সালে অনূর্ধ্ব-২১ দলের হয়ে খেলেছেন ৪টি ম্যাচ। ২০২০ সালে কানাডার জাতীয় দলের জার্সিতে খেলেন দুটি ম্যাচ।
প্রথম কোনো বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফুটবলার হিসেবে বাফুফের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন জামাল ভূঁইয়া। ২০১৩ সালে বাংলাদেশ জাতীয় দলে অভিষেক হয় ডেনমার্কে জন্ম নেওয়া জামালের। এরপর জাতীয় দলে আসেন ফিনল্যান্ডে জন্ম নেওয়া তারিক কাজী।
সর্বশেষ গত মার্চে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে লাল-সবুজের জার্সি গায়ে চাপিয়েছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা হামজা চৌধুরী, যা অতীতের সব উচ্ছ্বাসই ছাপিয়ে গেছে।