বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে দেশে শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা বাড়ছে। শিশুদের রক্ষা করতে হলে সামাজিকভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে এবং দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। খুন, ধর্ষণ ও শিশু নির্যাতনের ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবিতে প্রতিবাদী সমাবেশে এসব কথা বলা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরের আয়োজনে আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে এই প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। স্লোগান ছিল, খেলাঘর চায় না ‘শিশুদের কান্না’। ছবি এঁকে এবং স্লোগান দিয়ে খেলাঘর আসরের সদস্য শিশুরা অংশ নেয় সমাবেশে। শিশুরা তাদের বক্তব্যে বলে, নিরাপদে স্কুল যেতে চাই, নিরাপদে খেলার মাঠে যেতে চাই।

প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবু সাঈদ। তিনি বলেন, ‘শিশুদের সঙ্গে নিয়ে আজ আমরা পথে দাঁড়িয়েছি। অথচ এই শিশুরা এখনো অনেকে জানেই না এসব ভয়াবহ ঘটনার সত্যিকার অর্থ। খেলাঘর দীর্ঘদিন ধরে শিশুদের অধিকার নিয়ে কাজ করছে। দেশজুড়ে যেসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা শুরু হয়েছে, আমরা এর প্রতিকার চাই।’

শিশুদের মুখে হাসি ফোটানোর প্রত্যয় নিয়ে ১৯৫২ সালে খেলাঘর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বলে উল্লেখ করেন সংগঠনের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রথীন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘আপনারা সবই জানেন কী চলছে এখন। শিশু থেকে মাঝবয়সী নারীরা ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতির ফলাফল এসব ঘটনা। আমরা এর নিন্দা জানাই এবং প্রতিকার চাই।’

সভা সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল কবীর। তিনি বলেন, ত্বকী থেকে শুরু করে তিশা হত্যার ঘটনা দেশের বিচারহীনতার সংস্কৃতিরই ফল।

শিশুদের ভবিষ্যৎ রক্ষায় প্রত্যেকের জায়গা থেকে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান বক্তারা। তাঁদের বক্তব্যে উঠে আসে প্রযুক্তির প্রতি আসক্তিতে শিশুদের বইয়ের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হওয়ার কথা। শিশুর প্রতি অন্যায়ে রাষ্ট্রের ছাড় দেওয়ার অভিযোগ। শিশুদের ভবিষ্যৎ রক্ষায় এসব দিকে গুরুত্ব দেওয়ার দাবি জানান বক্তারা। সমাবেশে কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরের সদস্যরাও ছাড়াও অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ। তাঁরা শিশু ও নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান এবং ন্যায়বিচারের দাবিতে একযোগে কাজ করার কথা ব্যক্ত করেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

চারুকলায় ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতিতে আগুন পরিকল্পিত: ঢা‌বি সাদা দল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদে আগুন লেগে ‘আনন্দ শোভাযাত্রার’ একাধিক মোটিফ পুড়ে যাওয়ার ঘটনায় নিন্দা, প্রতিবাদ জানিয়েছে  বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। এ ঘটনা পরিকল্পিত বলেও উল্লেখ করেন তারা। 

একইসঙ্গে অবিলম্বে অগ্নিকাণ্ডে জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানায় সংগঠনটি।  

শনিবার (১২ এপ্রিল) ঢাবি সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খান, যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম ও অধ্যাপক ড. মো. আবুল কালাম সরকার স্বাক্ষ‌রিত এক বিবৃতিতে এ দা‌বি জানা‌নো হয়। 


বিবৃ‌তি‌তে নেতৃবৃন্দ ব‌লেন, বাঙালি জাতির ঐতিহ্যের স্মরক পয়লা বৈশাখ। এ উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রা উদযাপনের আর মাত্র দুইদিন বাকি। আনন্দ শোভাযাত্রা উদযাপনের জন্য ফ্যাসিস্টদের প্রতিকৃতি তৈরিসহ অন্যান্য প্রস্তুতি যখন প্রায় শেষ দিকে তখন শনিবার (১২ এপ্রিল) ভোর রাতে চারুকলা অনুষদের চার দেওয়ালের ভেতরে তৈরি করা এসব প্রতিকৃতিতে আগুন দেওয়া নিছক কোনো রহস্যজনক নয়। এটি একটি পরিকল্পিত অগ্নিকাণ্ড। এ ঘটনায় ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার সরকারের দোসর কিংবা ঘাপটি মেরে থাকা স্বৈরাচারের দোসরদের হাত থাকার সম্ভাবনা বেশি।

নেতৃবৃন্দ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ঢাবি ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, পয়লা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রা পালনের লক্ষ্যে তৈরিকৃত প্রতিকৃতিসহ অন্যান্য জিনিসের নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না। ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর চারুকলার শোভাযাত্রা নিয়ে আগে থেকেই সতর্ক থাকা অত্যাবশ্যক ছিল। অতএব পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখা দরকার বলে মনে করি।

এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়। সেইসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যম্পাসে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো জোরদার করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানান।

ঢাকা/সৌরভ/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ