রাজধানীর শাহবাগে ২০১৩ সালের গণজাগরণ মঞ্চের নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিদের বিচার এবং মঞ্চটির সংগঠক লাকী আক্তারকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। একই সঙ্গে বিক্ষোভকারীরা মঙ্গলবার ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ প্ল্যাটফর্মের কর্মসূচি থেকে পুলিশের ওপর হামলার বিচারের দাবি জানিয়েছেন।

বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (এনএসইউ) ৮ নম্বর গেটের সামনে একদল শিক্ষার্থী এ বিক্ষোভ করেন। এতে এনএসইউর পাশাপাশি ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এবং আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের কিছু শিক্ষার্থীও অংশ নেন। আয়োজকদের কোনো ব্যানার ছিল না। তাঁরা নিজেদের বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী বলে দাবি করেছেন।

বিক্ষোভকারীরা প্রথমে এনএসইউর ৮ নম্বর গেটের সামনে জড়ো হন। সেখানে কয়েকজন বক্তৃতা করেন। বক্তৃতার ফাঁকে ফাঁকে স্লোগান চলে। তাঁরা ‘শাহবাগীরা বাংলা ছাড়’, ‘শাহবাগ না বাংলাদেশ, বাংলাদেশ, বাংলাদেশ’ প্রভৃতি স্লোগান দেন। এরপর এনএসইউ গেট থেকে একটি মিছিল বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার দু-একটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার সেখানে এসে শেষ হয়।

ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী সালাহউদ্দিন ওমর সাম্য বলেন, ‘২০১৩ সালে বাংলাদেশের বিভাজন শুরু হয় এই শাহবাগ থেকে, শাপলা চত্বরে গণহত্যার মাধ্যমে। এখন তারা আবারও নতুন করে ষড়যন্ত্র করছে, বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল রাষ্ট্র বানাতে চক্রান্ত করছে। তারা আবারও ফিরে আসুক আমরা তা চাই না। আমরা তাদের বিচার চাই।’

এদিকে একই ধরনের দাবিতে বুধবার বিকেল শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে একটি মানববন্ধন করেছে ইনকিলাব মঞ্চ। সেখানে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদী বলেন, লাকী আক্তার ও গণজাগরণ মঞ্চের সাবেক মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারকে মবতন্ত্রের সূচনাকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। মতিঝিলের শাপলা চত্বরে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বৈধতা দিয়েছিলেন তাঁরা।

ইনকিলাব মঞ্চের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখার সদস্যসচিব ফাতিমা আক্তার বলেন, সরকার ধর্ষণের ঘটনায় দোষীদের গ্রেপ্তার করেছে। তারপরও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করা অযৌক্তিক।

আরও পড়ুনপুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ এনে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা৫ ঘণ্টা আগে

এ সময় ইনকিলাব মঞ্চ থেকে সরকারের উদ্দেশে বেশ কিছু দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো জাতিসংঘকে অন্তর্ভুক্ত করে শাপলা চত্বর ও পিলখানা গণহত্যার স্বাধীন বিচারিক তদন্ত কমিশন গঠন করে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা, জুলাই গণহত্যার দৃশ্যমান বিচারিক কার্যক্রম শুরু করে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র স মন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তে

ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তেকে ম্যানিলা বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত তার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর মঙ্গলবার তিনি ম্যানিলা বিমানবন্দরে পৌঁছালে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে তিনি পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। খবর রয়টার্সের

হংকং থেকে দেশে ফেরার পরই পুলিশ রদ্রিগো দুতার্তেকে গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা দায়ের করা হয়। দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়রের কার্যালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুর্তাতে ক্ষমতায় থাকাকালীন অবৈধভাবে মাদক পাচারের অভিযোগে দেশে গণহত্যা চালায়। আদালত এ বিষয়ে তদন্ত করবে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) দুর্তাতের বিরুদ্ধে ২০১১ সালের নভেম্বর থেকে শুরু করে ২০১৯ সালের ১৬ মার্চ পর্যন্ত সময়ের মাধ্য চালানোর হত্যাকাণ্ডের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে তিনি ফিলিপাইনের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ডাভাওয়ের মেয়র এবং দেশটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন। এছাড়া এ সময়ের মধ্যে তিনি যে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছেন তা সম্ভব্য মানবতাবিরোধী অপরাধের সামিল হিসেবে গণ্য হতে পারে।

২০১৯ সালে রন্দ্রিগো দুর্তাতে রোম সংবিধি থেকে ফিলিপাইনকে প্রত্যাহার করে নেয়। ওই সময়ে মানবাধিকার কর্মীরা এই কাজকে তার বিরুদ্ধে আনিত গণহত্যার বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা হিসেবে উত্থাপন করে। এছাড়া ২০২১ সালে দুতার্তের প্রশাসন আন্তর্জাতি অপরাধ আদালতের তদন্ত কার্যক্রম স্থগিত করার উদ্যোগ নেন। তখন তিনি যুক্তি দেখিয়েছিলেন, ফিলিপাইনের আদালতই এ বিষয়ে তদন্ত করছে। তখন তিনি আরও বলেছিলেন, আইসিসি হলো শেষ আশ্রয়স্থল, তাই এ বিষয়ে তদন্ত করা তার এখতিয়ারের মধ্যে নয়।

পরবর্তীতে ২০২৩ সালে আইসিসির আপিল বিভাগ দুতার্তের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ পুনরায় তদন্ত শুরু করা যেতে পারে বলে রায় দেন এবং দুতার্তের প্রশাসনের আবেদন খারিজ করে দেন। নেদারল্যান্ডের হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত তখনই হস্তক্ষেপ করতে পারে যখন কোনো দেশ গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতা রিবোধী অপরাধের মতো ভয়াবহ আন্তর্জাতিক অপরাধের সঙ্গে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচার করতে অপারগতা প্রকাশ করে।

২০২২ সালে দুর্তাতের স্থলাভিষিক্ত হওয়া প্রেসিডেন্ট মার্কোস ক্ষমতা গ্রহণের পর তিনিও আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করেননি। তবে দুর্তাতের সঙ্গে তার ব্যাপকভাবে রাজনৈতিক বিরোধ তৈরি হয়েছিল। এর ফলে তার প্রশাসন থেকে বলা হয়েছিল, যদি আইসিসি আন্তর্জাতিক পুলিশের মাধ্যমে দুর্তাতেকে গ্রেপ্তার করতে রেড নোটিশ পাঠায় তাহলে তারা সহযোগিতা করবে।

প্রেসিডেন্টের যোগাযোগ দপ্তর থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে, আইসিসি থেকে ম্যানিলা ইন্টোরপোলের কাছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পাঠানো হয়। তারই ভিত্তিতে মঙ্গলবার রদ্রিগো দুর্তাতে হংকং থেকে ম্যানিলা বিমানবন্দরে নামার পরই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে হরে-দরে সবাইকে ‘শাহবাগী’ বলা বন্ধ করতে হবে: মাহফুজ আলম
  • শাহবাগে ইনকিলাব মঞ্চের সঙ্গে থাকবে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ
  • পুলিশের ওপর হামলার প্রতিবাদে জবিতে বিক্ষোভ মিছিল 
  • লাকি আক্তারকে গ্রেপ্তারের দাবিতে মধ্যরাতে শাহবাগে ঢাবি শিক্ষার্থীরা
  • ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তে গ্রেপ্তার
  • বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তে